এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > মালদা-মুর্শিদাবাদ-বীরভূম > এবার অনুব্রত মন্ডলের লোকের বাড়ির পাঁচিল-ছাদ তত্ত্ব নিয়ে তীব্র বিতর্ক শুরু জেলার রাজনীতিতে

এবার অনুব্রত মন্ডলের লোকের বাড়ির পাঁচিল-ছাদ তত্ত্ব নিয়ে তীব্র বিতর্ক শুরু জেলার রাজনীতিতে


লোকসভা ভোটের মুখে দলীয় কর্মীদের চাঙ্গা করতে ফের বিতর্কিত মন্তব্যে জড়ালেন বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। মুরারইয়ের কর্মী সম্মেলনে যোগ দিয়ে দলীয় কর্মীদের উদ্দেশ্য করে বলেই দিলেন, ‘কার পাঁচিলে উঠবি না কার ছাদে, আমার দেখার দরকার নাই। আমার লিড চাই।’ তবে নির্বাচন কমিশনের কোপ থেকে বাঁচতে এদিন আবার নিজের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিলেন তিনি নিজেই। ঘুরিয়ে বললেন, ‘কর্মীদের লোকের বাড়ির পাঁচিল, ছাদে উঠতে বলেছি। ছাদে-দেওয়ালে উঠে কর্মীরা দলের পতাকা টাঙাবে, এই আর কি!’

তবে অনুব্রতবাবু যতোই বিতর্ক এড়াতে নিজের বক্তব্যের সাফাই দিক না কেন, আসলে যে তিনি গত পঞ্চায়েত ভোটের মতো যে কোনো ভাবেই ভোট হাসিলের হুঁসিয়ারী দিলেন এবং এর জন্যে যে তৃণমূল বিরোধীদের বাড়ি ঢুকতেও দুবার ভাববে না সেটাও ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দিলেন বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁর এই বিতর্কিত মন্তব্য স্বাভাবিকভাবেই প্রতিবারের মতো এবারও শোরগোল ফেলে দিয়েছে রাজনৈতিকমহলে। তিনি অনুব্রত মণ্ডল – তৃণমূলের দোর্দণ্ডপ্রতাপশালী নেতা। তাঁর দাপুটে মেজাজের জন্যেই বীরভূম রাজনীতি সচেতন মানুষের কাছে ‘অনুব্রত গড়’ হিসাবেই বেশি পরিচিতি।

বিরোধীদের ঠান্ডা করতে পাচন তত্ত্ব দিতে যেমন তিনি দুবার ভাবেন না, তেমনি গুড়বাতাসা এবং মশারি টাঙানোর ফর্মুলা দিয়েও বিরোধীদের কোনঠাসা করতে তাঁর জুড়ি মেলা ভার। প্রতিবারই নির্বাচনের আগে বিরোধীদের উদ্দেশ্য করে তাঁর হুঁসিয়ারী বিতর্কের ঝড় তুলে দেয়। তাঁর ভোকাল টনিকে প্রতিবারই চাঙ্গা হয়ে ওঠে দলীয় কর্মীরা। আর বিরোধীদের কড়া ভাষায় তোপ দাগতে তিনি সিদ্ধহস্ত। তাই লোকসভা ভোটের নির্ঘন্ট ঘোষণার দিন কয়েক আগে বিরোধীদের কোনঠাসা করার নতুন তত্ত্বকে কিছুতেই সহজভাবে নিচ্ছে না রাজনৈতিক মহল।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

তাঁদের মতে, এটা বলে বিরোধীদের বাড়ি ঢুকে এককথায় হুমকি দিতে কর্মীদের উৎসাহিত করছেন অনুব্রতবাবু। ভোটের আগে পতাকা টাঙানো খুবই সাধারণ বিষয় নীচুতলার কর্মীদের কাছে। তাই এই কাজের জন্যে তাঁদের নির্দেশ দেওয়া শুধুমাত্র লোক দেখানো। আসলে এর আড়ালে রয়েছে বাড়ির পাঁচিল টপকে ভোটারদের কাছে পৌছানোর তত্ত্ব, এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। একই অভিযোগ বিরোধীদেরও। এ প্রসঙ্গে অনুব্রতবাবুর কড়া সমালোচনা করেছেন বিজেপির জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায়।

এদিন তিনি বলেন, ‘বিনা অনুমতিতে বাড়ির পাঁচিলে বা ছাদে কারা ওঠে? হয় দুশ্চরিত্র, না হলে দুষ্কৃতী। অবশ্য এরা ছাড়া তৃণমূলে আছে কে? এই সব বলে বিরোধীদের ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু, বিজেপিকে ভয় দেখানো যাবে না। না বলে পাঁচিলে বা বাড়ির ছাদের উঠলে মানুষ ছেড়ে কথা বলবে না।’ একই বক্তব্য বামেদেরও। সিপিএম জেলা সম্পাদক মনসা হাঁসদা বলেন, অনুব্রতবাবু এসব বলতেই বেশি ভালোবাসেন। দিন কয়েকআগেই ভোট চুরির কথা বলেছিলেন। আসলে তৃণমূলের নীচুতলায় সংগঠন আলগা হচ্ছে বুঝতে পেরেই কর্মীদের মনোবল বাড়াতে এসব বলেছেন।

এতে লাভের লাভ হবে না কিছু বলেই দাবী করলেন মানসবাবু। লোকসভা ভোটের আগে অনুব্রত মণ্ডলের এসব টোটকা কাজে আসবে না বলেই মনে করছেন তিনি। এখন দেখার দলের কর্মীদের উজ্জীবিত করতে অনুব্রত মণ্ডল আদৌ সফল হয়েছেন কিনা। লোকসভা ভোটেই মিলবে তার সঠিক প্রমাণ। তবে, গেরুয়া শিবিরের স্পষ্ট দাবি – খেলা ঘুড়ে গেছে, পঞ্চায়েত ভোটে অনেক সন্ত্রাস করেও কিছু জায়গায় ভোট আটকাতে পারে নি তৃণমূলের উন্নয়ন বাহিনী। তাই লোকসভা ভোটের আগে এইভাবে ভোট চুরি করতে গেলে মানুষই তার কড়া জবাব দেবেন।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!