এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > সঠিক সময়ে পুরভোট হচ্ছে ধরে নিয়ে এখন থেকেই আসরে বিজেপি, থাকছে একাধিক “মাস্টারস্ট্রোক”

সঠিক সময়ে পুরভোট হচ্ছে ধরে নিয়ে এখন থেকেই আসরে বিজেপি, থাকছে একাধিক “মাস্টারস্ট্রোক”

মেয়াদ ফুরিয়ে গেছে রাজ্যের একাধিক পৌরসভার। সেই সমস্ত জায়গায় দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসক এবং সরকার মনোনীত প্যানেল প্রশাসনিক কাজকর্ম দেখাশোনা করছেন। রাজ্যে স্থগিত থাকা পৌরসভা ভোট নিয়ে একাধিকবার প্রশ্নের মুখে দাঁড়াতে হয় শাসক দলকে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অনেকেই দাবি করেন, লোকসভা ভোটে আশানুরূপ ফল না করতে পেরে এবং শাসকদলের কমতে থাকা জনপ্রিয়তাকে দেখে মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়া পৌরসভাগুলোর ভোট করাতে রীতিমতো ভয় পাচ্ছে ঘাসফুল শিবির।

এই বিষয়ে বিধানসভায় সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, বারবার নির্বাচন করলে অর্থ, সময় ও উন্নয়নের কাজ সবই অপচয় হয়ে পড়ে। তাই সবকটি পৌরসভার নির্বাচন একসঙ্গে করানো হবে। আর সেই মোতাবেক সঠিক সময় পৌরসভা ভোট হচ্ছে ধরে নিয়ে মালদা জেলায় ভোট লড়াই রনাঙ্গনে নেমে পড়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি। নিয়ম অনুযায়ী আর মাত্র মাস ছয়েকের মধ্যেই মালদার ইংলিশবাজার ও পুরাতন মালদা পৌরসভার মেয়াদ শেষ হতে চলেছে। তাই যে সমস্ত জায়গায় নির্বাচন আসন্ন, সেইখানে নিজেদের প্রস্তুতি তুঙ্গে তুলে দিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি।

এবারের নির্বাচনী প্রচারে নাগরিকদের সঙ্গে বৈঠকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে পদ্মফুল শিবির। নিজেদের দলীয় প্রার্থী বেছে নেওয়ার ব্যাপারে শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতি চলছে। যদিও এই ব্যাপারে বিজেপি নেতারা কেউ সরাসরি মুখ খুলতে চাননি। তবুও ভারতীয় জনতা পার্টির এক গুরুত্বপূর্ণ নেতা জানিয়েছেন, তৃণমূল কংগ্রেসকে কোণঠাসা করতে এই নতুন অস্ত্র দারুন কাজে লাগবে। অর্থাৎ জনগণের সঙ্গে কথা বলে তাদের মধ্যে থেকে প্রার্থী নির্বাচন করা।

সূত্র মারফত জানা গেছে, বিজেপির এই নতুন প্রচারের নাম হতে পারে “প্রার্থী আপনার প্রতীক আমাদের”। নাগরিকদের সরাসরি নিজেদের সঙ্গে যুক্ত করে প্রার্থী বাছাইয়ের সুফল পার্টি যে বিপুলভাবে পাবে, সেই বিষয়ে কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই নেতৃত্বদের মনে। এদিন এই প্রসঙ্গে মালদহ জেলা বিজেপির সভাপতি গোবিন্দ মন্ডল জানান, “দিদিকে বলো আসলে লোক দেখানো। প্রায় দেড় মাস হয়ে গেল এই কর্মসূচি চালু আছে। শুনছি নাকি এক এক দিনে লক্ষ ফোন যাচ্ছে। কিন্তু এবার তৃণমূল নেতাদের হিসেব দিতে হবে যে কটি সমস্যার সমাধান তাদের নেত্রী করতে পারছেন। আমরা বছরভর মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখি। তাই ঢাক-ঢোল বাজিয়ে আলাদা করে জনসংযোগ করতে হয় না। আমাদের পৌরসভা নির্বাচন আসন্ন। আমরা নিজস্ব পদ্ধতি অনুযায়ী নাগরিকদের কাছে যাব। মানুষকে আমরা কি কি পরিষেবা দেব, তার তালিকা তাদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। তাদের মতামত নেব। আমরা চাই পৌরসভা পরিচালনা পুর এলাকার নাগরিকরাই করুক। এই লক্ষ্যে আমরা এগোচ্ছি।”

অন্যদিকে নির্বাচনের আগেই ইংলিশবাজার ও পুরাতন মালদা এই দুটি পৌরসভাতেই হেরে বসে আছে তৃণমূল কংগ্রেস। এরপরে তারা যখন মাস্টার স্ট্রোক দেবে, তখন তৃণমূল বুঝবে তাদের প্রস্তুতি কিরকম চলছে বলে জানান মালদহ জেলা বিজেপির সভাপতি। বিজেপি সূত্রের খবর, ওয়ার্ড ভিত্তিক ভাবে প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে নাগরিকদের সঙ্গে কথা বলার প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে। ওয়ার্ডে যে কয়েকটি পাড়া রয়েছে, তার সবকটিতেই বৈঠক করবেন বিজেপি নেতাকর্মীরা। বৈঠকের চায়ের ব্যবস্থা আবশ্যিক। খানিকটা পাড়া বৈঠকের মতো করেই স্থানীয়দের সমস্যা শুনে নেওয়া হবে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

পাশাপাশি গল্পের ছলে নাগরিকদের কাছ থেকে জেনে নেওয়া হবে তাদের পছন্দের প্রার্থীর নাম। আর তারপরেই ওয়ার্ড থেকে যে নামের তালিকা আসবে, তার মধ্যে থেকেই ওই ওয়ার্ডের প্রার্থী বেছে নেওয়া হবে। বস্তুত, বর্তমানে ইংলিশবাজার পৌরসভায় বিজেপির কাউন্সিলর সংখ্যা তিনজন। এর মধ্যে একজন অংশীদার আগেই তৃণমূলে যোগ দিয়েছে। সদ্যসমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে ইংলিশবাজার ও পুরাতন মালদহ এই দুটি পৌরসভাতেই তৃণমূলের থেকে সব ওয়ার্ডেই এগিয়েছিল বিজেপি। এদিন এই দুই পৌরসভায় অনুন্নয়ন প্রসঙ্গে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সরব হন মালদা জেলা বিজেপির সভাপতি।

গোবিন্দবাবু বলেন, “ওই দুটি পৌরসভার পরিচালনার ক্ষেত্রে তৃণমূলের আভ্যন্তরীণ খেয়োখেয়ির রাজনীতি স্বচক্ষে দেখেছেন পৌরসভার মানুষ। কি করে পুর পরিষেবাকে তুলে ক্ষমতা দখল করে থাকতে হয় তা নিয়ে ব্যস্ত তৃণমূল কাউন্সিলররা। তাই মানুষ ইতিমধ্যেই সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছেন। আমরাও নাগরিকদেরকে বলছি পৌরসভাকে ঘুঘুর বাসা হতে দেব না। আর ঘুঘুর বাসা যা রয়েছে, তা উৎখাত করব।”

তবে অপরদিকে বিজেপির এই দাবিকে উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূল কাউন্সিলর থেকে শুরু করে মালদহ জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী মৌসাম বেনাজির নূর। এদিন এই প্রসঙ্গে ইংলিশবাজার পুরসভার দীর্ঘদিনের তৃণমূল কংগ্রেস কাউন্সিলর সুব্রত সর্দার বলেন, “বিজেপির দাবি সম্পূর্ণ অসার। কোনমতেই লোকসভা নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি পৌরসভা নির্বাচনে হবে না। পুরসভা নির্বাচনে তৃণমূল শুধু জয়ীই নয়, বরং গতবারের চেয়ে বেশি আসনে জিতবে।”

একইভাবে এই বিষয়ে মালদা জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী মৌসম বেনজির নূর বলেন, “বিজেপি নেতাদের বোঝা উচিত লোকসভা ও পৌরসভা নির্বাচনে বৈশিষ্ট্যগত পার্থক্য রয়েছে। ওরা যত ইচ্ছা পরিকল্পনা করুন, দুটি পৌরসভা অনায়াসেই দখলে রাখবে তৃণমূল।”

তবে তৃণমূলের জেলা সভানেত্রী যাই দাবি করুন না কেন, লোকসভা নির্বাচনে যেভাবে মালদার দুটি লোকসভার মধ্যে একটি সিটে পদ্মফুল ফুটেছে এবং অন্য আসনে একেবারে কাটায় কাটায় কোনক্রমে জয়লাভ করেছে কংগ্রেস, আর একেবারেই ফিল্ডের বাইরে বেরিয়ে গেছে তৃণমূল কংগ্রেস, তাতে করে আগামী পৌরসভা নির্বাচনে পদ্মফুল যে ঘাসফুলের কালঘাম ছোটাতে চলেছে, তাতে একপ্রকার নিশ্চিত রাজনৈতিক মহল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!