প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – একসময় তৃণমূল দলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড ছিলেন বাংলার রাজনীতির চাণক্য মুকুল রায়। পরবর্তীকালে দলের সঙ্গে মতবিরোধের কারণে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে আগমন তাঁর। গত ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে তিনি যথেষ্ট সাফল্য এনে দিতে পেরেছেন দলকে। এ কারণেই বঙ্গ বিজেপির রাস ধীরে ধীরে তাঁর হাতে চলে যাচ্ছে।

জাতীয় নেতৃত্বর যেমন আস্থা রয়েছে তাঁর প্রতি, তেমনি ভরসা করছেন তাঁকে স্থানীয় নেতৃত্ব। মুকুল রায়ের প্রভাব দলে যেমন বাড়ছে, সে তুলনায় একটু একটু করে যেন ম্রিয়মান হয়ে পড়ছেন দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। আগামীদিনে এই প্রবণতা বাড়তে চলেছে বলে অনেকে মনে করছেন। প্রসঙ্গত নবান্ন অভিযানের দিন এমন ঘটনার ছবি বেরিয়ে এলো।

বস্তুত গত বৃহস্পতিবারের নবান্ন অভিযান অভিযানের মূল চালিকাশক্তি হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন মুকুল রায় ও তাঁর অনুগামীরাই। কলকাতা, হাওড়ার একাধিক মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন তিনি ও তাঁর অনুগামীরা। বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে নেতৃত্ব দিলেন দলকে দিলেন তাঁরা। সে তুলনায় অনেকটা কম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করতে দেখা গেল রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে।

বিজেপির পক্ষ থেকে প্রথমে পরিকল্পনা করা হয়েছিল যে, সেদিন বিজেপি সংসদ অর্জুন সিং রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষকে সঙ্গে নিয়ে বিজেপির সদর দপ্তর থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করবেন। কিন্তু পরবর্তীকালে অর্জুন সিং তাঁর অনুগামীদের নিয়ে বড়বাজারের পরিবর্তে গেলেন হেস্টিংসে। যেখানে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন মুকুল রায়।

পরিকল্পনা মতো বড়বাজার, হেস্টিংস, সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ, সাঁতরাগাছি থেকে নবান্নর দিকে প্রতিবাদ মিছিল শুরু হবার কথা ছিল, কিন্তু দেখা গেল প্রাক্তন তৃণমূল নেতা সব্যসাচী দত্ত, শঙ্কুদেব পান্ডা উপস্থিত হয়েছেন মুকুল রায়ের কাছে। আর সেখানেই এলেন বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতা অরবিন্দ মেনন ও কৈলাস বিজয়বর্গীয়।

আবার বিজেপির যুব মোর্চার সর্বভারতীয় সভাপতি তেজস্বী সূর্য হাওড়া ময়দানে যখন সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন। সেসময় সমাবেশকে নেতৃত্ব দিলেন রাজ্য বিজেপির যুব মোর্চার সভাপতি সৌমিত্র খান। তিনিও মুকুল ঘনিষ্ঠ। প্রসঙ্গত নবান্ন অভিযানে রাজ্য বিজেপির পুরানো নেতাদের মধ্যে একমাত্র নেতৃত্ব দিলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ বিজেপির সদর দপ্তর থেকে। তবে, তাঁর সঙ্গে দেখা গেল না বিজেপির কোন পুরোনো নেতাকে।

রাহুল সিনহা সম্পূর্ণ অনুপস্থিত থাকলেন এই কর্মসূচিতে। এই প্রথম তিনি বিজেপির কর্মসূচি থেকে অনুপস্থিত থাকলেন। তবে পরে বিজেপি কর্মীদের প্রতি পুলিশের নির্যাতনে তৃণমূল সরকারকে অভিযুক্ত করে কয়েকটি টুইট করেছেন তিনি।

প্রসঙ্গত মুকুল রায় বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতির পদ লাভ করেছেন। এ কারণেই পদাধিকারী হিসেবে তিনি অনেকটাই উচ্চতায় চলে গেছেন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের থেকে। আবার তৃণমূলকে দমন করতে তাঁর উপরে যথেষ্ট ভরসা রেখে যাচ্ছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃত্ব। তাই তাঁর প্রভাব ক্রমশ বাড়ছে রাজ্য বিজেপিতে।