করোনার জেরে পুর নিয়মে আসতে চলেছে বড়সড় পরিবর্তন? ভোট না হলেও অতিরিক্ত সময় কাউন্সিলারদের? কলকাতা রাজ্য April 27, 2020 করোনা ভাইরাস যদি বাংলায় প্রবেশ না করত, তাহলে এতদিন পৌরসভা নির্বাচন প্রত্যক্ষ করত বঙ্গবাসী। কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারণে সেই সমস্ত নির্বাচন বিশবাঁও জলে চলে গেছে। ইতিমধ্যেই কলকাতা পৌরসভার বর্তমান বোর্ডের মেয়াদ প্রায় শেষের মুখে। তাই এই পরিস্থিতিতে সেই বর্তমান বোর্ডের মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ানোর জন্য সংবিধান বিশেষজ্ঞদের কাছে মতামত চাইতে শুরু করল রাজ্য সরকার। আর যদি এই অসম্ভব কাজটি সম্ভব করা যায়, তাহলে বর্তমান কলকাতা পৌরসভার বোর্ডে তৃনমূল যেমন আরও 6 মাস বেশি ক্ষমতায় থাকবে, ঠিক তেমনই বিরোধী দলের কাউন্সিলরদের পদও থাকবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রসঙ্গত, আগামী 7 মে কলকাতা পৌরসভার বর্তমান বোর্ডের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। সমস্ত কিছু ঠিকঠাক থাকলে গত 19 এপ্রিল কোলকাতা এবং হাওড়া পৌরসভা ভোট পর্ব সম্পন্ন হত। কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারণে তা কবে হবে, জানেন না কেউ। তাই এই পরিস্থিতিতে একদিকে করোনা ভাইরাসের সংকট এবং অন্যদিকে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াতে এখন যদি বোর্ডের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়, তাহলে শুধুমাত্র প্রশাসকের ওপর নির্ভর করে কিভাবে পৌরসভা চলবে, তা নিয়ে সংশয়ে রাজ্য। আর তাই বোর্ডের মেয়াদ বাড়িয়ে আরো 6 মাস করতে চাইছে রাজ্য সরকার। কিন্তু এই বোর্ডের মেয়াদ যদি বৃদ্ধি করতে হয়, তাহলে মেয়াদ শেষের দিন অর্থাৎ আগামী 7 মে রাত্রিবেলার মধ্যে রাজ্যপালের সম্মতি নিয়ে অর্ডিন্যান্স জারি করা বাধ্যতামূলক। আর এখানেই তৈরি হয়েছে সংশয়। যেভাবে করোনা ভাইরাসের মোকাবিলা নিয়ে রাজ্য এবং রাজ্যপালের সংঘাত প্রকাশ্যে এসেছে, তাতে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে যদি পৌরসভার মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তাতে আদৌ রাজ্যপাল সায় দেবেন কিনা, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে প্রশ্ন। তবে যেভাবে করোনা ভাইরাস ভয়াবহ আকার ধারণ করছে, তাতে রাজ্য সরকারের এই বক্তব্যে যদি রাজ্যপাল সায় না দেন, তাহলে তার আচরণ নিয়ে তৃণমূলের পক্ষ থেকে প্রশ্ন করা হবে। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - শুধুমাত্র প্রশাসক বসিয়ে গোটা পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাবে কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলবে রাজ্যের শাসক দল। যার ফলে চাপে পড়তে পারে রাজভবন। তাই সবদিক বিবেচনা করে রাজ্য সরকারের এই প্রস্তাবকে সায় দিতে পারেন রাজ্যপাল বলে মনে করছে একাংশ। যদিও বা শেষ পর্যন্ত এই ব্যাপারে জগদীপ ধনকর কি সিদ্ধান্ত নেন, তা সময় বলবে। তবে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজ্যের শাসকদলের ক্ষমতায় তৃণমূল রয়েছে এবং কলকাতা পৌরসভাও যেহেতু তাদের দখলে রয়েছে, তাই তারা কোনোভাবেই করোনা ভাইরাসের মত এই পরিস্থিতিতে কোনো সুযোগকে হাতছাড়া করতে নারাজ। বর্তমান সময়ে বোর্ডের মেয়াদ বাড়িয়ে পৌরসভার ক্ষমতা নিজেদের দখলে রেখে মানুষের কাছে আরও পৌঁছে গিয়ে ভবিষ্যতের নির্বাচনের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করে নিতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস। তাই রাজ্য সরকার এখন থেকেই সেই বোর্ডের মেয়াদ আরও ছয় মাস বৃদ্ধির জন্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। কি ভাবছেন তারা? এদিন এই প্রসঙ্গে পৌরসভার নানা ধারা-উপধারার উল্লেখ করে মুখ খোলেন কলকাতা পৌরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, “নগরপালিকা আইন চালুর পর রাজ্যের অন্য পৌরসভায় প্রশাসক বসানোর স্পষ্ট নির্দেশ ও আইন আছে। কিন্তু কলকাতা কর্পোরেশনের প্রশাসক বসানো নিয়ে তেমন কোনো গাইডলাইন পাওয়া যাচ্ছে না। তাই করোনা মোকাবিলার কথা মাথায় রেখে বোর্ডের মেয়াদ বৃদ্ধি নিয়ে রাজ্য সরকারের আইন বিভাগের বিশেষজ্ঞদের মতামত জানতে চেয়েছি। নির্দিষ্ট দিনে সমস্ত পৌরসভার বোর্ডের মেয়াদ শেষ হতেই প্রশাসক বসবেন। সেক্ষেত্রে কোনো আইনগত সমস্যা নেই। উন্নয়নও থামবে না।” তবে শেষ পর্যন্ত গোটা বিষয়টি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, বিরোধীদের পক্ষ থেকে এই ব্যাপারে কি বক্তব্য আসে এবং রাজ্যপালই বা কি বলেন, তার দিকেই নজর থাকবে সকলের। তার থেকেও বড় কথা কলকাতা পৌরসভায় যদি এইভাবে মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয় – তাহলে সেই উদাহরণকে সামনে রেখে কি রাজ্যের অন্যান্য পুরসভার মেয়াদও বৃদ্ধি করা হবে। কেননা করোনার সময়ে স্থানীয় প্রশাসনের ভূমিকাই কিন্তু সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ। সবমিলিয়ে পুরসভা নিয়ে নতুন জল্পনা শুরু হল বঙ্গ রাজনীতিতে। আপনার মতামত জানান -