এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > নার্সিংহোমে প্রভাবশালী তৃণমূল নেতার দাদাগিরি! তীব্র ক্ষোভে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বাড়ছে অস্বস্তি?

নার্সিংহোমে প্রভাবশালী তৃণমূল নেতার দাদাগিরি! তীব্র ক্ষোভে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বাড়ছে অস্বস্তি?


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – হই-হট্টগোল করে, কটুক্তি করে, বিল না মিটিয়ে বলপূর্বক মৃতদেহ নিয়ে যাবার অভিযোগ উঠল হুগলি জেলার জনৈক তৃণমূল কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে। গত বুধবার রাতে হুগলি জেলার শ্রীরামপুর বেল্টিং বাজারের নিকটে জিটি রোডের ধারে একটি নার্সিংহোমে শ্রীরামপুরের প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর রাজেশ সাউ বা কুকুয়া নামে এক প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা ব্যাপক হুজ্জুতি চালালেন।

নার্সিংহোম সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার সন্ধ্যায় শ্রীরামপুরের টিনবাজারের বাসিন্দা জনৈক প্রৌঢ়াকে কেমোথেরাপি করানোর উদ্দেশ্যে এই নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়েছিল। কয়েক ঘণ্টা পরে তাঁর মৃত্যু হয়। সেদিন রাত সাড়ে এগারোটায় স্থানীয় প্রাক্তন কাউন্সিলর রাজেশ সাউ তার দলবল সহ অকস্মাৎ সেখানে উপস্থিত হন। নার্সিংহোমের ডিরেক্টর চিকিৎসক অরূপ বন্দ্যোপাধ্যায় এ প্রসঙ্গে জানিয়েছেন যে, প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর রাজেশ সাউ নার্সিংহোমের মহিলাদের নার্সদের প্রতি কুবাক্য ব্যবহার করেন, গালিগালাজ করেন, ভাংচুর চালাবার হুমকি দেন, সেই রোগিণীর চিকিসতাকৃত ডাক্তারকে ফোন করে কটূক্তি করেন।

এরপর নার্সিংহোমের বিল বাকি রেখেই বলপূর্বক মৃতদেহ নিয়ে চলে যান। এ প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, সাম্প্রতিক করোনা পরিস্থিতিকালে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা যেখানে নিজেদের জীবন বিপন্ন করে চিকিৎসার পরিসেবা দিচ্ছেন, তার বিনিময়ে যদি এমন অপমান জোটে তাহলে চিকিৎসার পরিসেবাটাই মুখ থুবড়ে পড়বে।

এরপর নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ সমস্ত বিষয়টি স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বকে জানায়।তারপর গত শুক্রবার নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ শ্রীরামপুর থানায় তৃণমূলের নেতা রাজেশ সাউ ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ অভিযোগ দারের করে। এ প্রসঙ্গে, নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ পুলিশকে জানিয়েছে, পুলিশ যদি এই ঘটনার উপযুক্ত প্রতিকার না করে, তবে তারা নার্সিংহোম বন্ধ করে দিতে বাধ্য হবেন।

এ প্রসঙ্গে চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবীর জানিয়েছেন, প্রাপ্ত অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ এই ঘটনাটির তদন্ত শুরু করেছে। সমস্ত সিসিটিভি ফুটেজ দেখা হবে। সমস্ত বিষয় উপযুক্ত তদন্তের পর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে পুলিশ।

প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলারের হুমকিতে এই নার্সিং হোম যাতে একেবারেই বন্ধ না হয়ে পড়ে, সেজন্য প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ দাবি তুলেছে স্থানীয় বিরোধী নেতৃত্ব। শ্রীরামপুর বিজেপির সাংগঠনিক জেলা সভাপতি শ্যামল বসু এই ঘটনা প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, ” ওই নেতা তৃণমূলের ভাষাতেই কথা বলেছেন। ওঁদের আস্ফালনে নার্সিংহোম চা‌লানো যাবে কি‌না, ভাবতে হচ্ছে। প্রশাসন উপযুক্ত ব্যবস্থা নিক।’’নার্সিংহোম তৃণমূল নেতার দাদাগিরি প্রসঙ্গে স্থানীয় সিপিএম নেতা তীর্থঙ্কর রায় বলেছেন, ‘‘ করোনা পরিস্থিতিতে চিকিৎসার জন্য মানুষকে নাকাল হতে হচ্ছে। চিকিৎসা যাতে বন্ধ না হয়, প্রশাসন নিশ্চিত করুক।’’

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

 

ঘটনাটি নিয়ে যথেষ্ট অস্বস্তিতে পড়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব। যদিও অভিযুক্ত প্রাক্তন কাউন্সিলর রাজেশ সাউ তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগকেই পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, ” ওই মহিলাকে অন্যত্র স্থানান্তরিত করতে আমাদের ছেলেরা অ্যাম্বুল্যান্স নিয়ে গিয়েছিলেন। বিল করার জন্য ওঁদের দাঁড় করিয়ে রেখে এক ঘণ্টা পরে জানানো হয়, উনি মারা গিয়েছেন। এটা শুনে আমি যাই। এক-দেড় মিনিট ছিলাম। নিজের জন্য নয়, সাধারণ মানুষের জন্যই প্রতিবাদ করেছি। শুধু বলেছি, টাকা দেওয়া হবে না।’’

এ বিষয়ে যখন তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল যে, নার্সিংহোম কতৃপক্ষের বিরুদ্ধে তাঁর অভিযোগ থাকলে তিনি এমনটা না করে তো পুলিশ বা মেডিকেল কাউন্সিলের সঙ্গে যোগাযোগ করতেই পারতেন? এর জবাবে তাঁর বক্তব্য, “এটাই ভুল হয়েছে।” এরপূর্বেও বছর তিনেক আগে শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে আলট্রাসনোগ্রাফি বিভাগে উপযুক্ত পরিষেবা না পেয়ে পথ অবরোধ করেছিলেন জনৈক রোগী ও তার পরিবারের সদস্যেরা। অভিযোগ পুলিশের সামনেই তাদের রীতিমতো হুমকি দিয়ে উঠিয়ে দেন এই তৃণমূল নেতা।

নার্সিং হোমে রাজেশ সাউয়ের এই দাদাগিরি প্রসঙ্গে শ্রীরামপুরের বিধায়ক ও চিকিৎসক সুদীপ্ত রায়ের বক্তব্য, ” চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা সমর্থনযোগ্য নয়। কোনও অভিযোগ থাকলে মেডিক্যাল কাউন্সি‌লে জানাতে পারতেন। রাজেশের সঙ্গে কথা বলব।’’ অন্যদিকে এ প্রসঙ্গে হুগলি জেলা তৃণমূল মুখপাত্র প্রবীর ঘোষাল জানিয়েছেন, ” রাজেশ যা করেছেন, ঠিক হয়নি। ওঁকে সেটা বলেছি। আইন মোতাবেক যা করার, পুলিশ করুক।’’

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!