এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > পুরুলিয়া-ঝাড়গ্রাম-বাঁকুড়া > নিজেদের বাঁচাতে’ রাজ্যজুড়ে ৯০ হাজার যুবকর্মীর হাতে ত্রিশূল দিতে চেয়ে বিতর্কে বিজেপি সাংসদ

নিজেদের বাঁচাতে’ রাজ্যজুড়ে ৯০ হাজার যুবকর্মীর হাতে ত্রিশূল দিতে চেয়ে বিতর্কে বিজেপি সাংসদ


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – সম্প্রতি রাজ্যের আগামী বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে রাজ্যের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যখন মতান্তর, পারস্পরিক সংঘাত, সংঘর্ষ প্রভৃতি যথেষ্ট মাত্রায় বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই আবহেই বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের ষাঁড়েশ্বর শিব মন্দিরে যজ্ঞ করে ও নিজের দলীয় কর্মীর হাতে ত্রিশুল তুলে দিয়ে বিতর্কের কেন্দ্রে এলেন বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ।সংবাদ সূত্রে জানা গেছে, বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুরের ডিহরে অঞ্চলে অবস্থিত ষাঁড়েশ্বর শিব মন্দিরটি সম্প্রতি ভারতীয় পুরাতত্ত্ব বিভাগের সংরক্ষণের দায়িত্ব প্রাপ্ত। এই মন্দিরটির একটি অংশে বর্তমানে সংস্কারের কাজ চলছে বলে ওই স্থানে ভক্ত সহ সমস্ত মানুষের প্রবেশ নিষেধ।

তবে মন্দিরের ওপর একটি অংশে এখনো পুজোপাঠ চলছে।অভিযোগ উঠেছে, গতকাল সোমবার বেলা ১১ টার সময়ে এই মন্দিরের ওই সংস্কার করা অংশেরই চত্বরে একটি বিশেষ যজ্ঞের আয়োজন করেছিলেন বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। সংসদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ৯ জন বিজেপি কর্মী। যারা নিজেদের মস্তক-মুণ্ডন করে যজ্ঞ শুরু করেছিলেন। এই পুজো সাঁমড়কে সৌমিত্র খান বলেছেন, ‘‘জাতীয় পতাকা তুলতে গিয়ে খানাকুলে খুন হয়েছেন আমাদের কর্মী। এ বার নিজেদের বাঁচাতে ত্রিশূল রাখব। রাজ্য থেকে তৃণমূল সরকার উৎখাত না হওয়া পর্যন্ত এ ভাবে মাথা মুণ্ডনের মধ্য দিয়ে ত্যাগের প্রতিজ্ঞা করলাম।’’

আর এই যজ্ঞ সমাপ্তির পরেই সাংসদ সৌমিত্র খাঁ ওই ৯ জন বিজেপি কর্মীর হাতে ত্রিশূল তুলে দিলেন। কর্মীদের ত্রিশূলদেন প্রসঙ্গে তাঁকে বলতে শোনা গেছে, ‘‘নিজেদের বাঁচাতে রাজ্যের যুব কর্মীদের হাতে নব্বই হাজার ত্রিশূল তুলে দেব। তারই প্রতীক হিসাবে এ দিন ন’জনকে ত্রিশূল দিয়েছি।’’ আর সাংসদের এই ত্রিশুল দান নিয়ে শুরু হয়েছে ব্যাপক শোরগোল ও বিতর্ক। বাঁকুড়া জেলার তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি শ্যামল সাঁতরা এই ত্রিশুলদান প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, ‘‘যজ্ঞের নাম করে মানুষের হাতে অস্ত্র ধরিয়ে দেওয়ার কর্মসূচি নিয়েছেন বিষ্ণুপুরের সাংসদ। কোনও ভাবে যাতে অশান্তির বাতাবরণ তৈরি না হয়, সে ব্যাপারে নজর রাখার আহ্বান জানাচ্ছি এলাকার বাসিন্দাদের।’’

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

অন্যদিকে পুরাতত্ত্ব বিভাগের দ্বারা সংরক্ষিত এই মন্দির চত্বরে যজ্ঞ করতে গিয়ে যথেষ্ট বিপাকে পড়েছে পড়েছেন বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। কেন্দ্রীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ বিভাগের বিষ্ণুপুর সংরক্ষণ আধিকারিক রহিত কুমার এই প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, ‘‘ষাঁড়েশ্বর মন্দির সংস্কার হচ্ছে। নিয়মকানুন সবই পুরোহিতকে বলা আছে।’’ কিন্তু সংরক্ষিত মন্দিরের নিয়মকানুন স্বভাবতই ভঙ্গ করেছেন সাংসদ। তবে, পুরাতত্ত্বের এই নিয়ম লঙ্ঘন করলে তার কি শাস্তি হতে পারে সে প্রসঙ্গে কিছু বলেননি আধিকারিক রোহিত কুমার। এ প্রসঙ্গে ষাঁড়েশ্বর শিব মন্দিরের পুরোহিতদের পক্ষ থেকে পুরোহিত সাধন নায়েক জানিয়েছেন,
” মন্দিরে পুজো করে নীচে যজ্ঞ করেছেন সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। মন্দিরে পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের রক্ষী রয়েছেন। তাঁকে আমরা জানিয়েছিলাম।’’

অন্যদিকে গতকাল শ্রাবণ মাসের শেষ সোমবার ছিল বলে কাল এই শিব মন্দিরে বহু ভক্তর ভিড় ছিল। সাংসদ কতৃক বিজেপি কর্মীদের এই ত্রিশুল দান প্রসঙ্গে বেশ কিছু প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন যে, এই ত্রিশুল দানের সময় কোন সামাজিক দূরত্ব মান্য করা হয়নি। এমনকি এসময় যারা উপস্থিত ছিলেন তাঁরা মাস্ক পর্যন্ত পরিধান করেননি।তাঁদের মধ্যে ব্যাপক ভাবে ধাক্কাধাক্কির পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল ত্রিশুল দানের সময়কালে। করোনা সংক্রমণ কালে মন্দিরে সামাজিক দূরত্বর বিধির অবমাননার এই বিষয়টি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ নিজেও স্বীকার করে নিয়েছেন । এই প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘‘ সব ক্ষেত্রে নিয়ম মানা সম্ভব হয়নি। মানুষের সুস্থতা কামনায় আমরা বাবার মন্দিরে সমবেত হয়েছি। তিনি নিশ্চয় আমাদের মঙ্গল করবেন।”

অন্যদিকে ত্রিশুল দানের এই ঘটনা প্রসঙ্গে বিষ্ণুপুরের এসডিপিও প্রিয়ব্রত বক্সী জানিয়েছেন, ‘‘বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখছি। কর্তৃপক্ষকেও জানাব।’’ আবার এই ঘটনা সম্পর্কে বিষ্ণুপুরের এসডিও অনুপ কুমার দত্ত জানিয়েছেন, ‘‘বিষয়টি জানি না। খোঁজ নিচ্ছি। জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলব।’’

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!