এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > “অন্যায়ের সঙ্গে জড়িত নই” অবস্থানে অনড় শোভন তুলে ধরলেন অতীতের স্মৃতি! বাড়ছে জল্পনা!

“অন্যায়ের সঙ্গে জড়িত নই” অবস্থানে অনড় শোভন তুলে ধরলেন অতীতের স্মৃতি! বাড়ছে জল্পনা!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –  একসময় বিজেপির পক্ষ থেকে নারদ কান্ডের ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ্যে আনা হয়েছিল। যেখানে দেখা গিয়েছিল, বেশিরভাগ তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা এবং জনপ্রতিনিধিরা প্রকাশ্যে টাকা নিচ্ছেন। বর্তমানে বিজেপির অন্যতম বিধায়ক মুকুল রায় থেকে শুরু করে রাজ্য বিধানসভায় বিজেপির বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও সেইসময় তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ ছিলেন। ফলে তাদেরকে সেই ভিডিও ফুটেজে টাকা নিতে দেখা গিয়েছিল।

একইভাবে সেখানে তৃণমূলের অন্যান্য নেতাদের পাশাপাশি সেই সময় রাজ্যের মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়কেও তোয়ালে মুড়িয়ে টাকা নিতে দেখা গিয়েছে। পরবর্তীতে সেই শোভন চট্টোপাধ্যায় থেকে শুরু করে শুভেন্দু অধিকারী, এমনকি তার অনেক আগেই মুকুল রায় ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগ দিয়েছেন। আর তখন থেকেই তৃণমূলের পক্ষ থেকে প্রশ্ন করা হয়েছে, এই সমস্ত নেতাদের বিরুদ্ধে এক সময় ভিডিও ফুটেজ দেখিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ করেছিল ভারতীয় জনতা পার্টি।

এখন সেই সমস্ত নেতারা বিজেপিতে যাওয়ার পর কি ধোয়া তুলসি পাতা হয়ে গেল? বর্তমানে আবার প্রাসঙ্গিকতা পেতে শুরু করেছে সেই নারদ কান্ড। সোমবার গ্রেফতার করা হয়েছে রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মদন মিত্র এবং তৃণমূল ছেড়ে একসময় বিজেপিতে যোগ দেওয়া রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা বর্তমানে কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত না থাকা শোভন চট্টোপাধ্যায়কে। তৃণমূলের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, গোটা ঘটনার পেছনে বিজেপির প্রতিহিংসাপরায়ণ রাজনীতি কাজ করছে।

তবে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর দুর্নীতির ঘটনা নিয়ে তাকে যখন একাংশ কটাক্ষ করেছিলেন, সেদিন যে কথা বলেছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়, গ্রেপ্তার হওয়ার পরেও তার মুখে শোনা গেল সেই একই কথা। যেখানে তিনি কোনোভাবেই অন্যায়ের সঙ্গে জড়িত নয় বলে প্রেসিডেন্সি জেলে যাওয়ার সময় দাবি করে বসলেন রাজ্যের এই প্রাক্তন মন্ত্রী। স্বাভাবিক ভাবেই তার এই মন্তব্যকে কেন্দ্র করে এবার নতুন করে চর্চা শুরু হয়েছে রাজ্যজুড়ে।

বলা বাহুল্য, স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিবাদ এবং বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার জেরে তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বহু দিন আগে শোভন চট্টোপাধ্যায় যোগদান করেন ভারতীয় জনতা পার্টিতে। যার পরে বিজেপি তাকে অনেকটাই গুরুত্ব দেবে বলে আশা করা হয়েছিল। কিন্তু সেভাবে গেরুয়া শিবিরে সক্রিয় রাজনীতিতে আসতে দেখা যায়নি শোভন চট্টোপাধ্যায়কে। বিজেপির একশ্রেণীর নেতৃত্বদের সঙ্গে তার বনিবনা না হওয়ার কারণে কার্যত দলে থেকেও সেভাবে কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচিতে উপস্থিত হতে দেখা যাচ্ছিল না তাকে।

সম্প্রতি বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পর শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং তার বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যে জল্পনা ক্রমশ বাড়তে শুরু করে। তারা আবার তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরতে পারেন বলে একটি আবহ তৈরি হয়। আর তার মাঝেই সোমবার তৃণমূলের অন্যান্য নেতা মন্ত্রীদের পাশাপাশি তৃণমূলের প্রাক্তন নেতা শোভন চট্টোপাধ্যায়কে নারদা কান্ডে গ্রেফতার করা হয়।

কিন্তু বিজেপিতে যাওয়ার পর তৃণমূলের পক্ষ থেকে তাঁর দুর্নীতি নিয়ে যে প্রশ্ন করা হয়েছিল, তখন শোভন চট্টোপাধ্যায় যে কথা বলেছিলেন, আজ বিজেপির সঙ্গে সেভাবে তার বনিবনা না থাকলেও, গ্রেপ্তার হওয়ার পর সেই একই কথা শোনা গেল রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীর গলায়। প্রেসিডেন্সি জেলে যাওয়ার সময় সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমি জ্ঞানত কোনো অন্যায় করিনি। আমি কোনো দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত নই। আজও বলছি, আগেও বলেছি।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

একাংশ বলছেন, শোভন চট্টোপাধ্যায় বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফিরে আসতে পারেন এই জল্পনা তৈরি হয়েছিল। আর সেই কারণেই শেষমুহূর্তে তাকে সিবিআই দিয়ে নারদ কান্ডের জন্য গ্রেপ্তার করিয়ে বিজেপির অন্যান্য নেতারা যাতে দলবদল না করেন, তার চেষ্টা করল বলে অভিযোগ করা হচ্ছে। তবে শোভন চট্টোপাধ্যায় তৃণমূলে না ফিরলেও, অন্যান্য নেতা অর্থাৎ ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায় এবং মদন মিত্রের জন্য যেভাবে তৃণমূল সোচ্চার হয়েছে, সেই একইভাবে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের জন্য তাদের সোচ্চার হতে দেখা যাচ্ছে।

যার ফলে মামলার জটিলতা মিটে গেলে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের তৃণমূলে প্রত্যাবর্তন যে শুধু সময়ের অপেক্ষা, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। তবে তাকে নিয়ে যে পরিস্থিতিই তৈরি হোক না কেন, আইনি জটিলতা যেদিকেই যাক না কেন, প্রথম থেকেই নিজের অবস্থানে যেভাবে অনড় ছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়, আজও সেই একই অবস্থান থাকতে দেখা গেছে তাকে। তিনি যে কোনোভাবেই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত নন, অতীতের কথা তুলে ধরে তা আরও একবার জেলযাত্রার সময় স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন কলকাতা পৌরসভার প্রাক্তন মেয়র।

যা দেখে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিজেপির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে তৃণমূলের পক্ষ থেকে তাকে দুর্নীতিগ্রস্ত বলে কটাক্ষ করা হয়েছিল‌। আবার তিনি বিজেপি ছাড়তে পারেন বলে যখন একটি আবহ তৈরি হয়, তখন তার সেই দুর্নীতির জন্য কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা তাকে গ্রেপ্তার করেছে। ফলে তৃণমূল হোক বা বিজেপি, তাকে যেই দুর্নীতির তকমা দিয়ে বিদ্ধ করবে, তাদের সেই তকমা যে তিনি মানতে নারাজ, অতীতের মতই আবার নিজের কথা তুলে ধরে কার্যত বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!