এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > দিল্লির ‘আশীর্বাদ’ যে মুকুলের মাথাতেই, আরও একবার ‘মাস্টারস্ট্রোকে’ বুঝিয়ে দিলেন ‘চানক্য’

দিল্লির ‘আশীর্বাদ’ যে মুকুলের মাথাতেই, আরও একবার ‘মাস্টারস্ট্রোকে’ বুঝিয়ে দিলেন ‘চানক্য’


মুকুল রায় যখন তৃণমূল ছেড়েছিলেন, তখন তৃণমূলের কর্মী-সমর্থক থেকে শুরু করে হেভিওয়েট শীর্ষনেতা, সকলেই ‘সমস্বরে, একরাশ ঘৃণা ভরে, চিৎকার করে’ বলেছিলেন, মুকুল রায়কে ‘মুকুল রায়’ নাকি বানিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়! তিনিই কাঁচরাপাড়ার ‘অখ্যাত’ গলি থেকে তুলে নাকি মুকুল রায়কে দিল্লির রাজনীতিতে বসিয়েছেন! আর সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেই ‘গদ্দারি’ করলেন মুকুল রায়!

তবে, এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছত্রচ্ছায়া থেকে সরে যাওয়াই, তাঁর রাজনৈতিক ‘ক্যারিয়ার’ শেষ হওয়া নাকি শুধু সময়ের অপেক্ষা! কিন্তু, মুচকি হেসেছিলেন মুকুল রায়ের অনুগামীরা! তাঁরা শুধু প্রশ্ন তুলেছিলেন, দলে তো নেতার অভাব ছিল না! তাহলে হঠাৎ করে মুকুল রায়কেই এত গুরুত্ব দিতে হয়েছিল কেন তৃণমূল নেত্রীকে? সবথেকে বড় কথা তৃণমূল কংগ্রেসের জন্মের পর থেকেই দলকে নিয়ে মানুষের আবেগের শেষ ছিল না – অথচ ২০০৬ পর্যন্ত বিভিন্ন নির্বাচনে মুখ থুবড়ে পড়া ছাড়া, অন্য কিছু হয় নি ঘাসফুল শিবিরের।

আর ২০০৬-এর পর সবাই যখন তৃণমূল নেত্রীকে ছেড়ে চলে গেছেন বা যাওয়ার কথা ভাবছেন, তখন থেকেই সংগঠন সামলানোর ভার ছিল মুকুল রায়ের উপরে – আর তার মাত্র পাঁচ বছরের মধ্যেই কিন্তু দল এসেছিল ক্ষমতায়! কিন্তু, মুকুল রায়ের দলত্যাগে তাঁর উপর বিষেদগার যত না তাঁর পুরোনো দল তৃণমূল করেছিল, তার থেকেও বেশি করেছিল তাঁর নতুন দল বিজেপির বঙ্গ-ব্রিগেডের নেতারা! আজ যে কথায় কথায় মুকুল রায়কে ‘চাটনিবাবু’ বলে তৃণমূল আক্রমন করার চেষ্টা করে, সেই ‘অপনামের’ জনক তো স্বয়ং বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ!

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

গেরুয়া শিবিরের অন্দরে কান পাতলেই শোনা যায়, বিজেপিতে গিয়ে কাজ করতে পদে পদে নাকি বাধা পেতে হয়েছে মুকুল রায়কে! কিন্তু, তিনি এমন এক নেতা, যিনি বিজেপির কোনো পদে না থেকেও সরাসরি দিল্লি গিয়ে অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক করতে পারেন। কৈলাশ বিজয়বর্গীয় তো ঘনিষ্ঠ মহলে বলেই রেখেছেন – মুকুল রায় নাকি ‘হীরা’। তা এহেন ‘হীরাকে’ নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে জল্পনার অন্ত নেই! তিনি নাকি দলের সংগঠন বৃদ্ধির নামে, তৃণমূলের বেনোজল বিজেপিতে চালান করছেন!

তাঁর হাত ধরে যোগ দেওয়া কাউন্সিলররা আবার ফিরে যাচ্ছেন পুরোনো দলে, ফলে তাঁর জন্যই ‘মুখ পুড়ছে’ বিজেপির! এমনকি, বিজেপির ‘নীতি-আদর্শ’ না মানা, না জানা লোকেদের দলে নিয়ে এসে ‘বড় ক্ষতি’ করে দিচ্ছেন! ফলে, তাঁর রাজনৈতিক কর্মকান্ডে হবে ‘রাশ’ টানা, হবে তাঁর ‘ডানা ছাঁটা’! দলবদলের ব্যাপারে শেষ কথা বলবেন এবার থেকে দিলীপ ঘোষই, সবথেকে বড় কথা আর দিল্লিতে নয় – রাজ্য বিজেপির ‘অনুমতি’ নিয়ে বাংলাতেই হবে দলবদল। হেভিওয়েট নেতা হলে রাজ্য দপ্তরে, নাহলে জেলা বা মন্ডলে গিয়ে যোগদান করতে হবে!

কিন্তু, তিনি মুকুল রায় – বঙ্গ-রাজনীতির ‘চানক্য’, নিজের মুখেই বলেন রাজনীতি করতে গেলে ক্রিজে টিকে থাকাটা জরুরি। তার থেকেও জরুরি, রাজনীতিতে সঠিক সুযোগ ও সময়ের অপেক্ষা করার। আর তাই, ঠান্ডা মাথায় ক্রিজে পরে থেকে, তিনি যেমন তৃণমূলের ঘুম ওড়াচ্ছেন, তেমনই কিন্তু প্রতি পদে প্রমান করে দিচ্ছেন ‘দিল্লির আশীর্বাদের হাত’ তাঁর মাথাতেই আছে। অর্থাৎ, তিনি যা করছেন কেন্দ্রীয় অনুমোদন নিয়েই করছেন, আর কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তাঁর এই রাজনৈতিক পদক্ষেপে দলের ‘ভালোই’ দেখছেন।

ফলে, এত তর্ক-বিতর্কের পরেও, গতকাল আবারো দিল্লিতে যোগদান পর্ব অনুষ্ঠিত করলেন তিনি। আর শুধু করলেনই না, সেই যোগদান অনুষ্ঠানে হাসি হাসি মুখে হাজির হলেন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ তো বটেই, এমনকি প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি রাহুল সিনহাও। মুকুল রায় আবারো প্রমান করে দিলেন অমিত শাহ, জেপি নাড্ডা বা কৈলাশ বিজয়বর্গীয়দের ‘ব্লু আয়েড বয়’ তিনিই। সুতরাং, আগামীদিনে মুকুল রায়ই যে হতে চলেছেন বঙ্গ রাজনীতির অন্যতম চালিকা শক্তি সে ব্যাপারে একপ্রকার নিঃসংশয় রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!