রাজীব কুমারকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ আসতেই ঘুম ছুটতে চলেছে বহু ‘রাঘববোয়ালদের’ কলকাতা জাতীয় বিশেষ খবর রাজ্য May 17, 2019 রাজ্য-রাজনীতি এই মুহূর্তে ব্যস্ত দেশের সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনের শেষদফা নির্বাচন নিয়ে। কিন্তু তার মধ্যেই ব্রেকিং নিউজ – সিবিআই যদি মনে করে এবার গ্রেপ্তার করতে পারে – কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারকে। সিবিআইয়ের তরফে এর আগে দাবি করা হয়েছিল রাজ্যের বিভিন্ন চিটফান্ড কাণ্ডের তদন্তের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে ‘স্পেশ্যাল ইনভেস্টিগেশন টীম’ তৈরী করেছিলেন, তার শীর্ষপদে ছিলেন রাজীব কুমার। কিন্তু, নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করার বদলে তিনি নাকি বহু নথি নষ্ট করে দিয়ে যেসব প্রভাবশালী চিটফান্ড কাণ্ডে জড়িত ছিল তাঁদের আড়াল করার চেষ্টা করেছেন। ফলে, বৃহত্তর ষড়যন্ত্র যদি কিছু হয়ে থাকে তার যথাযথ তদন্ত করার জন্য রাজীব কুমারকে গ্রেপ্তার করা অত্যন্ত জরুরি। রাজীব কুমারকে সিবিআই বিভিন্ন সময় সমন পাঠালেও, তিনি সিবিআইয়ের মুখোমুখি হতে চান নি। এরপর, তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে তাঁর কলকাতার বাসভবনে সিবিআইয়ের টীম পৌঁছালে, কলকাতা পুলিশ সেইসব সিবিআই আধিকারিকদের টেনে-হিঁচড়ে থানায় নিয়ে যান। রাজীব কুমারের বাসভবনে পৌঁছে যান খোদ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই তিনি সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়ে দেন, তিনি সিবিআইয়ের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে ধর্নায় বসছেন। কিন্তু ধর্নায় বসেও তিনি রাজীব কুমারকে সিবিআইয়ের মুখোমুখি হওয়া থেকে আটকাতে পারেন না! সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে রাজ্যের বাইরে শিলংয়ে রাজীব কুমারকে সিবিআইয়ের মুখোমুখি হতে হয়। কিন্তু এতেই ‘নৈতিক জয়’ দেখে ধর্ণা তুলে নেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - কিন্তু, শিলংয়ের সেই জেরার পরেও মোটেও সন্তুষ্ট ছিলেন না সিবিআইয়ের আধিকারিকেরা বলে বিভিন্ন সূত্র থেকে খবর আসতে থাকে। এরপর, সুপ্রিম কোর্টে নিজেদের হলফনামায় সেকথা স্পষ্ট করে দেয় সিবিআই। কিন্তু, পাল্টা হলফনামায় রাজীব কুমার নিজেকে ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন বলে দাবি করেন। এরপর দেশের সর্বোচ্চ আদালতে বেশ কয়েকবার শুনানি ও হলফনামা পাশের পর আজ সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিল, সিবিআই যদি মনে করে তবে রাজীব কুমারকে গ্রেপ্তার করতে পারে, তবে তিনি আগাম জামিনের আবেদনও করতে পারেন। এদিকে, রাজীব কুমারকে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে চলে যেতে হয়েছে বাংলার বাইরে। মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে সিআইডির পদে বসিয়ে বাংলাতে ধরে রাখার ব্যবস্থা করলেও, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে তাঁকে দিল্লিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে গিয়ে যোগ দিতে হয়েছে। আর তার মাঝেই এবার তাঁর গ্রেপ্তারি নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট বড়সড় নির্দেশ দিতেই ঘুম উড়তে চলেছে রাঘববোয়ালদের বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের অভিযোগ ছিল, সিটের তদন্তের নামে তিনি নথি নষ্ট করে প্রভাবশালীদের আড়াল করেছেন। আর সিবিআই এই সংক্রান্ত যথেষ্ট নথি-প্রমান তুলে না দিলে এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট তাঁকে গ্রেপ্তারির মত সংবেদনশীল বিষয়ে সম্মতি জানাতো না। আর তাই, সিবিআই এবার তাঁকে নিজেদের হেফাজতে নিলে এইসব প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে অনেক কিছুই সামনে আসাটা শুধু সময়ের অপেক্ষা বলেই মনে করছেন আইন বিশেষজ্ঞরা। ফলে আগামী কয়েকদিন রাজ্য-রাজনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। রাজীব কুমার অধ্যায়ের পরিপ্রেক্ষিতে অনেক নতুন বাঁক অপেক্ষা করে রয়েছে আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে বলেই জল্পনা ক্রমশ দৃঢ় হচ্ছে। আপনার মতামত জানান -