তিন মাস পেরিয়ে গেলেও ভারতী ঘোষের নামে জমা পড়ল না চার্জশীট, বাড়ছে জল্পনা বিশেষ খবর রাজ্য May 6, 2018 এক নয় একাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছে একদা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ঘনিষ্ঠ পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রাক্তন পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষের বিরুদ্ধে। একের পর এক দায়ের করা মামলাগুলির মধ্যে প্রথমটি দায়ের করার পরে ৯০ দিন অতিক্রান্ত। বাকি দুটিও অল্প দিনের মধ্যেই ৯০ দিন অতিক্রম করবে। কিন্তু অবিশ্বাস্য হলেও এখনও একটি মামলারও চার্জশিট জমা পড়লো না। এদিকে প্রতারণা ও সোনা লুটের মামলায় মূল অভিযুক্ত ভারতী ঘোষ এখনও আত্মগোপন করে রয়েছেন। আইনজীবিদের একাংশ মনে করছেন এই মামলায় এখনও পর্যন্ত অভিযুক্ত সন্দেহে যাঁরা গ্রেফতার হয়েছেন ৯০ দিনের মধ্যে চার্জশিট জমা না পড়লে তাঁরাও একে একে জামিন পেয়ে যেতে পারেন। প্রসঙ্গত, ঐ মামলায় অভিযুক্ত বিমল ঘড়ুই নামে যে সোনা ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয়েছিলেন, শুক্রবারেই তিনি ঘাটাল মহকুমা আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন। ভারতী দেবীর বাইপাস সংলগ্ন আবাসনের গ্রেফতার হওয়া কেয়ারটেকার রাজমঙ্গল সিংহও ঘাটাল মহকুমা আদালতে জামিন পেয়ে গিয়েছেন। আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে সিআইডি সূত্রের খবর, ফেব্রুয়ারী মাসের প্রথম সপ্তাহে পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর ও খড়্গপুর লোকাল থানায় ভারতী দেবী সহ ছজন পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে সোনা লুট ও প্রতারণার মামলা দায়ের করে সিআইডি। এরপরে এই মামলায় অভিযুক্ত ভারতী দেবীর ঘনিষ্ঠ সিআই শুভঙ্কর দে, ওসি প্রদীপ রথ, কনস্টেবল সঞ্জয় মাহাতো, প্রাক্তন ওসি চিত্ত পাল এবং পুলিশকর্মী দেবাশিস দাসকে গ্রেফতার করা হয়। এদিকে ভারতী দেবীর বিরুদ্ধে সিআইডির দায়ের করা মামলার প্রসঙ্গে আইনজীবিদের একাংশ দাবি করলেন ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৬৭ ধারা অনুযায়ী মামলা শুরুর ৯০ দিনের মধ্যে চার্জশিট পেশ না করলে অভিযুক্তদের জামিন পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়। এখন স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে সময়মতো চার্জশিট পেশ করা হল না কেন? যদিও এই প্রসঙ্গে নিরুত্তর সিআইডি, ফলে তীব্র হচ্ছে জল্পনা। এই মামলা প্রসঙ্গে এক সিআইডি কর্তার দাবি, মূল অভিযুক্ত ভারতী ঘোষ ধরা না-পড়ায় ঘটনার তদন্ত শেষ করা যায়নি। তাই চার্জশিট জমা দেওয়া হয়নি। এর পরিপ্রেক্ষিতে আইনজীবী মহল বলছে, ভারতীদেবীকে পলাতক দেখিয়েও তো চার্জশিট জমা দেওয়া যেত! সেটা করা হল না কেন? এই প্রশ্নের উত্তরও পাওয়া যায় নি সিআইডির তরফে। অবশ্য বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর থেকে জানা যাচ্ছে, তদন্তকারীদের একাংশের মতে, চার্জশিট পেশের বিষয়ে প্রশাসনের শীর্ষস্তরকেও সেভাবে উদ্যোগী হতে দেখা যায়নি। প্রসঙ্গত, প্রাক্তন পুলিশ কর্তা ভারতী ঘোষ অল্প কদিন আগেও রাজ্যের শাসক দলের অতি ঘনিষ্ঠ ছিলেন। কিন্তু তিনি চাকরি থেকে পদত্যাগ করতেই, আচমকাই সিআইডি তাঁর বিরুদ্ধে প্রতারণা মামলা দায়ের করে। তাঁর ঘনিষ্ঠ অফিসারদের গ্রেফতার করা হয়, ভারতী ঘোষের বাড়ি সহ বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে নগদ টাকা ও গয়না বাজেয়াপ্ত করা হয়। সেই সময়ে ‘ভয়েস মেসেজ’ মারফত ভারতীদেবী বারবার সিআইডির কাজকর্মের নিন্দা করে নিজের প্রতিক্রিয়া জানান। কিন্তু বিগত দু মাস যাবত ভারতীদেবীর তরফ থেকে কোনো ভয়েস মেসেজ পাওয়া যায়নি। এমত অবস্থায় ভারতী দেবীর সঙ্গে ‘সমঝোতা’র সূত্র পাওয়া গিয়েছে কী না এই প্রশ্ন কে ঘিরে পুলিশ মহলে জল্পনা শুরু হয়েছে। আশ্চর্যজনক ভাবে এই প্রশ্নের কোনো প্রত্যক্ষ জবাবও পাওয়া যাচ্ছে না। তবে আইনজীবীদের একাংশ ৯০ দিনের মধ্যে চার্জশিট পেশ না করাটা সম্ভাব্য সমঝোতারই সঙ্কেত বলেই মনে করছেন । তাঁরা বলছেন, এই মামলায় ধৃতেরা একে একে জামিন পেয়ে গেলে, তার পরে আত্মসমর্পণ করে অনায়াসে জামিন পেয়ে যেতে পারেন ভারতীদেবীও। ফলে সব মিলিয়ে ভারতী ঘোষ কান্ড নিয়ে তীব্র জল্পনা ছড়াচ্ছে রাজনৈতিক মহলে। আপনার মতামত জানান -