এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > মুকুলের পর কি কানন? বান্ধবীকে পাশে বসিয়ে মমতার প্রতি আনুগত্য প্রকাশে জল্পনা!

মুকুলের পর কি কানন? বান্ধবীকে পাশে বসিয়ে মমতার প্রতি আনুগত্য প্রকাশে জল্পনা!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –   অনেকে বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন বিরোধী দলের নেত্রী, তখন অনেকে তার রাজনৈতিক সহকর্মী থাকলেও, শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পর্ক ছিল অন্য। এক্ষেত্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এতটাই ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি ছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায় যে, বিরোধী নেত্রী থাকার সময় অনেক সভা-সমিতিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিভিন্ন ছবি তোলার কাজ করতেও দেখা যেত।

শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে তৃণমূল নেত্রীর ঘনিষ্ঠতা এতটাই গভীর ছিল যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিজের “মা” বলে সম্বোধিত করতেন কলকাতা পৌরসভার প্রাক্তন মেয়র। অর্থাৎ রাজনৈতিক সম্পর্কের বাইরেও শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে একটা পারিবারিক বন্ধনে আবদ্ধ ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক্ষেত্রে তার পরিবারের জটিলতা থেকে শুরু করে নানা সমস্যার সমাধানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে পরামর্শ নিতেন এই শোভন চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু হঠাৎ করেই ঘটে গেল ছন্দপতন।

রত্না চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে শোভন চট্টোপাধ্যায় বিবাদ এবং বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা, মাতৃসমা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তৈরি করল বিচ্ছেদ। পরিস্থিতি এতটাই জটিল হয়ে যায় যে বান্ধবী প্রীতি সবথেকে বড় হয়ে দাঁড়ায় শোভন চট্টোপাধ্যায়ের কাছে কলকাতা পৌরসভার মেয়র পদ ত্যাগ করার পর রাজ্যের মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিয়ে ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগ দেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। তবে বিজেপিতে থেকে খুব একটা লাভ করতে পারেননি তিনি। তারপর বয়ে গেছে বহু জল।

বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির ভরাডুবির পর সেভাবে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের নামের আগে “বিজেপি নেতা” শব্দ বন্ধনী বসানো যাবে না। কিছুদিন আগেই নারদ কান্ডে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন তিনি। পরবর্তীতে মুক্তি পেয়েছেন। আর এই পরিস্থিতিতে ফেসবুক লাইভে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে রীতিমত জল্পনা বাড়িয়ে দিলেন সেই শোভন চট্টোপাধ্যায়। যেখানে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে, তাহলে কি মুকুল রায়ের পর এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আরেক প্রাক্তন সৈনিক শোভন চট্টোপাধ্যায় তার কাছে ফিরে আসতে চাইছেন! ঘরের ছেলে আবার ঘরে ফিরতে চাইছেন?

বস্তুত, রত্না চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বিবাদ যে ক্রমবর্ধমান, তা এই ফেসবুক লাইভের মধ্যে দিয়ে পরিষ্কার। কিন্তু এতদিন জার্সি পরিবর্তন করার পর বিজেপিতে থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করতে দেখা গিয়েছিল শোভনবাবু এবং তার বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে। কিন্তু এবার রত্না চট্টোপাধ্যায়কে আক্রমণের সীমা এক রেখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি কিছুটা নরম মনোভাব প্রকাশ করতে দেখা গেল শোভনবাবুকে।

তৃণমূল নেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে রত্না চট্টোপাধ্যায় সম্পর্কে বিস্ফোরক অভিযোগ করেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং আমার মধ্যে ঢুকে সম্পর্ক খারাপ করে দিয়েছেন রত্না চট্টোপাধ্যায়। আমি আজও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করি। তার প্রতি আস্থা এবং সম্মান অবিচল।” আর এখানেই তৈরি হয়েছে প্রশ্ন। শোভন চট্টোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস ত্যাগ করার পেছনে প্রধান কারণ যে রত্না চট্টোপাধ্যায়, তা কার্যত স্পষ্ট। কিন্তু রত্নাদেবী বর্তমানে তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক।

তাই তাকে আক্রমণ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি সুর নরম করে কি তৃণমূল নেত্রীর ঘরে ফিরে যাওয়ার বার্তা দিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়! এক্ষেত্রে রত্না চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে তৃণমূল নেত্রীর প্রতি যে তার কোনো রাগ নেই, তা বোঝানোর চেষ্টা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রিয় কানন! ফেসবুক লাইভের পর এখন এই সমস্ত প্রশ্ন ক্রমাগত মাথাচাড়া দিতে শুরু করেছে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

পাশাপাশি আর একটি প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছে। এক্ষেত্রে তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক রত্না চট্টোপাধ্যায় সম্পর্কে যে শোভনবাবুর যে যথেষ্ট আপত্তি রয়েছে, তা ফেসবুক লাইভের মধ্যে দিয়ে পরিষ্কার। তাই শোভন চট্টোপাধ্যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে তৃণমূলের ফেরার রাস্তা তৈরি করতে চাইলেও, যেহেতু তিনি রত্না চট্টোপাধ্যায়ের বিরোধিতা করছেন, তাই তাকে কি অত সহজে তৃণমূলে ফিরতে সাহায্য করবেন রত্নাদেবী! এক্ষেত্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সেতুবন্ধন রক্ষা করা অপেক্ষা রত্নাদেবীর বিরোধিতা করার জন্য শোভন চট্টোপাধ্যায়কে তৃণমূল নেত্রীর কাছ থেকে আরও দূরে সরিয়ে দেওয়ার কাজ করতে পারেন রত্না চট্টোপাধ্যায় বলে দাবি একাংশের।

যার ফলে শোভন চট্টোপাধ্যায় নিজের বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করলেও, শুধুমাত্র রত্না চট্টোপাধ্যায়ের প্রতি বিরোধিতা করার কারণে তার তৃণমূলের ফেরার রাস্তা কার্যত বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও বা তিনি তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেবেন, বা তার পুরোনো দলে শামিল হবেন, এমন কোনো মন্তব্য করেনি শোভন চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু তার এই ফেসবুক লাইভ থেকে প্রাক্তন নেত্রীর প্রতি আনুগত্য প্রকাশ জল্পনা ক্রমশ বৃদ্ধি করতে শুরু করেছে। সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!