এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > নিজের মায়ের কাছেও ‘কাটমানি’ নিতে ছাড়লেন না প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা! শুরু তীব্র বিতর্ক!

নিজের মায়ের কাছেও ‘কাটমানি’ নিতে ছাড়লেন না প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা! শুরু তীব্র বিতর্ক!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – ঘুষ, কাটমানি, তছরূপী এই শব্দগুলি সঙ্গে আমাদের পরিচয়টা খুব গভীরে। সরকারি অফিসে ঘুষ না দিলে কাজ হতে চায় না। ঘুষ না দিলে সরকারি প্রকল্পের টাকা পাওয়া যায় না অহরহ আমাদের ঘুষ, কাটমানি এসব দিয়েই চলতে অভ্যস্ত । সরকার থেকে নানা সময়ে নানা রকম হিতোপদেশ দেওয়া হয়। বলা হয়, এবার থেকে কাট মানি নিলে তার বিরুদ্ধে চরম ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কিন্তু এই যেন ‘ ধ্বনিটিরে প্রতিধ্বনি সদা ব্যঙ্গ করে’ – সরকারের এই হিতোপদেশ ‘অরণ্যে রোদন’ হয়ে শেষপর্যন্ত শূন্যে মিলিয়ে যায়।

চলতে থাকে কাটমানি, ঘুষের পর্ব। জমতে থাকে ক্ষোভ, বিদ্বেষ, অভিযোগের স্তুপ। কিন্তু আজকে যে ঘটনাটা আপনাদের বলতে যাবো তা হয়তো কোনোদিন শোনেন নি ইতিপূর্বে। একজন নেতার মাকে সরকারি প্রকল্পের টাকা পাওয়ার জন্য কোন দিন তার নেতা ছেলেকে ঘুষ দিতে হয়েছে এমন কথা সত্যিই অভূতপূর্ব। এবার এমন ঘটনাই ঘটতে দেখা গেল দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ক্যানিং ব্লকের গোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বধুকুলা গ্রামে।যেখানে সরকারি প্রকল্পের টাকা নিতে মা ঘুষ দিলেন স্বয়ং নিজের ছেলেকে।

স্থানীয় সংবাদ সূত্রে জানা গেছে, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ক্যানিং ব্লকের গোপালপুর পঞ্চায়েতের বধূকুলা গ্রামে গত সোমবার রাতে হঠাৎ করেই এক গন্ডগোলের খবর পাওয়া যায়। শোনা যায় এই গ্রামের জনৈক বাসিন্দা আবেদা মন্ডল নামে এক মহিলা বেশ কিছুদিন আগে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকা পেয়েছিলেন।

অভিযোগ উঠেছে তার প্রথম কিস্তির ৬০০০০ টাকা যখন তার ব্যাংক একাউন্টে ঢুকে ছিল তখন আবেদা মন্ডলের কাছ থেকে তার পুত্র আকছার মণ্ডল ও তার স্ত্রী তাজকিয়া মণ্ডল জোর করে ১০০০০ টাকা নিয়ে নেয়। প্রসঙ্গত বলে রাখি, আকছার মণ্ডল স্থানীয় তৃণমূলের একজন প্রভাবশালী নেতা আর তার স্ত্রী তাজকিয়া মণ্ডল গোপালপুর পঞ্চায়েতের একজন সদস্যা। আর তাদের পরিবারের সকলেই কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস সমর্থক।

যাইহোক মা আবেদা মন্ডলের প্রথম কিস্তির টাকা থেকে ১০ হাজার টাকা নিয়েও আকছার মন্ডল সন্তুষ্ট কিন্তু নয়। আরো ১০ হাজার টাকা দাবি তিনি করেছেন। হুমকি দিয়েছেন যদি ১০ হাজার টাকা না দেওয়া হয় তবে দ্বিতীয় দফার টাকা একাউন্টে আসবেনা। শেষ পর্যন্ত ছেলে-বৌমার এই অপকীর্তি দেখে স্থানীয় পঞ্চায়েত উপপ্রধান মদন নস্করের দ্বারস্থ হলেন আবেদা মন্ডল আর তার বাকি ছেলেরা।

অভিযোগ শোনা মাত্রই আবেদা মণ্ডলের বাড়িতে পঞ্চায়েতের লোক পাঠানোর ব্যবস্থা কেন উপপ্রধান। সেই সঙ্গে উপপ্রধান মদন নস্কর তাদের বাড়িতে ‘Geo-tagging’ এর ব্যবস্থাও করেন। এরপর তার বাড়িতে পঞ্চায়েতের সদস্য যাওয়া মাত্রই তাদের সঙ্গে প্রথমে বচসা তারপর ধস্তাধস্তি শুরু করে আকছার মন্ডল এমনকি নিজের মা ভাইদের উপরেও চড়াও হন আকছার মন্ডল, সকলকেই মারধর করেন।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

যদিও আকছার মন্ডল ও তার স্ত্রী তাজকিয়া মন্ডল তাদের উপরে ওঠা এমন গুরুতর অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন। উল্টে দায়ী করেছেন তাঁর মা-ও ভাইদেরকে। এ প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, ‘‘প্রথম দফার টাকা পেলেও ঘর করেননি ওঁরা। তাই দ্বিতীয় দফার টাকার জন্য চাপ দিলেও সরকারি টাকা তছরুপে সায় দিইনি। সে কারণে আমাদের উপরে চড়াও হয়ে মারধর করেছেন ওঁরা।”

অন্যদিকে তাদের এই গন্ডগোল এর সম্পর্কে উপপ্রধান মদন বাবুর বক্তব্য, “ বয়স্ক মায়ের কাছ থেকেও কাটমানি খেতে ছাড়ছে না। ইচ্ছা করে ঘরের দ্বিতীয় দফার টাকার জন্য ওঁরা প্রক্রিয়া শুরু করেননি। আমরা ব্যবস্থা নেওয়ায় আমাদেরও মারধর করে।”

তবে এই প্রসঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন যে, এটা পারিবারিক কোন ব্যাপার নয়, এটি পুরো একটি রাজনৈতিক ব্যাপার। আকছার মন্ডল ও তার স্ত্রী তাজকিয়া মন্ডল মূল তৃণমূল দলের সমর্থক কিন্তু তার মা ও ভাইয়েরা সকলেই যুব তৃণমূল সমর্থক। তাই এই ব্যাপারটিকে অনেকেই তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বলে মনে করছেন। স্বয়ং আবেদা মন্ডল এ সম্পর্কে জানিয়েছেন, ‘‘আমার কাছ থেকে একবার ১০ হাজার টাকা নিয়েছে। আবার ১০ হাজার টাকা চাইছে। আমি বলেছি ব্যাঙ্কে টাকা ঢুকলে দেব। কিন্তু ওরা তা মানতে চাইছে না। আমরা যুব তৃণমূল করি বলেই আমাদের হেনস্থা করা হচ্ছে।”

তবে আকছার মন্ডল ও তার স্ত্রী তাজকিয়া মন্ডল এই ঘটনার মধ্যে কোন রাজনৈতিক ছায়া খুঁজে পাচ্ছেন না। অন্যদিকে, এই ঘটনা সম্পর্কে তৃণমূল দলের ক্যানিং ব্লক এর সহ সভাপতি অর্ণব রায় জানিয়েছেন, ” পারিবারিক বিবাদের জেরে ঘটনা, এর মধ্যে কোনও রাজনীতি বা গোষ্ঠীকোন্দল নেই।’’

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!