৭ দিনের সন্ত্রাস করলেই বছরে ২ কোটি নিশ্চিন্ত, পঞ্চায়েত নিয়ে সামনে এল নতুন তত্ত্ব বিশেষ খবর রাজ্য April 17, 2018 রাজ্যের আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘিরে বিরোধীদের অভিযোগ ‘লাগামহীন সন্ত্রাস’ করেছে শাসকদল, মিডিয়ার অভিযোগ শাসকদলের ‘উন্নয়নের খবর’ সংগ্ৰহ করতে গিয়ে আক্রান্ত সাংবাদিক, যদিও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছেন ৫৮ হাজার বুথের মধ্যে মাত্র ৭ টি ঘটনা ঘটেছে, বাকিটা মিডিয়া ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে দেখিয়েছে। আর অসমর্থিত সূত্রে পাওয়া নির্বাচন কমিশনের তথ্য বলছে, বাংলার বুকে ‘ইতিহাস’ সৃষ্টি করে ২৭% আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হতে চলেছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। ঘটনা যাই হোক আমজনতার মনে প্রশ্ন পঞ্চায়েত ঘিরে এতো অশান্তি কেন? আমরাও সেই একই প্রশ্ন নিয়ে গিয়েছিলাম বিভিন্ন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞের কাছে। কেননা ২০১৬ এর পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন সমীক্ষায় প্রমাণিত বাংলায় শাসকদলের ভোটব্যাঙ্ক বর্তমানে ৪৬% এর কাছাকাছি। অন্যদিকে তিন প্রধান বিরোধী বিজেপি-বামফ্রন্ট-কংগ্রেস যেখানে যে শক্তিশালী তার মধ্যে অন্তত দুটি দলের ভোটব্যাঙ্ক ২৫% এর কাছাকাছি। অর্থাৎ সরল ঐকিক নিয়মেই বিরোধীদের ভোট এক জায়গায় যাচ্ছে না, এবং শাসক ভোটের তা অনেক পিছনে থাকায় এমনিতেই তো শাসকদলের ড্যাংড্যাং করে জেতা উচিত সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন হলে। অবশ্যই তাতে নিরঙ্কুশ বিরোধীশূন্য সংখ্যাগরিষ্ঠতা আসবে না, কিন্তু ক্ষমতা ধরে রাখতে তো কোনো অসুবিধা হওয়ার কথা নয়! তাহলে কেন এত অশান্তি? আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে এই প্রসঙ্গে, আমাদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে যুক্ত, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিশেষজ্ঞ তুলে ধরলেন কিছুদিন আগে কলকাতার এক প্রথমশ্রেণীর সংবাদপত্রে প্রকাশিত একটি রিপোর্ট। সেই রিপোর্ট থেকে দেখা যাচ্ছে, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার মিলে বর্তমানে ২৫ টি প্রকল্প গ্রাম বাংলার জন্য চালাচ্ছে। গত ৫ বছরে সেই ২৫ টি প্রকল্পে মোট ৬০ হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি খরচ হয়েছে বাংলার সাড়ে তিন হাজার গ্রামের জন্য। অর্থাৎ এক-একটি গ্রাম পঞ্চায়েতের জন্য ৫ বছরে গড়ে প্রায় ১৮ কোটি টাকা, বছরে সাড়ে ৩ কোটি টাকার কাছাকাছি। সবথেকে মজার কথা এই সাড়ে ৩ কোটি টাকার মধ্যে পঞ্চায়েত প্রধানের হাত দিয়ে সরাসরি খরচ হয় বছরে ২ কোটি টাকা, অর্থাৎ ৫ বছরে ১০ কোটি টাকা! সুতরাং একবার যিনি এই কোটি-কোটি টাকার ‘উন্নয়নের মজা’ পেয়ে গেছেন তিনি কোন দুঃখে তা ছেড়ে দেবেন? তাই বিরোধীদের তো ছেড়ে দিন, নিজেদের দলের অন্যের কাছেও কেউ পদ হারাতে রাজি হবেন না! সুতরাং, ৭ দিনের ‘সন্ত্রাস’ করে যদি আগামী ৫ বছর ধরে বছরে ২ কোটির ‘মজা’ পাওয়া যায় – মন্দ কি? তার থেকেও বড় কথা, মাঝে মাঝেই সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায় – ১০০ দিনের কাজের জব-কার্ড, বিভিন্ন ভাতার চেক বই, অন্ত্যোদয় যোজনার কার্ডও অনেক পঞ্চায়েত সদস্য নিজেদের কাছে রেখে দেয়, ‘উপরি পাওনার’ আশায়। সবমিলিয়ে পঞ্চায়েতে দাঁড়ালে ‘সমাজসেবা’ কতটা হয় জানা না থাকলেও ‘পকেটসেবা’ যে ভালোই হবে বলায় বাহুল্য, সুতরাং তারজন্য যদি ‘সন্ত্রাসের’ কালো দাগ নিতে হয় মন্দ কি? তারজন্য যদি ‘উন্নয়নকে’ লাঠিহাতে রাস্তায় দাঁড় করিয়ে রাখতে হয় মন্দ কি? **যদিও এই খবরের সত্যতা বা সূত্র সম্পর্কে ওই সংবাদপত্রে কিছু লেখা নেই, প্রিয়বন্ধু বাংলার তরফেও এই খবরের সত্যতা যাচাই করে দেখা সম্ভব হয় নি। এই প্রবন্ধ সম্পূর্ণরূপে ওই সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবরের পরিপ্রেক্ষিতে করা, কোনোভাবেই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নয় বা কোনো ব্যক্তি বা দলের সম্মানহানির উদ্দেশ্যে রচিত নয়। আপনার মতামত জানান -