এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > নাগরিকত্ব সংশোধনীর বিপক্ষে গিয়ে চাপে পড়ল রাজ্য, জোর চাঞ্চল্য

নাগরিকত্ব সংশোধনীর বিপক্ষে গিয়ে চাপে পড়ল রাজ্য, জোর চাঞ্চল্য

 

সম্প্রতি সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতা করে রাজ্যজুড়ে বিভিন্ন জায়গায় যে সহিংস আন্দোলন এবং ভাঙচুর, লুটতরাজ, সরকারি সম্পত্তি ধ্বংস ইত্যাদি আইন-শৃঙ্খলা ধ্বংসকারী গতিবিধি পরিলক্ষিত হয়েছিল, তার জন্য বেশ কিছু এলাকায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য প্রশাসন।

আর এবার ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ নিয়ে একটি জনস্বার্থ মামলার ভিত্তিতে প্রশাসনের ওই সিদ্ধান্তকে রীতিমতো প্রশ্নের মুখে ফেলে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত সপ্তাহের শুক্রবার থেকেই সংশোধিত নাগরিক আইনের বিরোধিতা করে। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় আন্দোলনের নামে সরকারি বাস থেকে শুরু করে দোকানপাশার, রেল স্টেশন ইত্যাদি জায়গায় বিক্ষোভকারীরা রীতিমতো ধ্বংসলীলা চালায়। অনেকগুলো রেলকে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।

 

উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ থেকে শুরু করে বেসরকারি বাসগুলোতে ভাঙচুর চালানো হয়। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় রাস্তার মধ্যে। গাড়ির টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ সহ কোনো কোনো জায়গায় আক্রান্ত হন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী থেকে শুরু করে দলীয় কার্যালয়। তাই যেন কোনভাবেই রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ধ্বংস না হয়, তার জন্য আসরে নামতে দেখা যায় স্বয়ং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়কে।

আইনশৃঙ্খলা ধ্বংসকারীদের যে কোনোভাবেই রেয়াত করা হবে না, তা স্পষ্ট ভাবে বুঝিয়ে দেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। সেইমতো কড়া হাতে বিভিন্ন ধরনের বিক্ষোভ এবং ধ্বংসাত্মক গতিবিধি দমন করতে দেখা যায় রাজ্য প্রশাসনকে। কোনোমতেই যেন কুৎসা ছড়িয়ে না পড়ে এবং উত্তেজনাপূর্ণ অপপ্রচারের মাধ্যমে যেন হিংসা না ছড়ায়, সেজন্য বেশকিছু এলাকায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করা হয়।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

কিন্তু সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন এলাকায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করাকে নিয়ে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়। সেই মামলার শুনানি করতে গিয়ে রাজ্য সরকারের ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করাকে প্রশ্নের মুখে পড়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। এই বিষয়ে আদালত জানিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে ইন্টারনেট ও মোবাইল পরিষেবা বন্ধ রাখা যায় না। তা করতে গেলে উপযুক্ত কারণ থাকা বাঞ্ছনীয়।

পাশাপাশি ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করার উপযুক্ত কারণ দেখিয়ে সরকারকে আদালতের কাছে ফলকনামা জমা দিতে বলা হয়েছে। বস্তুত, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরোধিতা করে শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গে নয়, দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর পাশাপাশি রাজস্থান থেকে শুরু করে মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ থেকে শুরু করে বিহার সর্বত্রই আন্দোলন দানা বেঁধেছে। বিশেষত, পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে গত সপ্তাহের শুক্রবার থেকে যে সমস্ত বিধ্বংসী ঘটনা সামনে আসছিল, তার পিছনে বহিরাগত কিছু দুষ্কৃতী চক্রের হাত রয়েছে বলে ধারণা করেছে রাজ্যের গোয়েন্দা বিভাগ।

এই সমস্ত দুষ্কৃতীরা ধর্মের নামে, বর্ণের নামে রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিহিংসামূলক ভিডিও থেকে শুরু করে ছবি ইত্যাদি উস্কানিমূলক জিনিস বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করে মানুষের মধ্যে হিংসা ছড়াতে পারে। এই আশঙ্কায় বিভিন্ন স্পর্শকাতর এলাকায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য প্রশাসন। কিন্তু এই সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চ আদালতের পর্যবেক্ষণে কিছুটা অস্বস্তিতে পড়ল রাজ্য সরকার বলে মত বিশেষজ্ঞদের।

এই বিষয়ে মামলাকারীর আইনজীবী সরজিত রায়চৌধুরী রীতিমতো প্রশ্ন তোলেন, গত তিন দিনের কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু গতকাল হাওড়া জেলাশাসক অশান্তির আচ করে বিক্ষোভের আশঙ্কা করে আগাম সর্তকতা জারি করেছেন। আইনজীবীর এই প্রশ্নে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির তরফ থেকে বলা হয়, অনেক সময় রাজ্যের দপ্তরগুলির মধ্যে তার মিলের অভাব থাকে। এই বিষয়ে উচ্চ আদালতের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, দীর্ঘদিন ধরে ইন্টারনেট ও মোবাইল পরিষেবা বন্ধ রাখা যায় না, তা করতে গেলে উপযুক্ত কারণ থাকা বাঞ্ছনীয়।

সেই কারণেই এই বিষয়ে রাজ্য সরকারের কাছে রীতিমতো হলফনামা চেয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। আর এই হলফনামা জমা দেওয়ার জন্য সোমবার পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে উচ্চ আদালত। জানা যাচ্ছে, সোমবার দুপুর বারোটায় ফের এই মামলার শুনানি হবে। রাজ্য সরকারের পাশাপাশি রিপোর্ট জমা দিতে হবে ভারত সরকারের রেল মন্ত্রককেও। এখন ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ নিয়ে এই মামলার পরবর্তী শুনানিতে আদালত কোন পথে হাঁটে! রাজ্য সরকার! বা নিজেদের নীতি কিভাবে নির্ধারণ করে! সেদিকেই লক্ষ্য থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!