এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > এবার সাধারনের হেঁসেল হানা দিচ্ছে তৃনমূল, চাপ বাড়ছে বিজেপির

এবার সাধারনের হেঁসেল হানা দিচ্ছে তৃনমূল, চাপ বাড়ছে বিজেপির

কোচবিহার জেলাতে রীতিমত নজিরবিহীন পদ্ধতিতে একেবারে সাধারণ মানুষের ঘরে ঢুকে এনআরসি এবং সিটিজেনশিপ আমেন্ডমেন্ট অ্যাক্টের ভয়াবহতা সম্পর্কে মানুষকে বোঝাতে দেখা গেল তৃণমূল মহিলা কর্মী সমর্থকদের। শুধুমাত্র তাই নয়, কোচবিহারের বর্তমান পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে, হাতে কিছু কাগজপত্র নিয়ে একদল মহিলা রীতিমত পৌঁছে যাচ্ছে রান্নাঘর পর্যন্ত। সেখানে গিয়ে বাড়ির গৃহকর্ত্রীকে এনআরসি এবং সিটিজেনশিপ আমেন্ডমেন্ট অ্যাক্টের সম্পর্কে তৃণমূলের চিন্তাধারা বোঝাচ্ছে।

জেলাজুড়ে এই কর্মসূচি গ্রহণ করতে দেখা যাচ্ছে তৃণমূল মহিলা কংগ্রেসের কর্মী সমর্থকদেরকে। এদিকে শুধু বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার নয়, রীতিমত পথে-ঘাটে মিছিলে সর্বোপরি সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে এনআরসি এবং সিএএ বিরোধী রাজনৈতিক প্রচার রীতিমতো তুলে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।

এছাড়াও পোষ্টার ছাপিয়ে লিফলেট ছাপিয়ে মানুষের মধ্যে সংশোধিত নাগরিক আইন এবং জাতীয় নাগরিক পঞ্জী ভয়াবহতা সম্পর্কে জনমানসে প্রচারের কাজকর্ম চলছে। এদিন এই বিষয়ে কোচবিহার জেলা তৃণমূলের সভাপতি বিনয় কৃষ্ণ বর্মন বলেন, “নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন ও এনআরসি মানুষের উপকারের জন্য নয়। মানুষকে বিপদের মুখে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। এই রাজ্যে কোনটাই চালু হবে না। সেই কথা আমরা মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বলছি।”

অন্যদিকে আবার পিছুপা হটতে রাজি নয় কোচবিহার জেলা ভারতীয় জনতা পার্টি। তাদের পক্ষ থেকেও প্রচার অভিযানের মাধ্যমে জনমানসের মধ্যে জাতীয় নাগরিকপঞ্জী এবং সংশোধিত নাগরিক আইন সম্পর্কে ইতিবাচক দিক তুলে ধরার কাজ চলছে।

ভারতীয় জনতা পার্টি সূত্রের খবর, আগামী দিনে তারাও লিফলেট করে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে মানুষের কাছে সংশোধিত নাগরিক আইনের সুফল সম্পর্কে ভারতীয় জনতা পার্টির বক্তব্য স্থাপন করবেন। এই বিষয়ে কোচবিহার জেলা বিজেপির সভানেত্রী মালতী রাভা বলেন, “রাজনৈতিক ফায়দা তোলার জন্য তৃণমূল এনআরসি এবং সিটিজেনশিপ আমেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট নিয়ে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করার চেষ্টা করছে। তার বিরুদ্ধে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে মানুষকে বোঝাবো আমরা।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বিগত দিনে যখন অসমে এনআরসি চলাকালীন 19 লক্ষ লোকের নাম জাতীয় নাগরিকপঞ্জি থেকে বাদ পড়ে। সেই সময় রীতিমতো জেলাজুড়ে এনআরসি বিরোধী প্রচার শুরু করে দিয়েছিল রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। যার জেরে রীতিমতো ব্যাকফুটে চলে যেতে হয়েছিল ভারতীয় জনতা পার্টির। তবে বিজেপি কর্মী সমর্থকরা বরাবরই আশাবাদী ছিলেন যে, রাজ্যে সংশোধিত নাগরিক আইন চালু হওয়ার পরেই এই বিষয়ে নিজেদের অবস্থান অনেকটাই দৃঢ় করতে পারবে ভারতীয় জনতা পার্টি।

বস্তুত, সংশোধিত নাগরিক আইন চালু হলে সংখ্যালঘু সমাজের সমর্থন না পেলেও, রাজ্যের সংখ্যাগুরু নির্বাচকমণ্ডলী সমর্থন পেয়ে যেতে পারে ভারতীয় জনতা পার্টি বলে মনে করছিলেন একাধিক বিজেপি নেতৃত্ব। তবে বর্তমান সময়ে যেভাবে সংশোধিত নাগরিক আইনের বিরুদ্ধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে জেলায় জেলায় তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী সমর্থকরা সোচ্চার হয়েছেন, তাতে করে কিন্তু প্রচারের নিরিখে অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি।

এদিন মানুষের বাড়ি বাড়ি প্রচার সম্পর্কে তৃণমূল জেলা মহিলা সংগঠনের সভানেত্রী সুস্মিতা দেবশর্মা বলেন, “ওই আইনে কেউ নিরাপদ নয়। গোটা দেশে কি অবস্থা! তা সবাই দেখছে। মানুষ তা নিয়ে প্রতিবাদ শুরু করেছে। আমরা সেকথাই মানুষের কাছে বলছি।” আবার 2 নম্বর ব্লক তৃণমূলের অন্যতম নেতা পরিমল বর্মন বলেন, “আমরা বাড়ি বাড়ি পৌঁছে কথা বলছি। সবাই বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন।” তবে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্বরা যাই বলুক না কেন, নিজেদের অবস্থানে কিন্তু একেবারে অনড় বিজেপি।

কোচবিহার জেলায় তৃণমূল কংগ্রেসের এনআরসি এবং সংশোধিত নাগরিক আইন বিরোধী প্রচারকে কটাক্ষ করেন জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় চক্রবর্তী। এদিন তিনি বলেন, “এমনিতেই মানুষ তৃণমূলের কথা শুনছে না। আমরা বাড়ি বাড়ি পৌঁছানো শুরু করলে পরিস্থিতি একদমই পাল্টে যাবে।” তবে রাজনৈতিক মহল মনে করছে, এনআরসি এবং সংশোধিত নাগরিক আইন নিয়ে সারা দেশজুড়ে যেভাবে বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, তাতে করে কিন্তু শেষ হাসি কে হাসবে, তা এখনই বলা সম্ভব নয়। তবে সমগ্র পরিস্থিতির উপরে অবশ্যই লক্ষ্য থাকবে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!