স্বজনপোষণ ও জনবিচ্ছিন্ন মেনে নিয়ে ঝাড়গ্রামের সংগঠন ঢেলে সাজাতে নির্দেশ পার্থ চ্যাটার্জির বিশেষ খবর রাজ্য June 16, 2018 সদ্যসমাপ্ত পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজ্যজুড়ে ঘাসফুল ঝড় দেখা গেলেও কয়েকটি জেলায় বিজেপির উত্থান রীতিমত চমকে দিয়েছে রাজনৈতিক মহলে। বিশেষ করে যা এক সময় তৃণমূল কংগ্রেসের গড় হয়ে উঠেছিল সেই আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকাগুলি বা বিশেষ করে জঙ্গলমহলের ফল নিয়ে রীতিমত দুশ্চিন্তায় শাসকদল। এইভাবে চলতে থাকলে এই সব জায়গায় লোকসভা নির্বাচনে যে হৃদকম্প হতেই পারে তা অনুধাবন করে দ্রুত সেই সব জায়গায় দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ড্যামেজ-কন্ট্রোলে নেমে পড়েছেন শাসকদলের শীর্ষনেতৃত্ত্ব। পুরুলিয়া, বাঁকুড়ার পর এবার নজর জঙ্গলমহলের আরেক গুরুত্ত্বপূর্ন জেলা ঝাড়গ্রাম। তৃণমূল কংগ্রেস মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় নিজে সেখানে গতকাল গিয়ে স্থানীয় নেতৃত্ত্বের স্বজনপোষণ ও জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া নিয়ে রীতিমত বিস্ফোরক বার্তা দিলেন। পার্থবাবুর সঙ্গে বৈঠকে গতকাল ডাকা হয়েছিল ঝাড়গ্রামের জেলাস্তরের সব জনপ্রতিনিধি, নেতা-কর্মী এবং আদিবাসী কর্মীদের। সেখানে রীতিমত কড়া মাস্টারমশায়ের ঢঙে তৃণমূল কংগ্রেস মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, এক সময় আদিবাসীরা আমাদের দলের সৈন্য ছিলেন, ক্ষমতায় আসার পরে স্থানীয় নেতারা সেই সৈন্যদেরই ভুলে গিয়েছেন। ২০০৯ সালে পুলিশের মারে চোখ হারানো লালগড়ের ছোটপেলিয়ার ছিতামণি মুর্মুর বাড়িতে কতবার আপনারা গিয়েছেন? সব জায়গায় আপনারা নিজেদের লোক ঢোকাচ্ছেন। নতুন করে ২০৪ জন অলচিকি শিক্ষক নিয়োগ করা হবে। সেখানেও দেখা যাবে আপনারা নিজের ভাই, কাকা, কাকিমাকে নিয়োগ করাচ্ছেন! জনবিচ্ছিন্ন, দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের এইরকম বিস্ফোরক অভিযোগ স্বয়ং দলের মহাসচিবের কাছে শুনে কার্যত তখন দিশেহারা স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ত্ব। তবে, পঞ্চায়েতের শিক্ষা নিয়ে ‘ফিনিক্স পাখির’ মত দলকে ঘুরে দাঁড় করতে বার্তাও দেন তিনি। পার্থবাবু জানান, ঝাড়গ্রামে সংগঠনকে শক্তিশালী করার জন্য এই সভা হল। মানুষের অভাব-অভিযোগ থাকলে তাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। উন্নয়নের কাজের তদারকি আরও জোরদার করতে হবে। দলের পুনর্গঠনে তরুণ, আদিবাসী, মহিলাদের রেখে শীঘ্রই বিভিন্ন ব্লক কমিটি গঠন করা হবে। ব্লক, ওয়ার্ড ও বুথস্তরে সংগঠন পুনর্গঠন করার কথা জানিয়ে পার্থবাবু প্রস্তাবিত নতুন মুখের নাম মুখবন্ধ খামে জমা দিতে নির্দেশ দেন। এখন দেখার তৃণমূল কংগ্রেস মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কড়া দাওয়ায় মেনে লোকসভা ভোটের আগে কিভাবে ঘুরে দাঁড়ায় শাসকদল। যদিও নয়াগ্রামের বিধায়ক দুলাল মুর্মু, ঝাড়গ্রামের সাংসদ উমা সরেন এবং জেলা তৃণমূলের সভাপতি অজিত মাইতি গতকালের বৈঠকে ঘুরিয়ে বহিরাগতদের উপস্থিতি ও বিজেপি-মাওবাদী আঁতাতের দিকে আঙ্গুল তোলেন। আপনার মতামত জানান -