এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > নেতৃত্বকে অন্ধকারে রেখে নিজের মত কমিটি সাজাতে গিয়ে বড়সড় শাস্তির মুখে প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা

নেতৃত্বকে অন্ধকারে রেখে নিজের মত কমিটি সাজাতে গিয়ে বড়সড় শাস্তির মুখে প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা


করোনা ভাইরাসের কারণে এখন সমস্ত রকম রাজনৈতিক রণকৌশল থেকে কর্মসূচি বন্ধ রয়েছে। প্রত্যেকেই সাধারণ মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করছেন। তবে এমন একটা সময়ে দলের নেতৃত্বকে অন্ধকারে রেখে নিজের মত করে কমিটি তৈরি করার অভিযোগ উঠল কুচবিহার শীতলকুচি বিধানসভার তৃণমূল নেতা সাহের আলি মিয়ার বিরুদ্ধে। যার ফলে দলের বিরুদ্ধে গিয়ে পৃথকভাবে এই কমিটি করার জন্য সেই তৃণমূল নেতাকে দল থেকে শোকজের কথা জানিয়ে দেন কোচবিহার জেলা তৃণমূল সভাপতি বিনয় কৃষ্ণ বর্মন।

আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই এখন আলোড়ন পড়ে গিয়েছে কোচবিহার জেলা জুড়ে। বস্তুত, এই সাহের আলি মিয়া শীতলকুচি ব্লকের তৃণমূলের হেভিওয়েট নেতা হিসেবে পরিচিত। দীর্ঘদিন ধরে তিনি তৃণমূল কিসান ক্ষেতমজুর এবং শ্রমিক সংগঠনের ব্লক সভাপতি পদে ছিলেন। অতীতেও তাকে দল বিরোধী কাজের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে তাকে আবার দলে জায়গা দেওয়া হয়। কিন্তু পদ নেওয়ার পর বিভিন্ন সময়ে ব্লক সভাপতির সঙ্গে তার গন্ডগোল রীতিমত অস্বস্তিতে ফেলে তৃণমূল কংগ্রেসকে।

তবে নেতৃত্ব এতকিছু প্রত্যক্ষ করার পরেও গত লোকসভা নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর শীতলকুচি বিধানসভায় কমিটি গঠন করে সেখানে সাহের আলী মিয়াকে রাখে। কিন্তু বর্তমানে আশ্চর্যজনকভাবে সেই সাহের আলি মিয়া বিধানসভা ভিত্তিক কমিটির চেয়ারম্যান হিতেন বর্মনকে কিছু না জানিয়েই শালবাড়ি, গোলেনাওহাটি এবং শীতলকুচি অঞ্চলের কমিটি গঠন করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে। আর দলের নেতৃত্বকে না জানিয়ে কেন এভাবে তিনি এই কমিটি গঠন করলেন, তা নিয়ে এখন প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে জেলা নেতৃত্বের মধ্যে।

যার পরে সেই তৃণমূল নেতাকে দল থেকে শো কাজের কথা ঘোষণা করেন কোচবিহার জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা মন্ত্রী বিনয় কৃষ্ণ বর্মন। এদিন তিনি বলেন, “শীতলকুচির তৃণমূল বিধায়ক তথা তৃণমূলের বিধানসভা ভিত্তিক কমিটির চেয়ারম্যান হিতেন বর্মন। তিনি সাহের আলি মিয়ার বিরুদ্ধে রাজ্য নেতৃত্বকে নালিশ করেছি। আমি রাজ্য নেতৃত্বে নিদের্শে তাকে শোকজ করেছি। সঠিক জবাব না পেলে দল থেকে ওকে বহিষ্কার করা হবে।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিকে এই ব্যাপারে সেই তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে সরব হয়ে শীতলকুচি বিধানসভার তৃণমূল বিধায়ক হিতেন বর্মণ বলেন, “বর্তমানে করোনা পরিস্থিতির কারণে দল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে সমস্ত রকম দলীয় কর্মসূচি স্থগিত রাখা হয়েছে। কিন্তু শীতলকুচি ব্লকের তৃণমূল নেতা সাহের আলি মিয়া কাউকে না জানিয়ে ব্লকের আটটি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েতে কমিটি গঠন করেছেন। এতে দলীয় কর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে।”

তিনি আরও জানান, “দলের শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য জেলা ও রাজ্য নেতৃত্বকে এটা জানানো হয়েছে। জেলা নেতৃত্ব সাহের আলি মিয়াকে শোকজ করেছে। সাত দিনের মধ্যে সন্তোষজনক জবাব না দিতে পারলে দল ওর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেবে।” কিন্তু এই ব্যাপারে কি বলছেন সেই অভিযুক্ত সাহের আলী মিয়া? এদিন তিনি বলেন, “আমি শোকজের চিঠি পেয়েছি। জেলা নেতৃত্বকে যথা সময়ে উপযুক্ত কারণ জানিয়ে দেব। হিতেনবাবু এখন অনেক কিছুই বলতে পারেন। তবে আমি এখনই কিছু বলছি না। কয়েকদিনের মধ্যে সাংবাদিক সম্মেলন করে আমি সমস্ত বিষয় পরিষ্কার করে দেব।”

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কিছুদিন আগেই কোচবিহার জেলায় তৃণমূলের এক জেলা পরিষদের সদস্যের বিরুদ্ধে শিক্ষিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল। যার পরেই সেই তৃণমূল নেতাকে দল থেকে সাসপেন্ডের কথা ঘোষণা করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। আর এবার দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে এই তৃণমূল নেতাকে যেভাবে শোকজ করা হল, তাহলে তাকেও কি থেকে সাসপেন্ড করা হবে! এখন এই প্রশ্নের উত্তর খুজছেন সকলে।

তবে একাংশ বলছেন, কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেস পরাজিত হওয়ার পর আগামী বিধানসভায় কোচবিহার জেলায় যাতে ভালো ফলাফল হয়, তার জন্য একদিকে স্বচ্ছ ভাবমূর্তির নেতাদের আনা আর অন্যদিকে যাতে শৃঙ্খলা রক্ষা করা যায়, এই বিষয়কে মান্যতা দিয়েই তৃণমূল এখন পথ চলতে চায়। তাই কারো বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ উঠলেই এখন বিন্দুমাত্র সময় নষ্ট না করে তাদেরকে শাস্তি দিতে চাইছে জেলা নেতৃত্ব। এখন গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, তার দিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!