এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > ৩ বছরের পুরনো খুনের মামলায় অভিযুক্ত মুকুল-মনিরুল! রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগ

৩ বছরের পুরনো খুনের মামলায় অভিযুক্ত মুকুল-মনিরুল! রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগ


 

দীর্ঘদিন তৃণমূল কংগ্রেসের দ্বিতীয় প্রধান ব্যক্তি হিসেবে কাজ করার পরে 2017 সালে ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগদান করেছেন একদা তৃণমূলের তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কমান্ড মুকুল রায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, গত 2018 সালের পঞ্চায়েত নির্বাচন থেকে শুরু করে 2019 সালের লোকসভা নির্বাচন পর্যন্ত ভারতীয় জনতা পার্টির যে বৃদ্ধি, তার পেছনে অনেকটাই ভূমিকা পালন করেছেন রাজনীতি নিপুণ মুকুল রায়।

তাই তৃণমূল কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বের মুখে এবং স্বয়ং তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখেও মুকুলবাবুকে কটাক্ষ করে “গদ্দার” বলতে শোনা গেছে। আর এবার প্রশাসনের তরফ থেকে মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে খুনের মামলার তদন্ত করা হবে বলে জানা যাচ্ছে। ইতিপূর্বেই লাভপুরের বিধায়ক মনিরুল ইসলাম যোগদান করেছেন ভারতীয় জনতা পার্টিতে। আর সেই মনিরুল ইসলাম ও মুকুলবাবু একই খুনের মামলায় জড়িত বলে খবর।

বস্তুত, মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে তিন বছর আগে লাভপুরে তিন ভাইকে খুন করার যে অভিযোগ উঠেছিল, সেই ব্যাপারে পুলিশ পুনরায় সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট আদালতের কাছে পেশ করেছে। আর মনিরুল মামলার ওই সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটেই ভারতীয় জনতা পার্টির নেতা মুকুল রায়ের নাম আছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা যাচ্ছে। এমনকি বিজেপির দুই নেতা মুকুল রায় এবং মনিরুল ইসলাম দুজনের নামেই 370 ধারা প্রয়োগ করা হয়েছে।

ভারতীয় দণ্ডবিধি অনুযায়ী 370 ধারা খুনের মামলায় প্রয়োগ করা হয়। বিগত দিনে মনিরুল ইসলাম যে সময় ফরওয়ার্ড ব্লকের বিধায়ক ছিলেন, সেই সময় নিজের বাড়িতে সালিশি সভা ডেকে তিনজন সিপিএম সমর্থক ভাইকে পিটিয়ে এবং বোমা মেরে খুন করার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। ঘটনাটা 2010 সালের। তারপরে অবশ্য ফরওয়ার্ড ব্লক পরিত্যাগ করে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেছিলেন মনিরুল ইসলাম।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

শুধু তাই নয়, বিগত দিনে একটি দলীয় সভায় তদানীন্তন তৃণমূল কংগ্রেসের লাভপুরের বিধায়ক মনিরুলবাবু প্রকাশ্যেই পায়ের তলায় পিষে মারার কথা বলেছিলেন। সেই বিষয়ে পুলিশের তরফ থেকে অবশ্য চার্জশিট আগেই জমা করা হয়েছিল। কিন্তু সেখানে ঘটনায় 42 জন অভিযুক্তের নাম থাকলেও আশ্চর্যজনকভাবে নাম ছিল না মনিরুল ইসলামের। পরবর্তী পরিস্থিতিতে নিহতদের পরিবার থেকে তিন ভাইয়ের খুনের পূর্ণ তদন্তের দাবি করা হলে কলকাতা হাইকোর্টের তরফ থেকে সেই বিষয়ে দ্রুততার সঙ্গে চার্জশিট জমা দিতে বলা হয়। তবে গোটা ব্যাপারের মধ্যে রাজনীতির রং দেখতে পাচ্ছেন অনেকে।

এদিন এই প্রসঙ্গে বীরভূম জেলা ভারতীয় জনতা পার্টির সভাপতি শ্যামাপদ মন্ডল বলেন, “মনিরুল ইসলাম এখন যেহেতু বিজেপিতে, সেহেতু তাকে অভিযুক্ত করা হচ্ছে।” গোটা ব্যাপারটাকে আসলে শাসকদলের প্রতিহিংসার রাজনীতি বলে মনে করছে বীরভূম জেলা বিজেপি সভাপতি।

রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, এরকম ঘটনা নতুন নয়। কেন্দ্রের ক্ষেত্রেও দেখা গিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগদান করার পরে তদন্তকারী সংস্থাগুলো তদন্ত যে কোনো নেতৃত্বের প্রতি অনেকটাই কম হয়েছে, আবার রাজ্যের ক্ষেত্রেও দেখা গিয়েছে যতক্ষণ শাসক দলে কোনো নেতা রয়েছে, তার বিরুদ্ধে রাজ্যস্তরে কোনো রকম প্রশাসনিক তদন্ত বা পুলিশি তদন্ত করতে দেখা যায় না। তবে এক্ষেত্রে শাসকদলের সঙ্গে না থেকে বিরোধী দলের ছত্রছায়ায় গেলেই তদন্ত পুনরায় শুরু হয়ে যায় এমনই মত বিশেষজ্ঞদের। তবে দ্বিতীয় দফা চার্জশিটে সিপিআইএম কর্মী খুনের মূল অভিযুক্ত মনিরুল ইসলামের নাম থাকায় অত্যন্ত খুশি হয়েছে মৃতের পরিবারের সদস্যরা।

সেদিনের ঘটনার অন্যতম প্রত্যক্ষদর্শী আনারুল শেখ বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন লড়াই করেছি। ভাইদের খুনিদের সাজার জন্য মূল অভিযুক্ত মনিরুল ইসলামকে চার্জশিটে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তাতে আমরা খুশি।” ওয়াকিবহাল মহল মনে করছেন, মনিরুল ইসলাম শাসক দলে থাকতে তার বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ ছিল না। তা সত্ত্বেও রাজ্য পুলিশ থেকে শুরু করে অন্য কোনো রাজ্যের সতদন্তকারী সংস্থা তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে রীতিমত ভয় পেয়েছে‌।

কিন্তু সেই মনিরুল সাহেব ভারতীয় জনতা পার্টিতে চলে যাওয়ার পরে পুলিশের তদন্ত এবং সর্বোপরি পুলিশের দ্বিতীয়বারের চার্জশিটে মুকুল রায়ের নাম রীতিমতো প্রশ্ন তুলে দিয়েছে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে। তবে এক্ষেত্রে প্রশাসনের তরফ থেকে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যদি সঠিক প্রমান আদালতের কাছে পেশ করা যায়, তাহলে বিরোধীদের অভিযোগ ধোপে টিকবে না বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!