এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > নদীয়া-২৪ পরগনা > ‘ভ্রমর’-এর ডানায় ভর করে রঙিনতর ‘দীপাবলি’ পেল ইঁটভাটার কচি-কাঁচারা

‘ভ্রমর’-এর ডানায় ভর করে রঙিনতর ‘দীপাবলি’ পেল ইঁটভাটার কচি-কাঁচারা


আলোর উৎসবে মেতে উঠেছে সারা দেশ – আর সেই আলোর উৎসব ‘দীপাবলিকে’ আরও রঙিন করে তুললেন নদীয়ার কৃষ্ণনগরের একঝাঁক তরুণ তুর্কি। কেউ বা পেশায় সদ্য চাকরিতে ঢোকা তরুণ-তরুণী, কেউ বা এখনও কলেজের গন্ডি পেরোননি। তাই সামর্থ অতি সীমিত – কিন্তু বুকের মধ্যে আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার উচ্চাশা একরাশ। ‘বিন্দুতে বিন্দুতে সিন্ধুকে গড়ার প্রচেষ্টা’ নিয়ে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘ভ্রমর’ এবারের দীপাবলি উদযাপন করলেন এক অনন্য উপায়ে।

চারিদিকে যখন মন্দিরে মন্দিরে মণ্ডপে মণ্ডপে শ্যামা-মায়ের আরাধনা চলছে, তখন অন্য ‘দীপাবলিতে’ মেতে উঠতে পারল নদীয়ার কৃষ্ণনগরের শান্তি ইটভাটা(ঘূর্ণী)-র কচিকাঁচারা। ছোট শিশুদের মুখে একটু হাসি ফোটানোর জন্য সেখানে পৌঁছে গিয়েছিল স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা “ভ্রমর”। সংস্থাটির সভাপতি অর্ক জোয়ারদারের কথাতে ফুটে ওঠে সংস্থার মনের কথা। তিনি জানান, “সবাই যখন আলোতে, ওরাও আলোতে ভরে উঠুক – আমরা সেটাই চেয়েছিলাম। তাই, আমাদের সামর্থমত এই ক্ষুদ্র আয়োজন”।

ফেসবুকের কিছু টেকনিকাল প্রবলেমের জন্য সব খবর আপনাদের কাছে পৌঁছেছে না – তাই আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে

এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে

‘ভ্রমরের’ সাথে যুক্ত সকলেই ব্যক্তিগতভাবে এই ভাবে বিভিন্ন শিশুদের নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই কাজ করছিলেন। কিছুদিন আগেই লক্ষ্মীপুজোর সময় এক পুজো কমিটির সঙ্গে হাত মিলিয়ে বিশেষভাবে সক্ষম শিশুদের জন্য সামান্য উপহারের ডালি তুলে দিয়ে তাদের মুখে হাসি ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছিলেন সদ্য কুড়ি পেরোনো এই তরুণ-তুর্কির দল। আজকের সমাজ যখন বেশি করে যুব সমাজের দিকে দায়িত্ত্বজ্ঞানহীনতার আঙ্গুল তোলেন – তখন যেন, সেই সমাজকেই প্রতিপদে কিছু একটা ফিরিয়ে দেওয়ার আকুল আর্তি নিয়ে হাজির তাঁরা। কোথাও যেন গিয়ে একটা বার্তা স্পষ্ট করার চেষ্টা করেন – আমরাই পরবর্তী প্রজন্ম, আমরাই দায়িত্ত্বশীল ও সচেতন এই সমাজের প্রতি।

কালীপুজোর দিন ‘ভ্রমর’ কচিকাঁচাদের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য চারিদিকে প্রদীপ, মোমবাতি দিয়ে আলোয় ভরিয়ে দেয়। সংস্থার তরফে, বাচ্চাদের হাতে তুলে দেওয়া হয় তারাকাঠি, রংমশলা এবং সবশেষে মূল আকর্ষণ, ফানুস ওড়ানো হয়। এরপর চলে ইঁটভাটার ওই রৌদ্রক্লিস্ট শিশুদের মিষ্টিমুখ করানো এবং তাদের হাতে চকোলেট তুলে দেওয়া। সংস্থার সম্পাদক সুদীপ সরকার বলেন, “আমাদের একটাই উদ্দেশ্য, বিন্দুতে বিন্দুতে সিন্ধু লাভ করা। হয়ত, আমাদের আর্থিক সামর্থ বিশাল নয় – সেটা অবশ্যই একটা প্রতিবন্ধকতা। তাই, ক্ষুদ্র সামর্থের মধ্যে – আমাদের সমাজের বিভিন্ন প্রান্তের শিশুদের মুখে হাসি ফোটাতে পারাটাই আমাদের কাছে এখন বিভিন্ন উৎসবের সেরা উপহার – নিজেদের কাছে”।

তবে গুটি গুটি পায়ে চলতে ও ডানা মেলতে শুরু করা ভ্রমরের গুঞ্জন কিন্তু ক্রমশ প্রসারিত হচ্ছে। আগামীদিনে – দোয়াত, চিত্রলেখ, কল্পতরু, দর্পন, রোদ্দুর, জীবনধারা, রঙিন খাম, দীপ্তময়, মনন প্রভৃতি একগুচ্ছ কর্মসূচির এখন থেকেই জোরদার পরিকল্পনা শুরু হয়ে গেছে। মূলত সমাজের বিভিন্ন প্রান্তের শিশুদের নিয়ে কাজ করা ‘ভ্রমরের’ মূল উদ্দেশ্যই হল – দুর্গতদের সাহায্য করা, স্কলারশিপ ও শিক্ষা সংক্রান্ত উপকরণ প্রদান, স্বাস্থ্যের উন্নতিকরন, অন্নদান, বস্ত্রদান, রক্তদান, স্বচ্ছতা অভিযান, বৃদ্ধাশ্রম ও অনাথাশ্রম উন্নতিকরন। অর্ক-সুদীপের নেতৃত্ত্বে তারুণ্যের প্রাণোজ্জ্বল উপস্থিতিতে ভরপুর পুরো ‘ভ্রমর’ টিমকে প্রিয় বন্ধু মিডিয়ার তরফে আন্তরিক ধন্যবাদ ও ভবিষ্যতের পথচলার জন্য অনেক শুভকামনা – এগিয়ে ছিল ‘ভ্রমর’, তোমাদের গুঞ্জনে মুখরিত হোক সমাজের আলো না পাওয়া অংশের মানুষের হৃদস্পন্দন।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!