এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > অর্থদপ্তরের অনুমোদন না থাকলেও ঢালাও নিয়োগ শিলিগুড়ি পুরসভায় – বাড়ছে জল্পনা

অর্থদপ্তরের অনুমোদন না থাকলেও ঢালাও নিয়োগ শিলিগুড়ি পুরসভায় – বাড়ছে জল্পনা

অর্থ দপ্তরের অনুমোদন ছাড়াই বেআইনিভাবে পুরসভায় অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ করে বিতর্কের মুখে পড়লেন শিলিগুড়ির মেয়র তথা সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য। তৃণমূলের তরফ থেকে অভিযোগে জানানো হয়েছে, পুরসভার কোষাগারের দৈন্যদশা – অথচ অর্থহীনভাবে একের পর এক লোক নিয়োগ করে যাচ্ছেন অশোকবাবু। কর্মী নিয়োগ করা হলেও তাঁরা কোথায় কিসের ভ্যাকান্সিতে নিযুক্ত হলেন সে সম্পর্কে পরিষ্কারভাবে কিছু জানানো হচ্ছে না।

প্রসঙ্গত, শিলিগুড়ি পুরসভা বামেদের দখলে আসার পর গত আড়াই বছরে ম্যান্ডেজ, অস্থায়ী কর্মী, ডেটা এন্ট্রি অপারেটর, অফিস অ্যাসিস্ট্যান্ট এমন নানা নাম দিয়ে প্রায় ৩৫০ জন লোক নিয়োগ করা হয়েছে বলেই দাবী বিরোধীদের। এছাড়া বিগত তিন মাসে আরো ১৬৯ জন অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে। নবনিযুক্ত কর্মীদের কারো দৈনিক হাজিরা ১৫৯ টাকা, কারো আবার ২০০ টাকা, কারো ২৫০ টাকা। এভাবে বিভিন্ন রেটে বেআইনিভাবে পুরসভায় লোকনিযুক্ত করা হয়েছে বলেই মেয়রের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলল তৃণমূল।

তবে এ অভিযোগ মানতে নারাজ শিলিগুড়ির মেয়র অশোর ভট্টাচার্য। গোটা বিষয়টি যে বেআইনিভাবে হচ্ছে, বিরোধীদের এ অভিযোগ পুরোপুরি খন্ডন করলেন তিনি। তিনি বললেন, “পুরসভায় যা লোক থাকার কথা তার চেয়ে অনেক লোক কম আছে। আরও লোকের প্রয়োজন। তবে পশ্চিমবঙ্গে কোন পুরসভা অর্থ দপ্তরের অনুমোদন নিয়ে অস্থায়ী লোক নিয়োগ করে? দু’একটি পুরসভা কেউ দেখাতে পারবে? যারা অর্থ দপ্তরের অনুমোদন নিয়ে অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ করেছে। বিরোধীরা অভিযোগ করার তাই করছে”।

রাজ্য সরকারের বঞ্চনার কারণে পুরসভা চরম অর্থসংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। এই অভিযোগ শিলিগুড়ির মেয়রের গলায় বহুবার শোনা গিয়েছে। সেক্ষেত্রে বাড়তি বেতন কোথা থেকে দেবেন এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে মেয়র জানান, পুরসভায় নিজস্ব ফান্ড থেকে প্রায় দেড় দু’হাজার অস্থায়ী কর্মীদের দীর্ঘদিন ধরেই বেতন দেওয়া হচ্ছে। এই টাকা পুরসভার উচ্চপদস্থ কর্মচারীদের কর থেকেই আদায় হয়। তবে গত কয়েকমাস ধরে এই কর কম আদায় হলেও অস্থায়ী কর্মীদের বেতন ঠিকঠাকই দেওয়া হয়েছে বলে জানালেন তিনি।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

অন্যদিকে, পুরসভার বিরোধী দলনেতা রঞ্জন সরকারের দাবী, অশোকবাবুর হটকারী সিদ্ধান্তের জন্যে শিলিগুড়ি পুরসভা দেউলিয়া হতে বসেছে। প্রতিমাসেই তিনি ম্যান্ডেজ, ক্যাজুয়াল লোক নিয়োগ করে যাচ্ছেন। পুরসভার এক একটি বিভাগের সামনে বিনা প্রয়োজনে ১০ জন করে লাইন দিয়ে থাকেন। এর জেরে পুরসভায় চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হচ্ছে বলেও অভিযোগ তোলেন তিনি। পাশাপাশি আরোও জানান, কোথায় কত কর্মী নিয়োগ হচ্ছে সে সম্পর্কে স্পষ্ট কোনো তথ্য দেন না মেয়র।

এটাকে পুরোপুরি বেআইনি বলেই দাবী করলেন তিনি। আরো জানালেন, তৃণমূল পুরসভার ক্ষমতায় এলে কখনোই এতো বেনিয়ম বরদাস্ত করা হবে না। একই সুরে অভিযোগ তুললেন বিরোধী দলের কাউন্সিলর নান্টু পালও। জানালেন, ওয়ার্ডগুলোতে কাজের লোক পাওয়া যাচ্ছে না অথচ পুরসভায় লোকের ভীড়! কোন কাজের জন্য কাকে নেওয়া হয়েছে কেউই পরিস্কারভাবে বলতে পারছে না। বোর্ড মিটিংয়ে বারবার এই অস্বাস্থী কর্মী নিয়োগের ব্যাপারে মেয়রের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে।

নান্টুবাবুর আরও অভিযোগ, কিন্তু কোনো তথ্যই মেয়র সঠিকভাবে দেননি। সবমিলিয়ে, এই অস্থায়ী কর্মী নিয়োগকে কেন্দ্র করে শিলিগুড়ি পুরসভায় টালমাটাল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বর্তমানে। পুরসভার ক্ষমতায় যেহেতু বামেরা রয়েছে তাই তৃণমূল এ ব্যাপারে বেশি সরব হয়েছে বিরোধীদের ভাবমূর্তি নষ্ট করার স্বার্থে, এমনটাই অভিমত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। অন্যদিকে, স্থানীয় অধিবাসীদের মতামত – বহু চেষ্টা করেও এই পুরবোর্ড নিজেদের দখলে আনতে পারে নি শাসকদল। আর তাই, লোকসভার আগে এই নিয়ে জল্পনা ছড়িয়ে রাজনৈতিকভাবে বামেদের কোন ঠেসা করার চেষ্টায় আছে শাসকদল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!