প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – বাগনানের ঘটনায় সম্প্রতি অস্বস্তিতে পড়েছিলেন তৃণমূলের হেভিওয়েট নেতা কুশ বেরা। আর এরপরই সেই তৃণমূল নেতাকে দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয় তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। মূলত বাগনানের এক ছাত্রী খোলা ছাদে শুয়েছিলেন। সেই সময় কুচবিহার নামে ওই তৃণমূল নেতা তারই আরেক সঙ্গীকে নিয়ে সেই ছাত্রীর শ্লীলতাহানির করতে উদ্যত হন বলে অভিযোগ ওঠে। আর এরপরই নীচে থাকা সেই ছাত্রীর মা মেয়ের সম্মান বাঁচাতে এলে তাকে হেনস্থা করা হয়।

আর এর পরেই ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয় সেই মহিলার। এদিকে এই ঘটনার পরেই অভিযুক্ত তৃণমূল নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করে তৃনমূল কংগ্রেস। কিন্তু এবার তৃণমূল যেমন এই ঘটনায় অস্বস্তিতে পড়ল, ঠিক তেমনই অস্বস্তিতে পড়ল প্রশাসন। এবার বাগনানের এই ঘটনায় স্থানীয় থানার আইসির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন নিহতের মেয়ে তথা কলেজ ছাত্রী। এদিন এই প্রসঙ্গে আইসির বিরুদ্ধে সরব হয়ে সেই ছাত্রী বলেন, “বাগনান থানার বড়বাবু আমাকে বলেন, তোমাকে চাকরি দিয়ে দেব। কুড়ি লাখ টাকা দিয়ে দিচ্ছি। তোমাদের কোনো চিন্তার কারন নেই।”

তিনি এদিন আরও বলেন, “তোমরা শান্তিতে থাকো, তোমরা ভালো থাকো। বাবাকেও বলে গেছে, আমার দাদারা ছিল। প্রথম থেকে তারা আমাদের বাড়িতে যাতে না আসে, সেজন্য আমাদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। বলা হচ্ছে, খারাপ স্টেপ নিতে বাধ্য হব। পুলিশ প্রহরা তুলে নেব। আমার ওই দাদা বিজেপি করে। তাছাড়া বাইরে বেরোলেই অনেক টিটকিরি করছে ও হুমকি দিচ্ছে।” কলেজ ছাত্রী আরও অভিযোগ করে যে, যে তৃণমূল নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তার ছেলে নাকি ইতিমধ্যেই হুমকি দিয়েছে যে, তার বাবাকে যখন জেলে যেতে হয়েছে, তখন তারা সবাইকে শেষ করে দেবে।

ইতিমধ্যে এই ব্যাপারে তৃণমূল নেতা কাজল ভৌমিক এবং বিধায়ক রাজা সেন তার বাড়িতে বারবার হুমকি দেওয়ার জন্য লোক পাঠাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন সেই কলেজছাত্রী। শুধু তাই নয়, রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ রায় সেই ছাত্রীর চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। যদিও বা এই ব্যাপারে তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগকে সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করেছেন অরূপ রায়। এদিন তিনি বলেন, “আমি ওই ছাত্রীকে নিয়ে এমন কিছু বলিনি। যা বলেছি, সবই অভিযুক্তকে নিয়ে। যদি কারো বিরুদ্ধে তার কোনো অভিযোগ থাকে, তাহলে তিনি থানায় অভিযোগ করতে পারেন।”

অরূপবাবু আরও বলেন, “থানায় অভিযোগ না নিলে তিনি পুলিশ সুপারের কাছে যেতে পারেন। তিনি অভিযোগ না নিলে আদালতে যেতে পারেন।” বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যেভাবে এই কলেজ ছাত্রী তার মায়ের মৃত্যুর পর তৃণমূল নেতা এবং স্থানীয় থানার ওসির বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেন, তাতে রাজ্য প্রশাসন এবং তৃণমূল কংগ্রেস গোটা ঘটনায় ব্যাপক চাপে পড়ল বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এখন গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, কলেজ ছাত্রীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সঠিক তদন্ত আদৌ হয় কিনা, তার দিকেই নজর থাকবে সকলের।