এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > বিজেপি যুবনেতার ১২ ঘন্টার ‘অপারেশনে’ ভেস্তে যেতে চলেছে মুখ্যমন্ত্রীর দিল্লি-পরিকল্পনা?

বিজেপি যুবনেতার ১২ ঘন্টার ‘অপারেশনে’ ভেস্তে যেতে চলেছে মুখ্যমন্ত্রীর দিল্লি-পরিকল্পনা?

প্রিয় বন্ধু মিডিয়া এক্সক্লুসিভ – এইমুহূর্তে রাজ্য-রাজনীতিতে অন্যতম চর্চিত বিষয় বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিল্লি সফর ও সেখানে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ। যেখানে, কেন্দ্র বারবার আমন্ত্রণ পাঠালেও, মুখ্যমন্ত্রী বা তাঁর কোনো প্রতিনিধি দিল্লি যান না, কোনো বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন না – সেখানে কি এমন হল, যে তড়িঘড়ি দিল্লি গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একান্তে বসতে হল তাঁকে? কৈলাশ বিজয়বর্গীয় বা মুকুল রায়ের মত কেউ কেউ – এই পদক্ষেপকে সদর্থক হিসাবে দেখলেও, বেশিরভাগ বিরোধীই তীব্র সমালোচনায় মুখর!

বাবুল সুপ্রিয় থেকে দিলীপ ঘোষ, অধীর চৌধুরী থেকে সুজন চক্রবর্তী – সকলেই প্রায় সমস্বরে জানাচ্ছেন, মুখ্যমন্ত্রীর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ পুলিশ অফিসার রাজীব কুমারের পিছনে সিবিআই ‘হাত ধুয়ে পড়তেই’ নাকি মুখ্যমন্ত্রী তড়িঘড়ি দিল্লি ছুটেছেন! সবথেকে বড় কথা যে প্রধানমন্ত্রীকে তিনি মানেনই না বলে লোকসভার আগে জানিয়েছিলেন, কখনো ‘গণতন্ত্রের থাপ্পড়’ তো কখনও ‘কান ধরে ওঠবোস’ করাতে চেয়েছিলেন – এমনকি সেই ‘রনং দেহি’ মূর্তি লোকসভা নির্বাচনের পরেও ন্যায় রেখেছিলেন – তাঁর সঙ্গেই মিষ্টি-কুর্তা নিয়ে সাক্ষাতে যাওয়ায় – এইসব অনভিপ্রেত প্রশ্ন উঠছে।

তবে সবাই ‘রাজীব কুমার লাইনে’ ভাবলেও – সম্ভবত একজন ভেবেছিলেন একটু অন্যরকম। আর তাই, নিজের ‘নেটওয়ার্ক’ কাজে লাগিয়ে মাত্র ১২ ঘন্টার মধ্যে এক ‘বিস্ফোরক রিপোর্টের’ মাধ্যমে মমতা ব্যানার্জির পরিকল্পনাকে ‘সম্ভবত’ বিশ বাঁও জলে দিয়ে দিলেন তিনি। নাহলে যে ‘বিস্ফোরক রিপোর্ট’ নিয়ে তিনি সকালে সঙ্ঘের এক হেভিওয়েট নেতার সঙ্গে বৈঠক করলেন – সেই একই বিষয়ে কথা বিকেলে মুখ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের শেষে বললেন কি কিভাবে? বড় বেশি ‘রহস্য’ হয়ে যাচ্ছে? আসুন – একটু খোলসা করেই বলা যাক পুরো বিষয়।

কিছুদিন আগেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন বীরভূমের দেউলচা-পাচামিতে রাজ্যের বৃহত্তম কয়লা ব্লকের কাজ শীঘ্রই শুরু হবে। এতে করে রাজ্যের আগামী ১০০ বছরের কয়লার সমস্যা যেমন মিটে যাবে, তেমনই সেখান থেকে কয়লার পাশাপাশি পাথর উত্তোলনেরও ব্যবস্থা করা হবে। ফলে সেখানে নাকি ১ লক্ষ কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও হবে। সূত্রের খবর, বিজেপির ওই যুবনেতা আশঙ্কা করেছিলেন এর পিছনে বড়সড় কোনো ‘রহস্য’ আছে – আর তা ‘ধামাচাপা’ দিতেই প্রধানমন্ত্রীর কাছে গেছেন মুখ্যমন্ত্রী!

ফলে তিনি নিজস্ব ‘নেটওয়ার্কের’ সাহায্যে তৈরী করেন এক রিপোর্ট। তাঁত তৈরী রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে   – এই যে কয়লা খাদানের ব্যাপার হতে চলেছে, তাতে পরিবেশ সংরক্ষন ও দূষণ নিয়ে কোনো ব্যবস্থাই করা হয় নি। তার থেকেও বড় কথা, এই কয়লা খাদান নিয়ে বড়সড় আপত্তি ছিল বীরভূমের আদিবাসীদের। তাঁদের সেই আপত্তিকে জোর করে দমন করে এই কয়লা খাদানের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আর এরফলে, একদিকে যেমন বিজেপির ভোটব্যাঙ্কের একটি বড় অংশে (আদিবাসী ভোটে) ধ্বস নামানো যাবে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

অন্যদিকে,পাশাপাশি সেই রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে যে প্রধানমন্ত্রীকে দিয়ে উদ্বোধন করিয়ে সরকারি মহলকে প্রভাবিত করা যাবে। তাছাড়াও, এই কয়লা ব্লক বন্টন নিয়ে বেসরকারি স্তরে নাকি একাধিক দুর্নীতির সম্ভাবনা আছে, সম্ভাবনা আছে এই সংক্রান্ত কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রেও দুর্নীতির। ফলে, এই প্রকল্প অবিলম্বে রোখা দরকার। বিজেপির ওই হেভিওয়েট যুবনেতা ওই রিপোর্ট পেয়েই নড়েচড়ে বসে সঙ্ঘ – সাথেসাথেই তাঁকে পাঠানো হয় দিল্লিতে। সেখানে জরুভিত্তিতে ওই যুবনেতা সঙ্গে বৈঠকে বসেন রাজ্যসভার সাংসদ স্বপন দাসগুপ্ত, লোকসভার সাংসদ অর্জুন সিং ও মুকুল রায়।

কি সেই যুবনেতা যুক্তি? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিজেপির এক অংশ জানাচ্ছে – ওই গোপন রিপোর্টে ওই যুবনেতা দুটি দিক তুলে ধরেছেন। এক নম্বর, প্রধানমন্ত্রীকে দিয়ে উদ্বোধন করিয়ে, রাজ্য সরকার এই কয়লা খাদান থেকে যে অর্থ পাবে – তাই দিয়ে নতুন করে শুরু হবে দান-খয়রাতি! খেলা-মেলা-উৎসব থেকে শুরু করে পুজোয় অনুদান বা সরকারি কর্মীদের ডিএ দিয়ে তাঁদের প্রভাবিত করার চেষ্টা সবই হবে। যা আগামী নির্বাচনে বিজেপির বিরুদ্ধেই ব্যবহার করবেন তৃণমূল নেত্রী। সুতরাং তা, আটকানো জরুরি।

কিন্তু, এই যুক্তিতে যদি প্রকল্প বন্ধ করে দেওয়া হয়, তাহলে তা বিজেপির বিরুদ্ধে ব্যবহার করবে তৃণমূল। কেননা, কেন্দ্রীয় বঞ্চনার কথা বলে এই নিয়ে হয়ত বৃহত্তর আন্দোলন করে রাস্তায় নেমে পড়তে পারেন তৃণমূল নেত্রী। এর পাল্টা হিসাবে ওই যুবনেতা তুলে ধরেছেন – আসানসোল-রানীগঞ্জের কথা। তিনি যে গোপন রিপোর্ট দিয়েছেন, তাতে তিনি স্পষ্ট উল্লেখ করেছেন, আসানসোল-রানীগঞ্জের কয়লা খাদানে ইতিমধ্যেই বারেবারে উঠে এসেছে দুর্নীতির কথা। এমনকি, সেই দুর্নীতির আঙুল উঠেছে মুখ্যমন্ত্রীর পরিবারের বিরুদ্ধেও।

ফলে, তাঁর যুক্তি – দেউলচা-পাচামি প্রকল্পে পরিবেশ এবং দূষণের পাশাপাশি – দুর্নীতি বড় কাঁটা হতে চলেছে। জাতীয় সম্পদ নিয়ে এই মুহূর্তে বাংলায় যারা বিজেপির বিরোধী, তারা দুর্নীতি করে ‘কালো টাকা’ বাড়িয়ে নেবে – এ হতে পারে না। কেননা, তাঁর ওই রিপোর্ট বলছে, এই ‘কালো টাকা’ সরাসরি নির্বাচনে বিজেপিকে হারাতে ব্যবহার করা হবে। ফলে, ‘গোপন রিপোর্ট’ হলেও, তা আর গোপন থাকে না – এই নিয়ে রীতিমত নড়েচড়ে বসে সঙ্ঘের উপরমহল পর্যন্ত। কেননা, ওই রিপোর্ট অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীকে ‘দিয়েই’ তৃণমূল নেত্রী বিজেপিকে হারানোর পরিকল্পনায় ছিলেন। আর তাই দিল্লিতে ওই যুবনেতা সঙ্গে বিজেপি শীর্ষ নেতাদের ম্যারাথন বৈঠক শুরু হয়।

গভীর রাত পর্যন্ত চলা সেই বৈঠকের পরে সিদ্ধান্ত হয়, এই নিয়ে পরিবেশ মন্ত্রকে ও কয়লা মন্ত্রকে অভিযোগ জানাবেন বিজেপি সাংসদরা। আর সেই সূত্র ধরেই ইতিমধ্যেই বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ স্বপন দাসগুপ্ত স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন। যদিও, তার পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর কি সিদ্ধান্ত নিয়েছে জানা যায় নি। কিন্তু, রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে বিজেপির ওই হেভিওয়েট যুবনেতার রিপোর্ট ও পদক্ষেপের ভিত্তিতে এবার ঝড় উঠতে চলেছে রাজ্য-রাজনীতিতে তো বটেই, একেবারে জাতীয় রাজনীতির ক্ষেত্রেও!

যদিও এই খবরের সত্যতা বা সূত্র সম্পর্কে সঙ্ঘ বা বিজেপির তরফে সরকারিভাবে কিছু জানানো হয় নি। তবে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিজেপির একাংশই এই খবর জানাচ্ছে ‘বেসরকারিভাবে’ – তাঁদের দাবি স্বপনবাবুর চিঠিই, সমগ্র ঘটনার ক্ষেত্রে বড়সড় ‘প্রমান’! তবে যেহেতু গেরুয়া শিবিরের তরফে সরকারিভাবে কিছু জানানো হয় নি, তাই ওই যুবনেতার রিপোর্ট বা বৈঠকের সম্পর্কে প্রিয়বন্ধু বাংলার তরফে ‘সত্যতা’ যাচাই করে দেখা সম্ভব হয় নি। এই প্রবন্ধ সম্পূর্ণরূপে গেরুয়া শিবিরের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই একাংশের দেওয়া খবরের পরিপ্রেক্ষিতে করা, কোনোভাবেই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নয় বা কোনো ব্যক্তি বা দলের সম্মানহানির উদ্দেশ্যে রচিত নয়।

বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ স্বপন দাসগুপ্তের প্রধামন্ত্রীকে লেখা চিঠির প্রথমাংশ।
বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ স্বপন দাসগুপ্তের প্রধামন্ত্রীকে লেখা চিঠির দ্বিতীয়াংশ।
আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!