এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > শিয়রে পুরভোট, তৃণমূলী কাউন্সিলরদের কোন্দলে ঘুম ছুটছে পিকের

শিয়রে পুরভোট, তৃণমূলী কাউন্সিলরদের কোন্দলে ঘুম ছুটছে পিকের

কদিন আগে তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা নেতাদেরকে রাজ্য নেতৃত্ব স্পষ্ট বার্তা দিয়েছিল, বছরের শুরুতেই পৌরসভা ভোট এবং বছরের শেষে বিধানসভা ভোট ধরে নিয়ে প্রস্তুতি শুরু করতে হবে। কিন্তু মালদা জেলার দলীয় নেতাদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে এখন তৃণমূলের সেই ভোট প্রস্তুতি দুরস্ত বলেই দেখা যাচ্ছে।

সম্প্রতি গত মঙ্গলবার মালদহের ইংরেজবাজার পুরসভার বোর্ড মিটিং ভেস্তে গিয়েছে। যে কারণে স্পষ্ট হয়ে পড়েছে, তৃণমূলের দলীয় গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে, যে তৃণমূল অভ্যন্তরীণ গোলযোগের কারণে অনেকটাই অ্যাডভান্টেজ পেতে শুরু করেছে বিরোধী দলগুলি। মূলত, মালদহ জেলা, যেখানে লোকসভা ভোটের নিরিখে কার্যত অস্তিত্বহীন হয়ে পড়েছিল শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস।

কারণ উত্তর মালদহ লোকসভা কেন্দ্রে জয়যুক্ত হয়েছিল ভারতীয় জনতা পার্টি। আর দক্ষিণ মালদহ লোকসভা কেন্দ্রে জয়যুক্ত হয়েছিল জাতীয় কংগ্রেস। উত্তর মালদা লোকসভা ভোটের ফলাফল অনুযায়ী, তৃণমূল কংগ্রেস দ্বিতীয় জায়গায় থাকলেও দক্ষিণ মালদায় কিন্তু তৃতীয় স্থানে পৌঁছে গিয়েছিল রাজ্যের শাসক দল। আর এরকম অবস্থায় দলের ভিতরে কোন্দল আত্মঘাতী হয়ে দাঁড়াতে পারে শাসক দলের কাছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

এদিন এই ঘটনা প্রসঙ্গে মালদহ জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী মৌসম বেনজির নূর বলেন, “বোর্ড মিটিং নিয়ে ঠিক কি হয়েছে, সে ব্যাপারে আমার বিস্তারিত জানা নেই। দ্রুত বিষয়টি নিয়ে আমি কাউন্সিলরদের সঙ্গে কথা বলব।” আবার এই ব্যাপারে জেলার প্রাক্তন সভাপতি তথা ইংরেজবাজার পৌরসভার ভাইস চেয়ারম্যান দুলাল সরকার বলেন, “দ্রুত আবার বোর্ড মিটিং ডেকে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা চলছে। দলের ভাবমূর্তিকে বজায় রাখার জন্য সকলকে সচেষ্ট হতে হবে।”

পাশাপাশি বিরোধীদের মোকাবিলায় দলবদ্ধভাবে লড়াইয়ের প্রয়োজন রয়েছে বলেও মত প্রকাশ করেন বাবলাবাবু। কিন্তু তৃণমূলের দলীয় অভ্যন্তরীন কোন্দলের ব্যাপারে তাদেরকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিরোধী দল ভারতীয় জনতা পার্টি। এদিন এই বিষয়ে বিজেপির জেলা সভাপতি তথা মালদহ জেলায় দলের মুখপাত্র অজয় গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “তৃণমূলের গ্রহণযোগ্যতা প্রতিদিন কমছে। শহরে ঘাসফুল ক্রমশ জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে। বেহাল পরিষেবার কারণে মানুষ এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে বিজেপিকে চাইছে।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

তৃণমূল কংগ্রেসের চিন্তা বাড়িয়ে এদিন ভারতীয় জনতা পার্টির মুখপাত্র দাবি করেন, আগামী দিনে এমনিতেই আমরা পৌরসভা দখল করব। তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল আমাদের অগ্রগতিকে আরও তরান্বিত করবে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, প্রায় এক বছর পরে গত মঙ্গলবার দিন তৃণমূল কংগ্রেসের ইংলিশবাজার পৌরসভার বোর্ড মিটিংয়ের ডাক দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু 1 ঘন্টার মিটিং তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠী কোন্দলে ভেস্তে যায়।

জানা গেছে, এই মিটিংয়ে পৌরসভার চেয়ারম্যান বিগত দিনের আড়াইশো কোটি টাকার বাজেট পেশ করার চেষ্টা করলে তৃণমূলেরই অন্যান্য কাউন্সিলররা তাকে বাধা প্রদান করেন। ফলে একপ্রকার বাধ্য হয়েই বোর্ড মিটিং বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হয়। তবে তৃণমূলের এই অন্তর্কলহ কিন্তু যথেষ্ট মজার এবং আশাপ্রদ হয়ে দাঁড়ায় বিরোধী কাউন্সিলরদের কাছে।

বোর্ড মিটিংয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে তৃণমূলের হৈ হট্টগোল আগামীদিনে শাসক দলের সাংগঠনিক দুর্বলতাকে আরও বেশি দুর্বলতর করবে বলে বুঝতে পারে বিরোধীরা। তার ওপরে আবার লোকসভা নির্বাচনে যে ফলাফল সামনে এসেছে, তাতে করে মালদহ জেলার ইংরেজবাজার পৌরসভার অধিকাংশ ওয়ার্ডে রীতিমতো এগিয়ে রয়েছিল ভারতীয় জনতা পার্টি।

কাজেই আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে যে তারা অঙ্কের হিসাবে তৃণমূল কংগ্রেসের থেকে এগিয়ে রয়েছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আর এমতাবস্থায় যখন নিজের দলকে শক্তিশালী করার প্রয়োজন, সেই সময় তৃণমূল কংগ্রেসের অন্তঃকলহ চিন্তার ভাঁজ ফেলে দিয়েছে জেলা থেকে শুরু করে রাজ্য নেতৃত্বের কপালে।

কার্যত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে এক প্রকারের দুর্নীতির অভিযোগ যেভাবে দলীয় কাউন্সিলরারাই করতে শুরু করে দিয়েছেন, তার উপর ভিত্তি করে বিরোধীদের আরও অনেক বেশি সুবিধা হবে তৃণমূল কংগ্রেসকে আক্রমণ করতে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। সাথেই রাজনৈতিকমহলের মতে, তৃণমূল কাউন্সিলরদের এহেন আচরণের চাপ বাড়ছে প্রশান্ত কিশোরের। এখন আগামীদিনে ঘর গোছাতে রাজ্য তৃণমূল নেতৃত্ব ঠিক কি নির্দেশ দেন এবং জেলার মাটিতে সেই নির্দেশ কতটা পালিত হয়! সেদিকেই লক্ষ্য থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!