এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > তৃণমূল বা বিধায়ক নন – সিঙ্গুরের শেষকথা এখন এই হেভিওয়েট নেতা ও বিপুল অর্থের হাতবদল?

তৃণমূল বা বিধায়ক নন – সিঙ্গুরের শেষকথা এখন এই হেভিওয়েট নেতা ও বিপুল অর্থের হাতবদল?


ফের দলের অস্বস্তি বাড়িয়ে পঞ্চায়েত বোর্ড গঠনকে কেন্দ্র করে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠীকোন্দল প্রকাশ্যে আসলো। যে সিঙ্গুরের মাটি থেকে আন্দোলনের পথ বেয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে বসেছেন সেখানেই দলীয় কোন্দলের এমন রূপ সামনে আসায় রাজ্য রাজনীতির অন্দরে তীব্র চর্চা শুরু হল। সিঙ্গুরের বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের যাবতীয় পরিকল্পনায় জল ঢেলে দিলেন হরিপালের বিধায়ক বেচারাম মান্না এবং এই কার্যসিদ্ধির নেপথ্যে বিপুল অর্থের ‘হাতবদলের’ কথাও শোনা যাচ্ছে স্থানীয় মহলে, যা ইতিমধ্যেই কলকাতার বেশ কয়েকটি প্রথিতযশা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত।

গত বুধবারই ধনেখালিতে দলীয় সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল সিঙ্গুর গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিতে প্রধান, উপপ্রধান পদে কাদের বসানো হবে। এ নিয়ে কোনো ভোটাভুটি করা হবে না – এমনটাই স্থির করা হয়েছিল। কিন্তু সে সিদ্ধান্তের দুদিন কাটতে না কাটতেই পাঁচটি গ্রাম পঞ্চায়েতে দলের সদস্যরা ভোটাভুটি করেন এবং দলীয় নেতৃত্বের ঠিক করা প্রধান-উপপ্রধানের বদল ঘটানো হয়। রাজনৈতিক সূত্রের খবর থেকে জানা গিয়েছে, সিঙ্গুর ২ নম্বর পঞ্চায়েতে তৃণমূলের জয়ী বিজলি ঘোষ ছিলেন পঞ্চায়েত প্রধান পদপ্রার্থী। কিন্তু ভোটাভুটিতে প্রধান প্রার্থীরা জায়গা ছিনিয়ে নেন বেচারাম মান্নার অনুগামী হিসাবে পরিচিত নির্দল জবা কর্মকার।

এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য্য অনুগামী পাঁচজন সদস্যপদ ছাড়তে চেয়ে দলীয় নেতৃত্বকে চিঠি দেন। যা নিয়ে বেচারামবাবুর নাম না করেই রবীন্দ্রনাথবাবু দাবী করেন, মোটা টাকা ঘুষ দিয়ে মির্জাপুরে সিপিএম, বিজেপি ও নির্দলকে কিনে নেওয়া হয়েছে। প্রায় প্রতিটি পঞ্চায়েতেই রবীন্দ্রনাথবাবুর অনুগামীদের দল প্রধান বা উপপ্রধান হিসাবে ঠিক করে দিলেও, বাস্তবে দেখা গেছে সেই পদ চলে গেছে বেচারামবাবুর অনুগামীদের হাতে। যদিও, এ মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বেচারামবাবু জানান, অনেকেই জমি আন্দোলনের বিরোধিতা করলেও সিপিএমের ন্যানো বাঁচাও কমিটির সঙ্গে সম্পর্ক রেখে দলের একাংশকে দামি উপহার দিয়ে প্রধান উপপ্রধানের পদ পাওয়ার সুযোগ খুঁজছিলেন। কিন্তু ভোটাভুটির মাধ্যমে দলের প্রকৃত কর্মীরা তার যোগ্য জবাব দিয়েছেন – এতে আমার কোনও ভূমিকা নেই।

আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে

এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে

উল্লেখ্য, রবীন্দ্রনাথবাবুর বিধানসভা এলাকার অন্তর্গত মির্জাপুর-বাঁকিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে বিজেপি এবং সিপিএমের হাত ধরেই বোর্ড গঠন করেছে তৃণমূল। মোট ১৫ টি আসনের মধ্য ১১ টি তৃণমূল, ২ টি সিপিএম, ১ টি বিজেপি ও ১ টি আসনে নির্দলের দখলে আসে। কিন্তু অভিযোগ ওঠে, তৃণমূলের একাংশ সিপিএম ও বিজেপি সদস্যদের সমর্থন নিয়ে নিয়ে বোর্ড গড়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেতার কথায়, সিপিএমের সঙ্গে জোট বেঁধে বেচারামবাবু হারিয়ে দিলেন ‘মাস্টারমশাইকে’ আর তার পিছনে কি খেলা আছে তা এখানে সবাই জানে।

আর তৃণমূলকে হারাতে – তৃণমূলের সঙ্গে সিপিএমের এই জোটকে মেনে নিতে না পেরে দলীয় সদস্যপদ ত্যাগ করার আর্জি জানান রবীন্দ্রনাথবাবুর অনুগামী বলে পরিচিত ৫ জন তৃণমূল সদস্য। এমনকি, ভিতরে বোর্ড গঠনের সময়ে বিদ্রোহী সদস্যরা বাইরে ভোট বয়কটের জন্য স্লোগান দিতে থাকেন। বোর্ড গঠন নিয়ে নিজের ক্ষোভের কারণ উল্লেখ করে রাজ্য নেতৃত্বকে বিষয়টি জানিয়েছেন রবীন্দ্রনাথবাবু নিজেও বলে সূত্রের খবর। তাঁর ঠিক করা পদপ্রার্থীর তালিকাটি দলের জেলা সভাপতি তপন দাশগুপ্ত ও দুই যুগ্ম কার্যকারী সদস্য অসীমা পাত্র ও প্রবীর ঘোষালের সাক্ষর সহ রাজ্য নেতৃত্বের কাছে পাঠিয়ে দেন। যদিও এ ব্যাপারে এখনো কোনো নির্দেশ আসেনি দলের শীর্ষনেতৃত্ত্বের। আর তাই সিঙ্গুরের বুকে কান পাতলে এখন শোনা যাচ্ছে – তৃণমূল কংগ্রেস দল বা স্থানীয় বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য নন – সিঙ্গুরের শেষকথা এখন বেচারাম মান্নার গোষ্ঠীই।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!