এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > প্রশাসকের চেয়ারে বসেই তৃণমূলের প্রতি “নরম” অশোক ভট্টাচার্য! জল্পনা বাড়ছে রাজ্য রাজনীতিতে

প্রশাসকের চেয়ারে বসেই তৃণমূলের প্রতি “নরম” অশোক ভট্টাচার্য! জল্পনা বাড়ছে রাজ্য রাজনীতিতে


যদি করোনা ভাইরাসের প্রকোপ দেখা না দিত, তাহলে এতদিনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হত শিলিগুড়ি পৌরসভার। তবে করোনা ভাইরাসের কারণে মেয়াদোত্তীর্ণ পৌরসভাগুলো নির্বাচন করা সম্ভব হচ্ছে না। যার ফলে বিরোধী হোক বা শাসক, প্রায় প্রতিটি মেয়াদোত্তীর্ণ পৌরসভাগুলোতেই সেখানকার প্রাক্তন চেয়ারম্যান এবং মেয়রদের প্রশাসক করে দিচ্ছে রাজ্য সরকার। এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম নয় শিলিগুড়ি পৌরসভাও। বিরোধীদের দখলে থাকা এই পৌরসভায় রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করে প্রশাসক করা হয়েছে সিপিএম নেতা তথা বিদায়ী মেয়র অশোক ভট্টাচার্যকে।

তবে আশ্চর্যজনকভাবে অশোকবাবু রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তিতে শিলিগুড়ি পৌরসভার প্রশাসক হওয়ার পর, সেভাবে আর তৃণমূলের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানাচ্ছেন না বলে বিভিন্ন মহলে জল্পনা তৈরি হতে শুরু করেছে। শিলিগুড়ি পৌরসভার মেয়র পদে থাকার সময়ে বিরোধী দল তৃণমূলের পক্ষ থেকে তাকে কটাক্ষ করা হলে, তার পাল্টা জবাব দিয়ে তৃণমূলকে আক্রমণ করতেন অশোক ভট্টাচার্য। কিন্তু বর্তমানে মেয়াদোত্তীর্ণ পৌরসভায় প্রশাসক পদে পাওয়ার পর সেভাবে আর তৃণমূলের কোনো কটাক্ষের জবাব দিতে দেখা যাচ্ছে না তাকে।

উল্টে সুর নরম করেই পরিস্থিতি সামাল দিচ্ছেন তিনি। হঠাৎ এই পরিবর্তন কেন! তা নিয়ে এখন রাজনৈতিক মহলে তীব্র গুঞ্জনের সৃষ্টি হয়েছে। তাহলে কি রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে তাকে প্রশাসক পদ দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি তৃণমূলের বিরুদ্ধে কোনো মুখ খুলছেন না! এই ব্যাপারে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে একাংশ। বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, অশোক রঞ্জন ভট্টাচার্য ক্ষমতায় থাকতে বেশি ভালোবাসেন। আর তাই রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে প্রশাসক পদ দেওয়ার পর এখন সেটাকে টিকিয়ে রাখাই তার কাছে মূল লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

সেদিক থেকে তিনি তৃণমূলের বিরুদ্ধে তেমন ভাবে কোনো মন্তব্য না করে গোটা ব্যাপারটি এড়িয়ে যাচ্ছেন। অন্যদিকে অনেকে আবার বলছেন, গোটা রাজ্যে বামেদের অস্তিত্ব সংকট দেখা দিলেও শিলিগুড়িতে অশোক ভট্টাচার্যের জন্য কিছুটা হলেও টিকে রয়েছে বামফ্রন্ট। সেদিক থেকে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে তাকে প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান করার পর যদি সেটাও চলে যায়, তাহলে সিপিএমকে বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হবে। তাই বুঝে শুনেই কোনো মন্তব্য থেকে বিরত থাকছেন তিনি।

কিন্তু অতীতে মেয়র থাকার সময়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সব সময় তিনি মন্তব্য করলেও, এখন তিনি কেন এই সমস্ত বিষয় থেকে নীরব রয়েছেন! এদিন এই প্রসঙ্গে শিলিগুড়ি পৌরসভার প্রশাসক অশোক ভট্টাচার্য বলেন, “রাজনীতিতে আমাদের প্রধান লড়াই তৃণমূল ও বিজেপির বিরুদ্ধে। কিন্তু আপাতত লড়াই করোনার বিরুদ্ধে। এই লড়াই চালানোর জন্য পৌরসভার প্রশাসক বোর্ডে বসেছি। আগে এই লড়াইয়ে বাঁচি, তারপরে তৃণমূল, বিজেপির কথা ভাবব। ওদের বিরুদ্ধে আমাদের রাজনৈতিক লড়াই আছে। ওদের বিরুদ্ধে লড়াই না করলে রাজনীতির ময়দানে বাঁচতে পারব না।”

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অশোক রঞ্জন ভট্টাচার্য আদতে পোড়খাওয়া রাজনীতিবিদ! কখন কিভাবে আক্রমনে যেতে হয় আর কখন কিভাবে রাজনৈতিক চাল দিতে – এখনও তাঁর কাছে শিখতে পারে রাজ্য-রাজনীতি। প্রসঙ্গত, তাঁরই তৈরী বিখ্যাত শিলিগুড়ি-মডেলে ভর করে ২০১৬ তে নতুন করে ঝড় তুলতে চেয়েছিল বামফ্রন্ট-কংগ্রেস জোট। অন্যদিকে, ২০১১ তে পরাজয় ঘটলেও, মাত্র ৫ বছরের মধ্যেই প্রবল ঘাসফুল ঝড়ের মধ্যেও বামেদের হয়ে শিলিগুড়ি বিধানসভা ছিনিয়ে নিয়েছিলেন তিনি।

আর তাই, প্রশাসক পদে বসে অশোক ভট্টাচার্য তৃণমূলের প্রতি ‘নরম’ – এইসব অপপ্রচার তাঁর বিরোধীরা করতেই পারেন। কিন্তু তাতে অশোক ভট্টাচার্যের রাজনৈতিক মর্যাদা সামান্যতমও ক্ষুন্ন করা যাবে না! বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের আমলে তাঁকে বলা হাত ‘উত্তরবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী’! বামেদের ঘর দুর্দিনেও আন্দোলন কাকে বলে তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন। উত্তরবঙ্গে বিজেপির প্রবল উত্থানের মাঝেও, তাঁকে কেন্দ্র করেই বামফ্রন্ট নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে – সুতরাং অশোক ভট্টাচার্য্য নিজের মতোই রাজনীতি করে সবকিছুর জবাব দেবেন। সত্যিই কি তাই? নতুন রাজনৈতিক জল্পনায় ভর করে উত্তরের খোঁজে উত্তরবঙ্গ।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!