এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > নারদ কান্ডে দলীয় নেতা-মন্ত্রীদের গ্রেপ্তার কি আরও খুশি করল মমতাকে? রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে জল্পনা!

নারদ কান্ডে দলীয় নেতা-মন্ত্রীদের গ্রেপ্তার কি আরও খুশি করল মমতাকে? রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে জল্পনা!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –  তৃতীয়বার বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় আসার পরই বিজেপির বিরুদ্ধে তাঁর এই জয়কে কার্যত অভিনন্দন এবং প্রশংসার বন্যা দিয়ে বইয়ে দিয়েছিলেন সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীরা। একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে এই অসম্ভবকে সম্ভব করতে পারেন, সেই কথা তুলে ধরে অখিলেশ যাদব থেকে শুরু করে স্ট্যালিন, সকলেই বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে ছিলেন।

তবে মন্ত্রিসভা গঠন হতে না হতেই নারদ কান্ডে রাজ্যের দুই মন্ত্রী এবং এক বিধায়ককে গ্রেফতার করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। যার পরই তৃণমূলের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, ভোটে পরাজয় হয়েছে বুঝে এবার রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বেছে নিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি। তবে দলের নেতা-কর্মীদের গ্রেফতারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অস্বস্তি বাড়লেও তার থেকে অনেক বেশি শক্তি এবং গ্রহণযোগ্য জায়গায় পৌঁছে গেলেন তিনি। অনেকে বলছেন, দলীয় নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের পরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হয়ত বা সর্বভারতীয় রাজনীতিতে আরও অনেক বেশি জায়গা করে নিতে সক্ষম হবেন।

সেদিক থেকে তার দলের নেতা এবং হেভিওয়েট মন্ত্রীদের গ্রেপ্তার তার রাজনৈতিক উচ্চতায় পৌঁছে যাওয়ার অন্যতম হাতিয়ার বলেই দাবি করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। কেননা ইতিমধ্যেই সদ্য ক্ষমতায় আসা তৃণমূল সরকারের নেতা এবং মন্ত্রীদের যেভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তার জন্য সর্বভারতীয় বিভিন্ন বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন পাশাপাশি বিজেপির বিরুদ্ধে তৈরি হচ্ছে প্রতিবাদ।

আর এই পরিস্থিতিতে একদিকে যেমন জাতীয় স্তরে আবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিরোধীদের প্রধান মুখ পারেন বলে সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, ঠিক তেমনই রাজ্যে এই ঘটনায় তার দলের অস্বস্তি বৃদ্ধি পেলেও, বিরোধীরা যদি এককাট্টা হয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সাথ দেয়, তাহলে তৃণমূল নেত্রী এক্ষেত্রে সর্বভারতীয় স্তরে তার দলকে বিস্তারের অনেক বড় সুযোগ পেয়ে যাবেন বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই বিভিন্ন বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে কখনও রাজ্যপাল, আবার কখনও বা সিবিআইকে আক্রমণ করা হয়েছে। এদিন এই প্রসঙ্গে আরজেডি নেতা মনোজ কুমার  বলেন, “জগদীপ ধনকর পশ্চিমবঙ্গের প্রকৃত বিরোধী দলনেতা। মনে হয়, দিল্লির শাসকেরা পশ্চিমবঙ্গের বিপুল পরাজয় হজম করে উঠতে পারেনি। পশ্চিমবঙ্গে গতকাল সিবিআই যা করেছে, তাতে অবাক হচ্ছি না। কয়েক বছর ধরে মোদি সরকার যা করেছে, তাতে এটাই প্রত্যাশিত ছিল।”

একইভাবে এই ব্যাপারে সমাজবাদী পার্টির নেতা কিরনময় নন্দ বলেন, “পশ্চিমবঙ্গের ভোটে হেরে যাওয়ার পরে বিজেপি চক্রান্ত করছে এবং তারা এটা চালিয়ে যাবে। গতকালের ঘটনা থেকে সেটাই পরিষ্কার।” অন্যদিকে মোদি সরকার সিবিআইকে কাজে লাগিয়ে চক্রান্ত করছে। দেশবাসী কোনোভাবেই এটা মেনে নেবে না বলে মুকুল রায় এবং শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছে শিবসেনা। এই ব্যাপারে শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউত কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছে ভারতীয় জনতা পার্টিকে।

এদিকে দীর্ঘদিন বাংলায় বামেদের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লড়াই করে আসলেও, নারদ কান্ডে তার দলের নেতা, মন্ত্রীরা গ্রেপ্তার হওয়ার পর সেই বামেদের অন্যতম শরিক সিপিআইয়ের পক্ষ থেকে কার্যত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে থাকার বার্তাই দেওয়া হয়েছে। এদিন এই প্রসঙ্গে সিপিআইয়ের সাধারণ সম্পাদক ডি রাজা বলেন, “আমাদের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক মতবিরোধ রয়েছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে এখন যা ঘটছে, তা কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক এবং যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখার প্রশ্ন। এই গ্রেফতারের সময় এবং প্রেক্ষাপট বিচার করে এটাই মনে হচ্ছে, বিজেপির অন্য কোনো উদ্দেশ্য রয়েছে।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

অর্থাৎ নানা বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীদের মন্তব্য থেকে একটা জিনিস পরিষ্কার যে, সিবিআইকে দিয়ে বিজেপি চক্রান্ত করে তৃণমূলের নেতা এবং মন্ত্রীদের গ্রেপ্তার করেছে। এক্ষেত্রে তৃনমূলের পক্ষ থেকে ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মদন মিত্র এবং শোভন চট্টোপাধ্যায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর যে সমস্ত প্রশ্ন তোলা হয়েছিল, সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে সেই একই প্রশ্ন তুলে কার্যত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে দাঁড়াতে দেখা গেছে সকলকে। যা তৃণমূল নেত্রীর কাছে ভবিষ্যতের জন্য বিজেপি বিরোধীতার অন্যতম হাতিয়ার হয়ে দাঁড়াবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

পর্যবেক্ষকদের একাংশ বলছেন, এর ফলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনেকটাই সুবিধে হয়ে গেল। দলের নেতাকর্মীরা গ্রেপ্তার হওয়ার কারণে তিনি যে অস্বস্তিতে পড়েছেন, তা বলাই যায়। এমনকি তার দল ভবিষ্যতে এই ঘটনাকে মোকাবিলা করে কিভাবে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে, তা তৃণমূলের কাছে বড় চ্যালেঞ্জের বিষয়। কিন্তু সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে বিস্তার লাভ করার যে ইচ্ছা তৃণমূলের রয়েছে, তা অতীতের বিভিন্ন কর্মসূচি থেকেই পরিষ্কার।

যেভাবে বিজেপিকে বাংলায় পর্যুদস্ত করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে মুখ হয়ে উঠবে বলে দাবি করছিলেন তৃণমূলের একের পর এক নেতারা, তাতে তৃণমূল নেতাদের গ্রেপ্তারি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেই সুযোগকে অনেকটাই সামনে এনে দিল বলে মনে করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে তৃণমূল নেত্রী যতই হতাশ হোক না কেন, এককথায় ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মদন মিত্রের মত নেতাদের গ্রেপ্তারি তার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড এবং বিস্তার লাভের ক্ষেত্রে যে বড় সুযোগ হয়ে দাঁড়াল, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ।

তবে বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীরা একজোট হয়ে এই ইস্যুতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে দাঁড়ালেও, তাকে কাজে লাগিয়ে তৃণমূল নেত্রী বিজেপির বিড়ম্বনা বৃদ্ধি করতে বা সর্বভারতীয় স্তরে বিস্তার লাভ করতে কোন ফর্মুলা প্রয়োগ করেন, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!