এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > শিক্ষকদের নবান্ন অভিযানের ঘোষণাতেই কেঁপে গেল প্রশাসন? চূড়ান্ত অসহযোগিতা ঘিরে একাধিক প্রশ্ন

শিক্ষকদের নবান্ন অভিযানের ঘোষণাতেই কেঁপে গেল প্রশাসন? চূড়ান্ত অসহযোগিতা ঘিরে একাধিক প্রশ্ন


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া এক্সক্লুসিভ – গতকালই এক এক্সক্লুসিভ প্রতিবেদনে আপনাদের আমরা জানিয়েছিলাম যে এবার শিক্ষকদের দুই জ্বলন্ত সমস্যা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরে আবেদন জানাতে আগামী ২৩ তারিখে নবান্ন অভিযানের পথে রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষকরা। আর সেই প্রতিবেদনের ২৪ ঘন্টা কাটতে না কাটতেই – এবার সেই নবান্ন অভিযান ঘিরে প্রশাসনিক তৎপরতা ও তাকে আটকানোর ‘প্রক্রিয়া’ শুরু নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে শুরু হয়ে গেল তীব্র জল্পনা।

এই নবান্ন অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছিল ওয়েস্ট বেঙ্গল প্রাইমারি ট্রেন্ড টিচার অ্যাসোসিয়েশনের তরফে। সংগঠনের রাজ্য সভাপতি পিন্টু পাড়ুই আগেই জানিয়েছিলেন, রাজ্যে ক্ষমতার পরিবর্তনের পরে রাইটার্স বিল্ডিঙে এক ঐতিহাসিক সাংবাদিক সম্মেলনে ২০১১ সালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন, পরবর্তী তিন বছরের মধ্যে পিটিটিআই পড়ুয়াদের তিনি চাকরির ব্যবস্থা করে দেবেন। কিন্তু এর পর ৮ বছর পেরিয়ে গেলেও রাজ্য সরকার এই নিয়ে কিচ্ছু করে নি, এমনকি এই নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের স্পষ্ট রায় থাকার পরেও।

পিন্টুবাবুর আরও বক্তব্য, দীর্ঘ আলোচনা, বৈঠক, সম্মেলন ও শিক্ষক আন্দোলনের পরে রাজ্য সরকার প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন কিছুটা বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করে। যদিও, তা কেন্দ্রীয় হারের থেকে অনেকটাই কম, কিন্তু রাজ্য সরকারের আর্থিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে আমরা তাতেই রাজি হই। কিন্তু, রাজ্য সরকারের এই পদক্ষেপে সিনিয়র শিক্ষকদের এতদিনের ইনক্রিমেন্ট থেকে শুরু করে সব কিছু জলে গিয়ে, একজন জুনিয়র শিক্ষকের সমান বেতন হয়ে যাচ্ছিল! পৃথিবীর কোনো দেশে, কোনো অবস্থাতে এই ধরনের ঘটনা ঘটে?

পিন্টুবাবু জানিয়েছিলেন, ফলে এই নিয়ে আমরা বিশদে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করি এবং তিনি নিজে এই নিয়ে বিধানসভায় গত ৪ ঠা সেপ্টেম্বর জানান সিনিয়র শিক্ষকদের জন্য ফিটমেন্ট-ফ্যাক্টর সহ পে-ফিক্সেশন ও পে-প্রোটেকশন – সবকিছুরই ব্যবস্থা থাকবে। অথচ বাস্তবে, এর কোনো কিছুরই দেখা নেই – ফলে আমরা বঞ্চিত ও হতাশ। এই কথাই আমরা মুখ্যমন্ত্রীকে জানাতে চাই – যাতে রাজ্যের হাজার হাজার প্রাথমিক শিক্ষকরা এই বঞ্চনার হাত থেকে মুক্তি পায়। আর মুখ্যমন্ত্রী তো নিজেই বলছেন ‘দিদিকে বলো’ – তাই আমরা নবান্নে গিয়ে রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানকে শিক্ষকদের এই সঙ্কটের কথা বলতে চাই।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

পিন্টু পাড়ুই জানান, এই সবের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা আগামী ২৩ তারিখ নবান্ন অভিযান করার পরিকল্পনা নিয়েছি। সেইদিন সকাল ১০ টায় সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ ফিরিঙ্গি কালীবাড়ি থেকে শান্তিপূর্ণ মিছিল করে রানী রাসমণি অ্যাভিনিউ পর্যন্ত যাব এবং সেখানে আমাদের শান্তিপূর্ণ সভা চলবে। সেই সভাস্থল থেকে আমাদের এক প্রতিনিধিদল নবান্নে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে স্মারকলিপি দিয়ে আসবে। এই কর্মসূচির জন্য, লালবাজারের শর্ত অনুযায়ী সেনাবাহিনীর NOC, Courter Affidavit সহ যাবতীয় কিছু নথি আমরা জমা দিই। প্রথমে অনেক টালবাহানা করলেও লালবাজার শেষপর্যন্ত অনুমতিও দেয়।

পিন্টুবাবুর বক্তব্য, কিন্তু কোন অজানা নির্দেশে লালবাজার থেকে আজ ২০/৯/১৯ ফোন করে বলা হয়, মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ডেপুটেশনের বিষয়টি আবেদন থেকে বাদ দিতে হবে। আমরা রাজি না হয়ে লালবাজার গিয়ে PA TO JT CP গৌতমবাবুর সঙ্গে দেখা করে অনুরোধ করি, আমাদের নির্ধারিত কর্মসূচি পালন করতে দেবার জন্য। কিন্তু, উনি অত্যন্ত কুরুচিকর ভাষায় আমাদের সঙ্গে কথা বলেন এবং মুখ্যমন্ত্রীকে আমাদের স্মারকলিপি জমা দেওয়ার বিষয়টি বাদ দিতে বলেন। স্বাভাবিকভাবেই, আমরা প্রথমে এই প্রস্তাবে রাজি হই নি। কিন্তু, সামগ্রিক শিক্ষক স্বার্থের কথা ভেবে, আমরা পরে ওনার প্রস্তাবে রাজি হই।

পিন্টুবাবু বলেন, তারপর আবার ওনাকে (গৌতমবাবুকে) মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ডেপুটেশন বাদে, মিছিল মিটিং করার বাকি বিষয়ের ফাইনাল অনুমতি দেবার অনুরোধ করি। কিন্তু কোন কথা না শুনে উনি হিটলারি কায়দায় ২৩ শের আমাদের মিছিল, সভা সহ নবান্ন অভিযানের অনুমতি বাতিল বলে জানিয়ে দেন। কিন্তু, আমরাও দদ্বর্থহীন ভাষায় জানিয়ে দিই – মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ২৩ শে সেপ্টেম্বর ডেপুটেশন কর্মসুচি হবেই। সমগ্র শিক্ষক সমাজের স্বার্থ রক্ষায় সেদিন যতই পুলিশের বাধা আসুক না কেন, লাঠি,গুলি, কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়া হোক না কেন – আমরা সেদিন নবান্ন অভিযান থেকে কোনোভাবেই সরে আসছি না।

পিন্টুবাবুর বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রী নিজে পিটিটিআইদের চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, শিক্ষামন্ত্রী নিজে সিনিয়র শিক্ষকদের জন্য ফিটমেন্ট-ফ্যাক্টর সহ পে-ফিক্সেশন ও পে-প্রোটেকশনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষিত হয় নি দীর্ঘদিনেও। সেই কথা মুখ্যমন্ত্রীকে মনে করিয়ে দিতে যাওয়া আটকাতে প্রশাসন এত তৎপর কেন? কোনভাবেই বঞ্চিত PTTI ছাত্রছাত্রী ও প্রাথমিক শিক্ষকদের কর্মসুচিতে অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না কেন? মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতিহীনতা জনমানসের সামনে প্রকাশ হয়ে যাবে এবং তাতে রাজনৈতিক ভাবে উনি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে?

এরপরেই পিন্টুবাবু রীতিমত হুঙ্কার ছেড়ে বলেন, বাম সরকারের পতনের পর, বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান এই পিটিটিআই আন্দোলনকেই অন্যতম ফ্যাক্টর হিসাবে মান্যতা দিয়েছিলেন। তৎকালীন বিরোধী নেত্রী এই আন্দোলনের সমর্থক ছিলেন – তিনি তৎকালীন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে এসে পিটিটিআই পড়ুয়াদের অনশন ভঙ্গ করেন। আজ যদি তিনি ক্ষমতার কুর্সিতে বসে নিজের দেওয়া প্রতিশ্রুতি ভুলে যান – তা আদায়ের জন্য আমরা পথে নামবোই। ২৩ শের নবান্ন অভিযান তো হবেই, প্রয়োজনে আগামীদিনে আমরণ অনশনে বসে যাব – দেখি রাজ্য সরকার কিভাবে আমাদের আন্দোলন আটকায়।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!