এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > পৌরসভা নির্বাচনের মুখে বড় বিপাকে বিজেপি, চিন্তায় গেরুয়া শিবির !

পৌরসভা নির্বাচনের মুখে বড় বিপাকে বিজেপি, চিন্তায় গেরুয়া শিবির !

গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি বাংলায় অত্যন্ত ভাল ফলাফল করেছিল। 42 টি আসনের মধ্যে 18 টি আসন দখল করে বিজেপি প্রমাণ করে দিয়েছিল, তারা রাজ্যের উদীয়মান বিরোধী শক্তি। আর লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পর যতদিন গিয়েছে, ততই বঙ্গ রাজনীতি দিয়ে অনেক জল বয়ে গিয়েছে। নির্বাচন পরবর্তী পরিস্থিতিতে বিজেপি প্রতি মানুষ আস্থা রাখলেও, কিছুদিন আগেই কেন্দ্রের পক্ষ থেকে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন লাগু করা হয়‌। আর এই আইন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকেই তার চরম বিরোধিতায় সরব হয় পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস।

বিজেপি এই আইন প্রয়োগ করে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভাজন তৈরি করতে চাইছে বলে গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধে এবং এই আইনের বিরুদ্ধে প্রচার শুরু করে ঘাসফুল শিবির। এমনকি তৃণমূল এক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পথসভা এবং ধরনা, অবস্থান কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে এই আইনের কুফল জনসাধারণের কাছে তুলে ধরে। তবে অপরদিকে বিজেপিও চেষ্টা করে, এই আইনের সুফল সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরে। যাতে সঠিক কথাটি জনসাধারনের কাছে পৌঁছানো যায়।

আর একদিকে এই আইনের কুফল নিয়ে তৃণমূল, আর অন্যদিকে এই আইনের সুফল নিয়ে বিজেপি যখন প্রচার করছে, ঠিক তখনই সাধারণ মানুষের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হল সেই বিজেপি নেতাদের। সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার দুপুরে আরামবাগের আট নম্বর ওয়ার্ডের কাঁটাবন এলাকায় বিজেপির সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিমান ঘোষ সহ বিজেপির বেশ কিছু নেতাকর্মী বাড়ি বাড়ি গিয়ে পৌরসভা ভোটের প্রচার শুরু করেন। তবে বিজেপি পৌরসভা নির্বাচনের প্রচার করলেও, সাধারণ মানুষের একাংশ তাদের সেই প্রচার অভিযানে বাধা দেয় বলে অভিযোগ ওঠে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এক্ষেত্রে সাধারণ মানুষ বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হয়ে এবং এই নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে সরব হয়ে বিজেপির দিকে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন। আর নিজেদের আইন এভাবে সাধারণ মানুষ বিরোধিতা করায়, বিজেপি অনেকটাই অস্বস্তিতে পড়ল বলে দাবি রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের। পাশাপাশি পৌরসভা নির্বাচনের আগে এই গোটা ঘটনা তৃণমূলকে এনআরসি বিরোধী প্রচারে বাড়তি অক্সিজেন পাইয়ে দিল বলেও মনে করছে একাংশ।

এদিন এই প্রসঙ্গে আনোয়ারা বেগম নামে এক বাসিন্দা বলেন, “আমরা যখন নোট বন্দি ও ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টের সঙ্গে আধার লিঙ্ক সহ বিভিন্ন কাজের জন্য সমস্যায় পড়েছি, তখন ওই বিজেপি নেতাদের দেখা যায়নি। অথচ পৌরসভা ভোটের আগে তারা প্রচার করতে এসেছেন। যে কারণে সম্পূর্ণ অরাজনৈতিকভাবে আমরা মহিলারা তাদের এলাকাছাড়া করেছি। কেন্দ্রীয় সরকার এনআরসির নামে দেশজুড়ে যে দাঙ্গা লাগাতে চাইছে, আমরা তার তীব্র বিরোধিতা করেছি।” তবে সাধারন বাসিন্দাদের পক্ষ থেকে বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হওয়ার ঘটনা ঘটলেও, এর পেছনে তৃণমূলকেই দায়ী করেছেন ভারতীয় জনতা পার্টির নেতৃত্বরা।

এদিন এই প্রসঙ্গে সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সভাপতি বিমান ঘোষ বলেন, “এনআরসি সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে তৃণমূল ভুল বুঝিয়েছে। তাই এনআরসির সমর্থনে আমাদের এলাকায় প্রচার চলছে। অধিকাংশ বাড়িতে আমরা হাজির হয়ে মানুষকে এনআরসি নিয়ে বোঝাতে পেরেছি। কিন্তু এতে ক্ষুব্ধ হয়ে রাজনৈতিক মুনাফার স্বার্থে তৃণমূলের কয়েকজন কর্মী সমর্থক আমাদের বিরোধীতা করতে থাকে। এতে আমাদের কর্মসূচিতে কোনো প্রভাব পড়েনি।” গোটা ঘটনায় বিজেপির তরফ থেকে তৃণমূলের দিকে আঙ্গুল তোলা হলেও তা সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করেছে তৃণমূল কংগ্রেস।

এদিন এই প্রসঙ্গে আরামবাগ শহর তৃণমূল সভাপতি রাজেশ চৌধুরী বলেন, “নিজেদের দোষ ঢাকতে বিজেপি তৃণমূলের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছে। চৌকিদারই যে চোর, তা ধরা পড়ে গিয়েছে। এলাকার মানুষ তা বুঝে গিয়েছেন। আসলে সাধারণ মানুষ বিজেপির সম্বন্ধে জানে। যে কারণে এতদিন বিজেপির নেতা কর্মীরা এলাকায় প্রচারে গেলে সাধারণ মানুষের ক্ষোভের মুখে তাদের পড়তে হয়। মানুষ কখনই যে এদের সমর্থন করে না, এদিন আবারও প্রমাণিত হল। এই রাজ্যে এখনও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা রয়েছে, যে কারণে বিজেপি নেতাদের ঘিরে সাধারণ মানুষ প্রতিবাদ জানাতে পারছে। কিন্তু অন্য বিজেপি শাসিত রাজ্যে গণতান্ত্রিক অধিকার খর্ব। সেখানে প্রতিবাদের কণ্ঠরোধ করা হয়েছে।”

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, গোটা ঘটনায় বিজেপি এবং তৃণমূলের মধ্যে তরজা চললেও, পৌরসভা নির্বাচনের আগে প্রচারে গিয়ে যেভাবে এনআরসি নিয়ে সাধারন মানুষের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হল ভারতীয় জনতা পার্টিকে, তাতে কিছুটা হলেও তারা বেকায়দায় পড়ল দাবি বিশেষজ্ঞদের। এখন এই পরিস্থিতিতে বিজেপি কিভাবে নিজেদের সামলে নেয়! সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!