এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > পঞ্চায়েত স্তরে বন্ধ কাজ! কাটমানি না পাওয়া নাকি নিম্নমানের সামগ্রী? শুরু তীব্র বিতর্ক

পঞ্চায়েত স্তরে বন্ধ কাজ! কাটমানি না পাওয়া নাকি নিম্নমানের সামগ্রী? শুরু তীব্র বিতর্ক

শাসকদল তৃণমূল রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর “উন্নয়ন হয়েছে” একথা সকলে মেনে নিলেও অনেককেই সেই উন্নয়নের ব্যাপারে ঢোক গিলতে হয়েছে। কেননা অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গেছে যে, সেই উন্নয়ন প্রকল্পে হয় উপরতলার নেতাদের কাছে কাটমানি গেছে, না হলে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করে সেই কাজে ফাঁকি দেওয়া হয়েছে। তবে লোকসভা নির্বাচনের পর কোথাও যাতে কাটমানির বাড়বাড়ন্ত না হয়, তার জন্য দলের জনপ্রতিনিধিদের সতর্ক করে দিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

কিন্তু একদিনের মধ্যে যে বাসা বাঁধা রোগ যাবে না, তা বুঝতে পেরেছিল রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা। আর এবার নিম্নমানের ইমারতি দ্রব্যে কাজ করা হচ্ছে, এই অভিযোগ তুলে বেশ কয়েকটি উন্নয়নমূলক প্রকল্পের কাজ বন্ধ করে দিলেন পান্ডুয়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি এবং সহ-সভাপতি। কিন্তু হঠাৎ সভাপতি এবং সহ-সভাপতির এই কাজ বন্ধ করে দেওয়ার ব্যাপারটিকে ঠিক ভাবে নিচ্ছে না, সমালোচক মহলের একাংশ।

বিরোধীদের অনেকে বলছেন, “আসলে কাটমানি নেওয়ার ব্যাপারটি প্রকাশ্যে স্বীকার করতে পারছেন না সভাপতি এবং সহ-সভাপতি। তাই ইমারত দ্রব্য খারাপের অভিযোগ তুলে কাজ বন্ধ করে দিতে হচ্ছে তাদের।” জানা যায়, সম্প্রতি এই পান্ডুয়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি চম্পা হাজরা, সহ-সভাপতি সঞ্জয় ঘোষ, শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ সঞ্জীব ঘোষ এবং মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ অসিত চট্টোপাধ্যায় এই ব্লকের বেশ কয়েকটি উন্নয়নের কাজ পরিদর্শন করেন।

আর এই কাজ পরিদর্শনের পরই পান্ডুয়ার রানাগড় উচ্চ বিদ্যালয়ের শ্রেণিঘর তৈরিতে নিম্নমানের ইস্পাত ব্যবহারের অভিযোগ তোলেন শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ সঞ্জীব ঘোষ। পাশাপাশি অন্যান্য বেশ কয়েকটি উন্নয়নমূলক কাজে নিম্নমানের দ্রব্য দেওয়ার অভিযোগ তোলেন তারা।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

সূত্রের খবর, এরপরই গোটা বিষয়টি নিয়ে পান্ডুয়ার বিডিও এসডিও এবং জেলাশাসকের দপ্তরে লিখিত অভিযোগ জানান তারা। যার ফলে পান্ডুয়া ব্লকের প্রায় বারোটা কাজ বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষের অভিযোগ কি সত্যি! তারা কি সত্যিই নিম্নমানের ইমারতি দ্রব্য ব্যবহার করছেন! এদিন এই প্রসঙ্গে রানাগড় স্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুল বারি বলেন, “সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী আইএসআই চিহ্নযুক্ত ইস্পাত ব্যবহার করেছি। অজানা কারণে কাজ বন্ধ হয়ে আছে।”

কিন্তু কর্মাধ্যক্ষ এবং পান্ডুয়া ব্লকের সভাপতি ও সহ সভাপতি ইমারতি দ্রব্য নিম্নমানের দেওয়ার অভিযোগে কাজ বন্ধ করে দেওয়ার কারণ দেখালেও প্রধান শিক্ষকের এই কথায় এবার ছড়িয়ে পড়েছে জল্পনা। এদিন এই ব্যাপারে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে সিপিএম। তাদের দাবি, আসলে “ইমামতির দ্রব্য নিম্নমানের” এটা কোনো অভিযোগই নয়। তৃণমূলের নেতারা কাটমানি টাকা পাচ্ছেন না বলেই কাজ বন্ধ করার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।

এদিকে এই প্রসঙ্গে সিপিএমের জেলা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য প্রদীপ সাহা বলেন, “ব্লকে উন্নয়নমূলক কাজ হলেই তা বন্ধ করে দিচ্ছেন শাসক দলের নেতারা। কাটমানি পাচ্ছেন না বলেই ওনারা এই সমস্ত কাজ করছেন।” একইভাবে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সরব হয়ে এই প্রসঙ্গে জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি অজয় দুবে বলেন, “তৃণমূলের নেতারা এখন কাটমানির জন্যই একজোট হয়ে উন্নয়নমূলক কাজে বাধা দিচ্ছেন।”

সব মিলিয়ে তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কাটমানি না নেওয়ার ব্যাপারে নিজের দলের জনপ্রতিনিধিদের সতর্ক করলেও ইমারতি দ্রব্য নিম্নমানের এই অভিযোগ তুলে উন্নয়নমূলক প্রকল্পের কাজ তার দলের জনপ্রতিনিধিরা বন্ধ করে দেওয়ার পরে যেভাবে বিরোধী দলের পক্ষ থেকে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে যে, এই কাজ বন্ধ করে দেওয়ার পেছনে তৃণমূলের নেতাদের কাটমানি না পাওয়াই মূল কারণ, তাতে বিরোধীদের এই অভিযোগ যদি সত্যি হয়, তাহলে অদূর ভবিষ্যতে দুর্নীতির সঙ্গে শাসকদলের নাম জড়ানোর ঘটনা আবারও প্রকাশ্যে আসবে বলে দাবি সমালোচক মহলের। তবে বিরোধীরা এই দাবি করলেও তাদের দাবিও কতটা সত্যি, তা যাচাই করে দেখার আগে কোনোরূপ সিদ্ধান্তে আসতে নারাজ রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!