প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – তিনি কাজের মানুষ। নিজের বক্তব্য অবশ্য একাধিকবার সেকথা তুলে ধরতে দেখা গেছে শুভেন্দু অধিকারীকে। দলের সঙ্গে যখন তিনি দূরত্ব পালন করছেন, তখন বেশ কিছু প্রশাসনিক কাজকর্মে যুক্ত থাকতে দেখা গেছে তাকে। তবে এবার জল্পনা বাড়িয়ে রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুপস্থিত থাকলেন রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী। স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনায় নতুন করে জল্পনা তৈরি হয়েছে তৃনমূল কংগ্রেসের অন্দরমহল এবং রাজ্য প্রশাসনের অন্দরমহলে।

সূত্রের খবর, বুধবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে সকল মন্ত্রীরা উপস্থিত থাকলেও, অনুপস্থিত ছিলেন চারজন সদস্য। যার মধ্যে অন্যতম শুভেন্দু অধিকারী, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, গৌতম দেব এবং রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। জানা যায়, গৌতমবাবু করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। অন্যদিকে রবীন্দ্রনাথবাবুর শারীরিক অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। তাই এই দুই হেভিওয়েট মন্ত্রী এদিনের বৈঠকে উপস্থিত হতে পারেননি। তবে শুভেন্দু অধিকারী এবং রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপস্থিতি ক্রমশ চিন্তা বাড়াচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেসের।

যেভাবে দলের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হতে দেখা গেছে শুভেন্দুবাবুর, তাতে বিভিন্ন অরাজনৈতিক সভা থেকেও তিনি দাবি করেছিলেন, তিনি মানুষের লোক। মানুষের জন্য কাজ করবেন। কিন্তু রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে যেখানে মানুষের জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, সেখানে শুভেন্দুবাবু মন্ত্রী থাকা সত্ত্বেও কেন সেই বৈঠকে উপস্থিত হলেন, এখন তা নিয়ে নানা মহলে উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন। অনেকে আবার বলছেন, শুভেন্দুবাবু নিজের টিম তৈরি করতে শুরু করে দিয়েছেন।

আর তাই তার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ রাজ্যের মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় সেই শুভেন্দুবাবুর দেখানো পথেই হেটে রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুপস্থিত থাকলেন। আর এর ফলেই রাজ্য রাজনীতিতে নতুন করে জল্পনা তৈরি করতে শুরু করেছে। অনেকে বলছেন, এত দিন উইকেটে পড়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। এবার খেলা ঘোরাতে শুরু করলেন তিনি। দলের সঙ্গে দূরত্ব বৃদ্ধি সকলের কাছে পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল। তবে এবার আর উইকেটে পড়ে না থেকে প্রশাসনিক বৈঠকে অনুপস্থিত থেকে তিনি তার বিদ্রোহী মনোভাবকে আরও তীব্র করে দিলেন বলেই দাবি বিশেষজ্ঞদের।

বস্তুত, প্রায় দীর্ঘদিন ধরেই শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে গুঞ্জন বাড়তে শুরু করেছিল। বিভিন্ন জায়গায় তার সমর্থনে পোস্টার পড়লেও, সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি বা তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতীক দেখা যায়নি। তবে এই সমস্ত কিছুই রাজনৈতিক বিষয় ছিল। কিন্তু এদিনের মন্ত্রিসভার বৈঠকে শুভেন্দু অধিকারী উপস্থিত থাকেন কিনা, তার দিকে নজর ছিল গোটা রাজনৈতিক মহলের। তবে এবার সেই বৈঠকেও অনুপস্থিত থেকে শুভেন্দু অধিকারী দল এবং প্রশাসনের সঙ্গে নিজের দূরত্বকে আরও তীব্র করলেন বলেই দাবি বিশেষজ্ঞদের।

অনেকে বলছেন, শুভেন্দুবাবু রাজ্যের মন্ত্রী থাকলেও, এতদিন নানা অরাজনৈতিক সভায় উপস্থিত হয়েও তিনি নিজের পদ ব্যবহার করেননি। যার ফলে জল্পনা ক্রমশ বৃদ্ধি পেয়েছিল। আর এবার সরাসরি প্রশাসনিক বৈঠক অনুপস্থিত থেকে তিনি কি তাঁর বিদ্রোহী মনোভাবকে আরও তীব্র করে ফেললেন! কি করতে চলেছেন শুভেন্দুবাবু! প্রশাসনিক বৈঠকে তার অনুপস্থিতির পর এখন সেটাই বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে বাংলার রাজনৈতিক মহলে।