এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > এনআরসি নিয়ে তৃণমূলকে তুলোধোনা করলেন অমিত শাহ! স্বস্তির হাওয়া বাংলা জুড়ে

এনআরসি নিয়ে তৃণমূলকে তুলোধোনা করলেন অমিত শাহ! স্বস্তির হাওয়া বাংলা জুড়ে

এনআরসি অর্থাৎ জাতীয় নাগরিকপঞ্জী অসমে লাগু হওয়ার পর থেকেই বাংলায় তা নিয়ে রাজনৈতিক উত্তাপ ছড়াতে শুরু করে। অসমের জাতীয় নাগরিকপঞ্জি তালিকা থেকে অনেক হিন্দু বাঙালিকে বাদ রাখা হয়েছে বলে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হতে দেখা যায় বাংলার শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে। পাল্টা এই ব্যাপারে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব জানিয়ে দেয়, অসমের পর এবার বাংলাতেও এনআরসি লাগু করা হবে।

তবে বিজেপির নেতাদের এহেন বক্তব্যের বিরুদ্ধে সরব হয়ে বিভিন্ন জায়গায় সভা-সমিতি করার পাশাপাশি তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাস্তায় মিছিল করতে দেখা যায়। যার পরে এনআরসি ইস্যু নিয়ে কেন্দ্র বনাম রাজ্যের রাজনৈতিক সম্পর্কের তিক্ততার পারদ আরও চড়তে শুরু করে। তবে বরাবরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস দাবি করে এসেছে, আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। বাংলায় এনআরসি করা হবে না।

কিন্তু সত্যিই কি তাই! পরস্পর দুই ভিন্ন মেরুতে অবস্থানকারী দুটি রাজনৈতিক দল একজন “এনআরসি হবে”, আরেকজন “এনআরসি হবে না” বলে জানালেও বিজেপির সর্বভারতীয় অধ্যক্ষ তথা দেশের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক এই ব্যাপারে ঠিক কি বলছে! তার দিকে নজর ছিল সকলেরই। সেইমতো আজ নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে সেই অমিত শাহর সভার দিকে তাকিয়ে ছিল রাজনৈতিক মহল।

আর এদিন বিজেপি অধ্যক্ষ তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সেই নেতাজি ইন্ডোরের সমাবেশ থেকে এনআরসি ইস্যুতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূল কংগ্রেসের বিরোধিতা নিয়ে রাজ্যের শাসক দলকে কোণঠাসা করে দেওয়ার চেষ্টা করলেন। সূত্রের খবর, এদিন বক্তব্য রাখতে উঠে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি বলেন, “মমতাদিদি নিজেই একসময় অনুপ্রবেশকারীদের বার করে দেওয়ার কথা বলতেন। এখন ভোটব্যাঙ্কের কথা মাথায় রেখে উনি এনআরসি হতে দিতে চাইছেন না। মানুষের মনে ভীতি সৃষ্টি করতে ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যে কথা রটানো হচ্ছে। বলা হচ্ছে, হিন্দুদের তাড়িয়ে দেওয়া হতে পারে। কিন্তু হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ শরণার্থীদের কেউ দেশ ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য করবে না। নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাস হলে শরণার্থীরাও দেশের নাগরিক হিসেবে সমস্ত অধিকার ও সুযোগ সুবিধা পাবেন।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

অর্থাৎ সমালোচকদের একাংশ এনআরসি নিয়ে বিজেপির একতরফা নীতিকে কটাক্ষ করলেও এদিন সেই সমালোচকদের মুখে কার্যত ঝামা ঘষে দিয়ে সকলকে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে বলে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ বলে মত বিশ্লেষকদের।

এদিন এনআরসির পাশাপাশি বাংলার সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়েও তৃণমূলকে তুলোধোনা করেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি। তিনি বলেন, “দিদি রাজনৈতিক স্বার্থ দেশের উর্ধ্বে নয়। আমরা সেকথা মাথায় রেখেই কাজ করছি। সারদা, রোজভ্যালি দুর্নীতি, সিন্ডিকেট রাজত্ব নিয়ে কিছু বলব না। কিন্তু দরিদ্র মানুষের জন্য আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প বাংলার মানুষের কাছে মমতাদি পৌছতে দেননি। নিজের জনপ্রিয়তা বেড়ে যাবে বলে তা উনি চালু হতে দেননি। এই রাজ্যে রামনবমী পালনে বাধা সৃষ্টি করার ক্ষমতা কারও নেই। এবার বিজেপিকে সরকার করতে দিন। তাহলে বাংলার ভোল পাল্টে যাবে।”

অন্যদিকে নিজের সফরের মাহাত্ম্যকে আরও বেশি করে তুলে ধরতে দুর্গাপূজো নিয়েও এদিন তৃণমূলকে কটাক্ষ করেন অমিত শাহ। তিনি বলেন, “বাংলার আইন-শৃংখলার ঠিক কি পরিস্থিতি, তা আপনারা ভাল করেই জানেন। আপনারা আমাদের আঠারোটা আসন দিয়েছেন, আর তাতেই ফল দেখুন। আগে দূর্গাপূজার বিসর্জনের জন্য আদালতে ছুটতে হত। আর আমি আজ নিজে এসেছি, মা দুর্গার আরতী করার জন্য।”

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, বাংলার প্রিয় উৎসব দুর্গোৎসবকেও হাতিয়ার করে এদিন তৃণমূলের বিরুদ্ধে সরব হয়ে বাংলার ভাবাবেগকে নিজেদের বাগে আনার চেষ্টা করলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি। নিজের বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে একদিকে যেমন এনআরসি ইস্যুতে তৃণমূলের বক্তব্য খন্ডন করার চেষ্টা করলেন, ঠিক তেমনই রাজ্যে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে ক্ষমতায় আনার আহ্বান জানিয়ে বাংলা ও বাঙ্গালির সাথে থাকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করতে দেখা গেল বিজেপি অধ্যক্ষকে। আর অমিত শাহর এদিনকার এই বক্তব্য যেমন বিজেপি নেতা কর্মীদের উজ্জীবিত করল, ঠিক তেমনই বাংলার সাধারন মানুষদেরও নতুন রাজনৈতিক পথ খুঁজতে সাহায্য করল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!