প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – রাজ্যজুড়ে করোনা পরিস্থিতি মোটেই আশাব্যঞ্জক নয় বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। রাজ্যে সংক্রমণের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। সাপ্তাহিক লকডাউন করেও সংক্রমণ আটকানো যাচ্ছেনা কোনমতেই। তবে এরই মধ্যে ঘটে গেল একটি দুঃখজনক ঘটনা। শুধুমাত্র করোনা আতঙ্ককে সঙ্গী করে এক ব্যক্তি আত্মঘাতী হলেন হাওড়া সালকিয়ায়। এই ঘটনায় ইতিমধ্যে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। করোনায় মৃত্যুর খবরের থেকেও করোনা আতঙ্কে আত্মহত্যার ঘটনা অনেক বেশি অবাক করেছে এলাকাবাসীকে।

অন্যদিকে আত্মঘাতী যুবক তৃণমূল কংগ্রেসের স্থানীয় যুব নেতা হিসেবে পরিচিত এলাকায় বলে জানা গেছে। বৃহস্পতিবার সকাল নটার সময় বন্ধ ঘরের ভেতর থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার করা হয়। সূত্রের খবর, সালকিয়ার 72 নম্বর শ্রীরাম ঢ্যাং রোডে বাস করতেন নামে মনোজ দুবে নামের এক যুবক তাঁর স্ত্রী এবং শিশু সন্তানকে নিয়ে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার তিনি স্ত্রী সন্তানকে তাঁর স্ত্রী এর বাপের বাড়ি রেখে আসেন। বাড়ি ফিরে মনোজ দুবে বৃহস্পতিবার ভোরে আত্মঘাতী হন বলে জানা গেছে।

অন্যদিকে প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে জ্বর-সর্দি-কাশিতে ভুগছিলেন আত্মঘাতী যুবক মনোজ। কিন্তু মনোজ এরপর নিজের এবং তাঁর পরিবারের প্রত্যেককে করোনা টেস্ট করান। কিন্তু প্রত্যেকেরই করোনার পরীক্ষার ফল নেগেটিভ আসে। নেগেটিভ আসলেও করোনার ভয় কিন্তু যায়নি মনোজের মন থেকে বলে জানা যাচ্ছে। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, থেকে থেকে অক্সিমিটার লাগিয়ে বিভিন্নভাবে পরীক্ষা চালাতেন মনোজ। সব মিলিয়ে মনে করা হচ্ছে মনোজের মনে তীব্র মানসিক অবসাদ তৈরি হয়েছিল।

আর তার ফলেই মনোজ আত্মহত্যা করেন। পুলিশ মনোজের দেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তে পাঠিয়েছে। ময়না তদন্তের পরেই মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে বলে জানিয়েছে স্থানীয় পুলিশ। আপাতত এই মৃত্যুর তদন্ত শুরু করেছে স্থানীয় পুলিশ। অন্যদিকে মনোজের মৃত্যু সংবাদ আসার পরেই তাঁর বাড়িতে শ্রধা জানাতে পৌঁছান এলাকার তৃণমূলের বিভিন্ন স্তরের নেতা নেত্রী ও কর্মীরা। হাওড়া তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি তথা মন্ত্রী লক্ষ্মীরতন শুক্লাও মনোজের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

অন্যদিকে জানা গেছে, মনোজ দুবের স্ত্রী এই ঘটনার কথা জানতে পেরে রীতিমতো ভেঙে পড়েছেন। অন্যদিকে এই মৃত্যুর ঘটনায় বিভিন্ন প্রশ্ন উঠছে। শুধুমাত্র করোনা আতঙ্ককে সঙ্গী করে কি করে একজন মানুষ এভাবে মানসিক অবসাদে পৌঁছে আত্মহত্যা করতে পারেন তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করছেন অনেকেই। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, দীর্ঘদিন ধরে একই পরিস্থিতি থাকায় কোনো কোনো মানুষের মানসিক শান্তি লংঘন হতেই পারে, আর সেক্ষেত্রে এরকম ঘটনা ঘটা অস্বাভাবিক নয়।