এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > বিজেপিতে বড়সড় গুরুত্ব বাড়ল মুকুল রায়ের, একই সঙ্গে অনন্ত চাপ বাড়ল বঙ্গ রাজনীতির চাণক্যের?

বিজেপিতে বড়সড় গুরুত্ব বাড়ল মুকুল রায়ের, একই সঙ্গে অনন্ত চাপ বাড়ল বঙ্গ রাজনীতির চাণক্যের?


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – সেই 2017 সালে একপ্রকার নিজের হাতে তৈরি করা দল তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে, ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগদান করেছিলেন একদা তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড নামে পরিচিত মুকুল রায়। তারপর দীর্ঘ সাড়ে তিন বছরের প্রতীক্ষা – মাঝে বহুবার, তার পদ্মফুল শিবিরে সম্মানযোগ্য পদ পাওয়া নিয়ে জল্পনা উঠতে দেখা গিয়েছিল মুকুলবাবুর অনুগামী ও ঘনিষ্ঠমহলে । কিন্তু বারবার খুব কাছে এসেও অনেকবারই রিক্ত হাতে থাকতে হয়েছিল বঙ্গ বিজেপির চাণক্য নামে খ্যাত মুকুল রায়কে।

কিন্তু বর্তমানে সেই মুকুলবাবু ভারতীয় জনতা পার্টির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি পদে অভিষিক্ত হয়েছেন। এরকম সময় একদিকে যেমন খুশি হতে দেখা গেছে মুকুল রায়ের অনুগামীদেরকে এবং সমর্থকদেরকে, অন্যদিকে কিন্তু তেমনই ভারতীয় জনতা পার্টির একটা অংশ ভালোমত মেনে নিতে পারছেন না তৃণমূল ছেড়ে আসা মুকুলবাবুর এই বড়োসড় রাজনৈতিক সাফল্যকে। কিন্তু নানা রকম বিতর্ক থাকলেও রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একটা বড় অংশের মধ্যে কিন্তু এখন দলে জায়গা করতে গেলে শুধুমাত্র পুরনো তকমা থাকলেই চলবে না, সাথে সাথে দলকে সাফল্যের দিকে নিয়ে যাওয়ার মতো চাবিকাঠি ও হাতে রাখা চাই।

আর এই সাফল্যের যাত্রায় মুকুলবাবু যে অনেকটাই সফল, সেই বিষয়ে সন্দেহ নেই প্রায় কারোর মধ্যেই। একবার তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগ দেওয়ার পরে মুকুলবাবুর দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা জেরে বারবার লাভবান হতে দেখা গেছে ভারতীয় জনতা পার্টিকে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, 2018 সালের পঞ্চায়েত নির্বাচন – একসময় যে ভারতীয় জনতা পার্টিতে গোটা বাংলার পঞ্চায়েতের মানচিত্রে খুঁজলেও পাওয়া যেত না, সেই ভারতীয় জনতা পার্টিকে সারা বাংলায় অনেক পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদে সাফল্যের মুখ দেখানোর মহামন্ত্র দিতে সক্ষম হয়েছিল মুকুল রায়।

শুধু তাই নয়, পরবর্তীতে তৃণমূল কংগ্রেসকে বেকায়দায় ফেলার মত আরও অনেক যোজনা বেরিয়েছে তার মাথা থেকে। যার জেরে সরাসরি উপকৃত হয়েছে পদ্মফুল শিবির। তাই যোগ্যতা অনুযায়ী মুকুলবাবু যে দলে উচিত সম্মান পেয়েছেন, তা বলার অপেক্ষা রাখে না বলেই অভিমত অভিজ্ঞ মহলের। তবে সদ্য রাহুল সিনহার একটি ভিডিও ক্লিপিং নিয়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে বঙ্গ রাজনীতিতে। যেখানে তিনি বলছেন, তার চল্লিশ বছরের রাজনৈতিক তপস্যাকে উপেক্ষা করে সদ্য সদ্য তৃণমূল থেকে আসা নেতাদেরকে দলে জায়গা দেওয়ার জন্য তাদের মত পুরনো নেতাদেরকে উপেক্ষা করা হচ্ছে।

অনেকের কাছে রাহুলবাবুর কথার গুরুত্ব থাকলেও, বিজেপির অন্দরের অভিজ্ঞ রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ কিন্তু বলছেন যে, সংকল্প নিয়ে ভারতীয় জনতা পার্টি গোটা ভারতবর্ষে জুড়ে নিজেদের জয়যাত্রাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। সেই সংকল্পের মাঝখানে কাজ না করতে পারলে দলে ভালো জায়গায় করা সম্ভব নয়। আর যদি সঠিক রাস্তায় দলকে উপকৃত করা যায়, তাহলে অতীত ইতিহাস সম্পর্কে দল খুব একটা বেশি মাথা ঘামায় না।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

বিগত দিনে লক্ষ করা গেছে 2016 সালের বিধানসভা নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন নেতাজি পরিবারের সদস্য চন্দ্র বসু। পরবর্তীতে 2019 সালেও তাকে পুনরায় সুযোগ দেওয়া হয়েছিল দক্ষিণ কলকাতা লোকসভা কেন্দ্র থেকে জয় ছিনিয়ে নেওয়ার। কিন্তু দুইবারই তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। উপরন্ত দলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় অস্বস্তিকর মন্তব্য করে দলকে বিরম্বনায় ফেলতে দেখা গিয়েছিল তাকে। সেই জন্য বর্তমানে দলের কোনো বিশেষ জায়গায় স্থান হয়নি বলে মনে করছে একাংশ।

অন্যদিকে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে সমস্ত দায়িত্ব সামলে মুকুলবাবু যেভাবে ৪২ এ ৪২ স্বপ্ন দেখা তৃণমূল কংগ্রেসের স্বপ্ন ভঙ্গ করে ভারতীয় জনতা পার্টির আসন সংখ্যা দুই থেকে বাড়িয়ে ১৮ করে দিয়েছিলেন, তার মধ্যে দিয়েই তাঁর রাজনৈতিক যোগ্যতার প্রকাশ পাওয়া যায়। আবার যেহেতু বঙ্গ বিজেপির সভাপতি হিসেবে দিলীপ ঘোষও নিজের দায়িত্ব অনেকটাই সঠিকভাবে পালন করেছেন খড়্গপুরের মত বিধানসভা কেন্দ্র থেকে জয় যুক্ত হয়েছেন।

একাধিক কড়া চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করেছেন। পরবর্তীতে মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে জয় যুক্ত হয়েছেন। সেই জন্য তারও অনেক অস্বস্তিকর মন্তব্য সত্বেও ভারতীয় জনতা পার্টির উর্দ্ধতন নেতৃত্ব কিন্তু তাকে স্বমহিমায় রেখেছেন – তা বলাই চলে। বর্তমানে ভারতীয় জনতা পার্টিতে সাফল্যকেই সম্মান করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে মতানৈক্য থাকলেও মুকুলবাবু যে বিজেপিতে যোগ্য সম্মান যোগ্য সম্মান পাওয়ার যোগ্য ছিল, সেই বিষয়ে একমত প্রায় একাধিক শীর্ষস্তরের বিজেপি নেতা।

কিন্তু এত বড় গুরুত্বপূর্ণ পদ পাওয়ার পরে এবার নতুন জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে মুকুল রায়কে নিয়ে। রাহুল সিনহা বা চন্দ্র বসুর উধারন সামনে রেখে অনেকেই বলতে শুরু করেছেন – পঞ্চায়েত বা লোকসভা নির্বাচনে মুকুলবাবু যা করেছেন তার পুরস্কার মিলেছে সর্বভারতীয় স্তরে এতবড় পদপ্রাপ্তিতে। কিন্তু সামনেই ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচন, সেখানে তাঁর উপর বিজেপি শীর্ষনেতৃত্বের প্রত্যাশা কিন্তু অনেক।

ফলে এখন থেকেই স্বমহিমায় তাঁকে রাজনৈতিক ময়দানে নেমে পড়তে হবে। লোকসভার আগে তৃণমূলের ভাঙনের যা কাজ তিনি শুরু করেছিলেন – তা শেষ তো করতেই হবে। উপরন্তু একুশের মহাযুদ্ধে নবান্নের রং গেরুয়া করতেও তাঁকে নিতে হবে বাড়তি উদ্যোগ! নাহলে রাহুল সিনহা বা চন্দ্র বসুর উদাহরণ তো হাতের সামনেই আছে। ফলে মুকুল রায় কি করে আগামী দিনে তৃণমূল কংগ্রেসের সংগঠনকে বিধ্বস্ত করে ভারতীয় জনতা পার্টির জন্য 2021 সালের তীব্র লড়াইয়ে জয়যুক্ত করতে পারেন, সেদিকে অবশ্যই লক্ষ্য থাকবে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!