এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > স্বয়ং পুরসভার চেয়ারম্যান কাটমানির অভিযোগে আক্রান্ত! চরম অস্বস্তিতে ঘুম উড়েছে তৃণমূলের

স্বয়ং পুরসভার চেয়ারম্যান কাটমানির অভিযোগে আক্রান্ত! চরম অস্বস্তিতে ঘুম উড়েছে তৃণমূলের

 

তৃণমূল কংগ্রেসের অভ্যন্তরে গোষ্ঠী কোন্দল নতুন কোনো ব্যাপার নয়। একাধিকবার দলের বিভিন্ন নেতাকে একে অপরের বিরুদ্ধে কাদা ছোড়াছুড়ি করতে দেখা গেছে। যার জেরে বহুবার অস্বস্তিতে পড়েছে রাজ্য তৃণমূল নেতৃত্ব। এর আগে ডোমকল অস্বস্তি বাড়িয়েছে তৃণমূলের।

আর এবার জঙ্গিপুরের পৌরসভার চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক দুর্নীতির অভিযোগ করলেন 10 নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর মইদুল খান। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে মইদুল খান লিখেছেন, “পৌরসভায় চাকরির নাম করে 8 লক্ষ টাকা নেওয়া হচ্ছে। অযোগ্য ব্যক্তিদের চাকরিতে ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে।” বলাই বাহুল্য, এই বিষয়ে সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পৌরসভার চেয়ারম্যান মহম্মদ মোজাহারুল ইসলাম।

পাশাপাশি চেয়ারম্যানের ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, 10 নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর চেয়ারম্যানের সঙ্গে ব্যক্তিগত আক্রোশের জেরেই এই ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছেন। তবে ওই কাউন্সিলরের পক্ষ থেকে কিন্তু রীতিমতো সংবাদমাধ্যমের সামনে বিস্তারিতভাবে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে।

বস্তুত, এর আগে ডোমকল পৌরসভার ভাইস চেয়ারম্যান কার্তিক চাকীর তরফ থেকে একটি রাস্তা তৈরিতে কাটমানি নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছিল। যাতে করে প্রবল অস্বস্তির মুখে পড়তে হয় তৃণমূল কংগ্রেসকে। আর এবার জঙ্গিপুরের 10 নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে পৌরসভার চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, “চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ক্ষোভ হঠাৎ করে হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে সব কিছু জমিয়ে রাখার পর অবশেষে প্রকাশ পেয়েছে।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

পাশাপাশি পৌরসভার চেয়ারম্যানের তরফ থেকে তাঁকে কাজ দিতে অসহযোগিতা করা হয় বলে অভিযোগ করেছেন বিদ্রোহী কাউন্সিলর। তিনি এও বলেছেন, “কোটি কোটি টাকা নয়ছয় হচ্ছে। “আম্রুদ” প্রকল্পে বহু টাকা এসেছে। কিন্তু তাতে কি কাজ হয়েছে, কেউ জানে না।” তিনি শহরের বাসিন্দাদেরকেও চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সরব হতে আহ্বান জানিয়েছেন। তবে নিজের উপরে ওঠা সব অভিযোগ খণ্ডন করেন জঙ্গিপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান। এদিন তিনি বলেন, “এইসব অভিযোগ ঠিক নয়। ওর সঙ্গে কথা বলে সব মিটিয়ে নেওয়া হবে। আমার মনে হয়, আবেগতাড়িত হয়ে তিনি ওইসব বলেছেন।”

তবে এলাকায় কান পাতলেই শোনা যায়, কার্যত কোন্দলে জর্জরিত হয়ে রয়েছে স্থানীয় পৌরসভার তৃণমূল নেতাকর্মীরা। একাধিকবার তৃণমূল কংগ্রেসের রাজনৈতিক কোন্দল প্রকাশ্যে চলে এসেছে। তার একটা বড় কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যেহেতু এই এলাকায় কংগ্রেস থেকে শুরু করে বাম এবং বিজেপি সেইভাবে সক্রিয় নয়, তাই তৃণমূল নিজেদের মধ্যে গোষ্ঠী কোন্দলে ব্যস্ত হয়ে থাকে। তবে সম্প্রতি নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরোধিতা করতে গিয়ে দেখা গেছে, এই এলাকায় ভিন রাজ্যের একটি মৌলবাদী সংগঠন কিন্তু মাথা চারা দিয়েছে।

তাই নিজেদের ঘর গোছাতে এখন তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠী কোন্দলকে দলের মধ্যে থেকে ছুড়ে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করছে। বিদ্রোহী ওই কাউন্সিলরের সঙ্গে দলীয় নেতৃত্ব কথা বলবেন বলে জানা গেছে তৃণমূল সূত্রে। আগামী পৌরসভা নির্বাচন দোরগোড়ায় এসে পৌঁছানোর জন্য দলের তরফ থেকে অনেক আগেই সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানানো হয়েছিল। এমনকি যদি দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কারও কোনো রকম অভিযোগ থাকে, প্রকাশ্যে বা সংবাদমাধ্যমের সামনে সেই অভিযোগ না করে, যেন দলের অভ্যন্তরে অভিযোগ নিয়ে আলোচনা করা হয়, সেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল উচ্চ তৃণমূল নেতৃত্বের তরফ থেকে।

শুধুমাত্র পৌরসভা এলাকায় নয়, এলাকার বিভিন্ন পঞ্চায়েতের তৃণমূল নেতাকর্মীরা পরস্পরের বিরুদ্ধে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ তুলেছে। কখনও ফারাক্কা এলাকায় কন্যাশ্রী প্রকল্পে মোটা অঙ্কের টাকা কাটমানির অভিযোগ উঠেছে। আবার কখনও বাংলার আবাস যোজনা প্রকল্পে সুতি থেকে শুরু করে ডোমকল বিভিন্ন এলাকা থেকে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অভিযোগ তোলা হয় বিরোধীদের থেকে।

তবে বর্তমানে তৃণমূলের বিরুদ্ধে তৃণমূল কাউন্সিলর নিজেই অভিযোগ করেছেন ডোমকল এবং জঙ্গিপুর পৌরসভাতে। কাজেই তৃণমূল কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ রক্তচাপ যে বেড়ে যাচ্ছে, সেই বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এখন সমগ্র পরিস্থিতি পরবর্তীতে কোনদিকে গড়ায়! সেদিকেই লক্ষ্য থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!