এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > ২.৮০ নয় ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর ২.৫৭-ই, আসলে বেতন কমাচ্ছে সরকার! পে-কমিশন নিয়ে বিস্ফোরক দাবি!

২.৮০ নয় ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর ২.৫৭-ই, আসলে বেতন কমাচ্ছে সরকার! পে-কমিশন নিয়ে বিস্ফোরক দাবি!

প্রিয় বন্ধু মিডিয়া এক্সক্লুসিভ – গত ১৩ ই সেপ্টেম্বর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এক দলীয় সম্মেলনে ঘোষণা করেন, তাঁর কাছে পে-কমিশনের রিপোর্ট জমা পরে গেছে আর তিনি পে-কমিশনের সমস্ত সুপারিশ মেনে নিচ্ছেন। আর সেদিনই তিনি জানিয়ে দেন যে ২৩ শে সেপ্টেম্বর মন্ত্রীসভার বৈঠক ডেকে তিনি সেই সুপারিশে অনুমোদন দেবেন। নিজের দেওয়া কথামত গতকালই সেই মন্ত্রীসভার অনুমোদন পেয়ে যায় রাজ্যের ষষ্ঠ পে-কমিশন। আর তারপরেই এক সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র ঘোষণা করেন সে কথা।

সেখানে তিনি স্পষ্ট জানান, পে-কমিশন সুপারিশ করেছিল ২.৫৭ ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর দেওয়ার, কিন্তু রাজ্য সরকার তা ২.৮০ দিচ্ছে। অর্থাৎ ১০০ টাকার বেতন বেড়ে হচ্ছে ২৮০.৯০ টাকা। স্বাভাবিকভাবেই, অর্থমন্ত্রীর দেওয়া হিসেবকে হাতিয়ার করে তৃণমূল পন্থী সরকারি কর্মচারীরা সোশ্যাল মিডিয়ায় দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জয়ধ্বনির ঝড় তুলে দেন। কিন্তু, সরকারি কর্মচারীদের একাংশ – এই ঘোষণার মধ্যে একাধিক অসত্য দেখছেন। আর তার জেরে রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা কি চূড়ান্ত ভাবে বঞ্চিত হচ্ছেন তা তুলে ধরছেন।

এই প্রসঙ্গে সরকারি কর্মচারী পরিষদের রাজ্য আহ্বায়ক দেবাশীষ শীলের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, রাজ্য অতি-সুচতুরভাবে প্রচার করছে যে নতুন পে-কমিশনে কর্মচারীদের বেতনবৃদ্ধি আড়াই গুনের কাছাকাছি সুপারিশ করা হয়েছিল। আর কর্মচারী ‘দরদী’ সরকার তার উপরে আরও দিয়ে তা প্রায় তিন গুনের কাছাকাছি করল! কিন্তু, এই তথ্য দেওয়ার সময় বেশ কিছু অসত্যের আশ্রয় নেওয়া হল। প্রথমত, কর্মচারীদের বেতনের দুটি মূল অংশ থাকে – বেসিক ও ডিএ। নিয়ম অনুযায়ী এই ডিএ ১০ বছরে ১২৫% দিতে হয়, আর তারপরেই এই ডিএকে বেসিকের সঙ্গে মিশিয়ে দিয়ে নতুন পে-কমিশন ঘোষিত হয়।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

দেবাশীষবাবুর কথায়, অর্থাৎ রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বেসিক ১০০ টাকা ছিল আর তার সঙ্গে ডিএ ছিল ১২৫ টাকা। অর্থাৎ, মূল বেতন ছিল ২২৫ টাকা, সেখান থেকে ২.৫৭ ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর দিয়ে বাড়িয়ে করা হয়েছে ২৫৭ টাকা। অর্থাৎ বেতন বেড়েছে ২২৫ টাকা থেকে ২৫৭ টাকা – অর্থাৎ পে-কমিশন আড়াই গুণ বেতন বৃদ্ধির সুপারিশ করে নি, করেছে মাত্র ১৪.২২% বেতন বৃদ্ধির সুপারিশ। আর সরকার সেই সুপারিশকেই মান্যতা দিয়েছে। অসত্যভাবে যে তুলে ধরা হচ্ছে, রাজ্য সরকার ২.৮০ ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর দিয়েছে, তা আমার পরের কথা শুনলেই বুঝতে পারবেন।

দেবাশীষবাবু বলেন, রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা প্রত্যেক বছর জুলাই মাসে ইনক্রিমেন্ট পান। আর ষষ্ঠ পে-কমিশনের মেয়াদ শুরু হচ্ছে ১ লা জানুয়ারী ২০১৬ থেকে। তাহলে সেই হিসাবে ২০২০-এর ১ লা জানুয়ারী পর্যন্ত আমাদের ৪ টি ইনক্রিমেন্ট পাওয়ার কথা। আমি ধরে নিলাম প্রতি বছর সরকার ৩% করে ইনক্রিমেন্ট দিয়েছে – তাহলে কি দাঁড়াচ্ছে?
১ লা জুলাই, ২০১৬ – ২৬৪.৭১ (২৫৭-.০০ এর উপর ৩% ধরে)
১ লা জুলাই, ২০১৭ – ২৭২.৬৫ (২৬৪.৭১ এর উপর ৩% ধরে)
১ লা জুলাই, ২০১৮ – ২৮০.৮৩ (২৭২.৬৫ এর উপর ৩% ধরে)
১ লা জুলাই, ২০১৯ – ২৮৯.২৬ (২৮০.৮৩ এর উপর ৩% ধরে)

দেবাশীষবাবুর বক্তব্য, অর্থাৎ রাজ্য সরকার যে ২.৮০ ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর এর যে গল্প শোনাচ্ছে দেখা যাচ্ছে, সেটা ওই ৩% ইনক্রিমেন্ট ধরে ২০১৮ সালের বেতন! আর, সেই অনুযায়ী ২০২০ এর জানুয়ারী তে বেতন হওয়া উচিত ২৮৯.২৬। কিন্তু সরকার তো সেটা দিচ্ছে না! অর্থাৎ ১ বছরের ইনক্রিমেন্ট ‘ভ্যানিশ’! এবার তাহলে বুঝে দেখুন বঞ্চনা কোন পর্যায়ে হয়েছে – আর ঢাকঢোল পিটিয়ে কি প্রচার করা হচ্ছে! ২.৮ ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর, গ্র্যাচুইটি বাড়ানো – এসব গালগল্প বাদ দিন! মোদ্দা কথা হল – এই সরকার এরিয়ার, ডিএ, ১ বছরের ইনক্রিমেন্ট দিচ্ছে না! আর ১৪.২২% বেতন বাড়াচ্ছে – যারফলে সরকারি কর্মীরা মাস গেলে ২-৪ হাজার টাকা বেশি হাতে পাবেন! অর্থাৎ, রাজ্য সরকার সরকারি কর্মীদের হাতে ‘ললিপপ’ ছাড়া আর কিছুই দিল না!

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!