নির্ভয়ার চার ধর্ষকের ফাঁসির ওপর আপাতত স্থগিতাদেশ জাতীয় January 16, 2020 2012 সালের 16 ই ডিসেম্বর সারাদেশ নৃশংসতার ভয়াবহতায় কেঁপে উঠেছিল। ওই রাতের কয়েক ঘণ্টার বর্বরতায় স্তব্ধ হয়ে যায় গোটা দেশ। লজ্জায় মাথা হেঁট হয়ে যায় আপামর ভারতবাসীর। নৃশংসতার নতুন সংজ্ঞা তৈরি করে দিল্লির গণধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ড। 23 বছর বয়সী এক যুবতীকে প্রাইভেট বাসে 6 জন ব্যক্তি লাগাতার ধর্ষণ করে তাঁর ওপর অকথ্য শারীরিক অত্যাচার করে রাস্তায় ফেলে রেখে চলে যায়। ঘটনার পর ওই যুবতীকে চিকিৎসা করা হয় এবং পরবর্তীকালে ওই যুবতী মৃত্যুবরণ করে। এই মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয় চারজন। আগামী 22 শে জানুয়ারি ফাঁসি হওয়ার কথা ছিল এই চারজনের। কিন্তু আইনি মারপ্যাঁচে এই ফাঁসির দিন আপাতত রদ করল হাইকোর্ট। আপাতত নির্ভয়ার চার ধর্ষক ফাঁসির হাত থেকে মুক্তি পেল। দিল্লি হাইকোর্ট থেকে শুনানী চলাকালীন সরকারি আইনজীবীরা এ কথা জানিয়েছেন। উল্লেখ্য, এই মামলায় অন্যতম দোষী মুকেশ সরাসরি রাস্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চেয়েছে। সেই আর্জি এখনো পর্যন্ত খারিজ করেননি রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। এবং যতদিন না তিনি খারিজ করবেন, ততদিন পর্যন্ত এই চার ধর্ষকের ফাঁসি হবেনা। এদিন শুনানি চলাকালীন দিল্লি সরকারের আইনজীবীরাও জানান, বাকি দুজন এখনো আদালতে ‘কিউরেটিভ’ আর্জি জানায়নি। এমনকি রাষ্টপতির কাছেও তাঁরা প্রাণভিক্ষা করেনি। তাই যে মুহূর্তে তাঁরা রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন জানাবে, সেই মুহুর্তে আবারও ফাঁসির দিনক্ষণ পিছিয়ে যাবে। বোঝাই যাচ্ছে, আইনি জটিলতার গেরোয় নির্ভয়া কাণ্ডের দোষীরা বারবার পার পেয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে, সরকারি আইনজীবীরা জানিয়েছেন, যদি বুধবারও প্রাণভিক্ষার আর্জি রাষ্ট্রপতি খারিজ করে দেন, তাহলেও কোনমতেই 22 তারিখ ফাঁসি হওয়া সম্ভব নয়। কারণ বিভিন্ন নিয়ম কানুনের বাধা টপকাতে বেশ কিছুদিন সময় লাগবে। পাশাপাশি মুকেশ দিল্লি হাইকোর্টে তাঁদের মৃত্যু পরোয়ানায় স্থগিতাদেশ চেয়েছে। তার বক্তব্য যতদিন না রাষ্ট্রপতি তাঁদের প্রাণভিক্ষার আর্জি খারিজ করে দিচ্ছেন, ততদিন যেন তাঁদের ফাঁসি না হয়। অন্যদিকে, নির্ভয়ার মা রাষ্টপতির কাছে আবেদন জানিয়েছেন, কোনভাবেই যেন নির্ভয়ার ধর্ষণকারীদের প্রাণভিক্ষার আবেদন মানা না হয়। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - প্রসঙ্গত, গত 27 জানুয়ারি নির্ভয়া কাণ্ডে ধৃত চারজনকে 22 শে জানুয়ারি ফাঁসির আদেশ দেয় দিল্লি পাতিয়ালা হাউস। আর এর পরেই সরাসরি সুপ্রিম কোর্টে তাঁদের ফাঁসির আদেশ পুনর্বিবেচনার দাবি জানায় দুই ধর্ষক বিনয় শর্মা ও মুকেশ কুমার। এরই পরিপ্রেক্ষিতে পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ নির্ভয়ার ধর্ষণকারী ও হত্যাকারীদের মৃত্যুদণ্ড মকুবের যে আবেদন ছিল তা খারিজ করে দেয়। এর আগেও সুপ্রিম কোর্টে রিভিউ পিটিশন দিয়েছিল মুকেশ ও বিনয়। সুপ্রিম কোর্ট তা আগেই খারিজ করে দিয়েছে। উল্লেখ্য, নির্ভয়ার ধর্ষণকারী চার অভিযুক্ত বারংবার সুপ্রিম কোর্টের কাছে তাঁদের সাজা মকুবের আর্জি জানিয়েছে, কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট বারংবার সেই আবেদন নাকচ করে দেয়। সবমিলিয়ে দিল্লি পাটিয়ালা হাউস কোর্টের নির্দেশ মতো আগামী 22 জানুয়ারি চার আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর আপাতত আইনি গেরোয় আটকে রইল। উল্লেখ্য, মঙ্গলবার শেষ আইনি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে দন্ডপ্রাপ্ত মুকেশ ও বিনয়ের ক্ষমার আবেদন বাতিল করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। এর পরেই শেষ ভরসা হিসেবে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে প্রাণভিক্ষার আর্জি জানায় মুকেশ। অতএব নির্ভয়ার ধর্ষণকারীদের সাজা দিতে পারেন একমাত্র রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। রাষ্ট্রপতি যদি তাঁদের আবেদন বাতিল করে দেন, তাহলে তাঁদের কাছে ফাঁসির সাজা এড়ানোর আর কোন রাস্তা থাকবে না। আপাতত দেশের ওয়াকিবহাল মহলের নজর থাকবে রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্তের ওপর। আপনার মতামত জানান -