প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –এর আগে একাধিকবার বিশ্বভারতীর উপাচার্যকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেছেন তিনি। তবে ভোটের সময় অনুব্রত মণ্ডলের নানা বিষয়ে বিরূপ মন্তব্য কার্যত শোরগোল ফেলে দেয় রাজ্যে। এবারেও তার কোনো ব্যতিক্রম হল না। এবার নির্বাচন মিটলেই বিশ্বভারতীর উপাচার্যকে শিক্ষা দেওয়া হবে বলে প্রকাশ্য মঞ্চ থেকে রীতিমতো হুঁশিয়ারি দিলেন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। স্বাভাবিকভাবেই তার এই মন্তব্যকে কেন্দ্র করে এখন রীতিমত চর্চা শুরু হয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে।

হঠাৎ করে কেন বিশ্বভারতীর উপাচার্যকে এই ধরনের হুঁশিয়ারি দিতে উদ্যত হলেন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি! এখন তা নিয়ে নানা মহলে উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত 15 মার্চ গুগোল মিটে বিশ্বভারতীর অধ্যাপকদের সঙ্গে একটি বৈঠক করেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। পরবর্তী সময়ে সেই অডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়ে যায়। আর সেখানেই বিদ্যুৎবাবুকে বলতে শোনা যায়, “বিশ্বভারতী যাতে বন্ধ হয়ে যায়, সেই ব্যবস্থা আমি করে দিয়ে যাব। আমি কাউকে ধুমকি দিচ্ছি না।”

স্বাভাবিক ভাবেই এই ঘটনার পরেই মঙ্গলবার বোলপুরের একটি প্রেক্ষাগৃহে গন কনভেনশনের ডাক দেয় তৃণমূল কংগ্রেস। মঙ্গলবার সেখানে উপস্থিত ছিলেন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। আর সেখানেই বিশ্বভারতীর উপাচার্যকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন তিনি।

অনুব্রত মণ্ডল বলেন, “এমন একজন ভিসি এসেছেন, যিনি ভয়ঙ্কর পাগল লোক। এমন পাগল দেখা যায় না। এত বাজে ভিসি আমরা কোনদিন দেখিনি। হাইকোর্টের রায় আছে, সকাল ছয়টা থেকে রাত 8 টা পর্যন্ত সব গেট খুলে রাখতে হবে। কিন্তু এত বড় পাগল যে, সব গেট লাগিয়ে দিয়েছে। উনি ভাবছেন, হাতে একটা বিধায়ক থাকলে আমি বিশ্বভারতীতে যা মন তাই করতে পারব। পারবে না। তোমার ক্ষমতা নেই। নির্বাচন পেরিয়ে গেলে তোমাকে যে শিক্ষা আমরা দেব, বোলপুরবাসি যে শিক্ষা দেবে, তা তুমি সারা জীবন মনে রাখবে।”

আর অনুব্রত মণ্ডলের এই মন্তব্য নিয়েই এখন নানা মহলে তৈরি হয়েছে গুঞ্জন। একজন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উপাচার্যের উদ্দেশ্যে এই ধরনের মন্তব্য কি করা সাজে? বর্তমানে নির্বাচনের মরশুম। তার মধ্যে উপাচার্যের উদ্দেশ্যে অনুব্রত মণ্ডলের এই ধরনের মন্তব্য যে বিরোধীদের হাতে বাড়তি হাতিয়ার তুলে দেবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এমনিতেই অনুব্রতবাবুর বিরুদ্ধে নানা সময়ে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ তোলে বিরোধীরা। কমিশনের পক্ষ থেকে ভোটের সময় তিনি বাড়তি নজরদারির মধ্যে থাকেন।

আর এই পরিস্থিতিতে কনভেনশনে উপস্থিত হয়ে বিশ্বভারতীর উপাচার্যের উদ্দেশ্যে ভোট মিটতে ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়ায় অনুব্রতবাবু যে কার্যত বিতর্কের মুখে পড়ে গেলেন, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে শুধু অনুব্রত মণ্ডল নয়, ভোটের মুখে এই ধরনের ঘটনায় তৃণমূল কংগ্রেস অনেকটাই অস্বস্তিতে বলে দাবি করছেন বিশ্লেষকরা। সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।