এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > শিক্ষক নিয়োগের নিয়মে আসতে চলেছে বড়সড় পরিবর্তন, জানালেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জি

শিক্ষক নিয়োগের নিয়মে আসতে চলেছে বড়সড় পরিবর্তন, জানালেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জি


ইতিপূর্বে রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে কম জল ঘোলা হয়নি। এসএসসি থেকে শুরু করে প্রাইমারি টেট, সর্বত্রই চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলন, অনশন ইত্যাদির জেরে জেরবার হতে হয়েছে রাজ্য সরকারকে। তার উপরে সমস্যা অনেকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে আদালতের হস্তক্ষেপ।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এসএসসি বা প্রাইমারি টেট পরীক্ষায় মেধা তালিকা প্রকাশ নিয়ে একাধিকবার রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে চাকরিপ্রার্থী পরীক্ষার্থীদের একাংশ। তাই এবার পুরনো নিয়োগ প্রক্রিয়াকে বাতিল করে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে নতুন নিয়মবিধি আনতে আগ্রহী হয়েছে শিক্ষা দপ্তর।

বিশেষ সূত্রে পাওয়া খবর অনুযায়ী, অতি শীঘ্রই শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে বড়সড় বদল আনতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। নতুন নিয়ম বিধি অনুযায়ী, লিখিত পরীক্ষাকেই অগ্রাধিকার দেওয়া হবে বলে জানা যাচ্ছে। গত শনিবার এই নতুন নিয়ম সম্পর্কে পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় সাংবাদিকদেরকে জানিয়েছেন।

জানা গেছে, নতুন নিয়ম বিধি আনার কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে। পুরনো নিয়ম অনুযায়ী নিয়োগ-প্রক্রিয়া চললে সরকারকে অনেক জটিলতার সম্মুখীন হতে হচ্ছে বলে শিক্ষা দপ্তর সূত্রে জানানো হচ্ছে। নতুন বিধি অনুযায়ী, এবার থেকে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে আর কোনো বিজ্ঞাপন দেওয়া হবে না।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

 

ইতিমধ্যেই এই সংক্রান্ত নির্দেশিকা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ এবং স্কুল সার্ভিস কমিশনকে সরকারের তরফ থেকে দেওয়া হয়েছিল বলে শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় আরও জানিয়েছেন, শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে অনেক মামলা হচ্ছে, অভিযোগ উঠছে এবং অনাবশ্যক দেরি হচ্ছে। তাই সেই ব্যবস্থার সরলীকরণ করে নতুন বিধি তৈরি হচ্ছে। শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য থেকে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে, নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া অনুযায়ী ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া বাদ দেওয়া যেতে পারে।

আগামীতে স্কুলে শূন্যপদ অনুযায়ী বিজ্ঞাপন দেওয়া হবে এবং সেই অনুযায়ী লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হবে। পরীক্ষার ফলাফল অনুযায়ী কাউন্সিলিংয়ে ডেকে চাকরি দেওয়া হবে। এতে যদি প্রয়োজনীয় শূন্যপদ পূর্ণ না হয়, তাহলে পরবর্তীতে আবার তালিকা প্রকাশ করা হবে বলে জানা যাচ্ছে। বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ছাড়া কেউ আবেদন করতে পারে না। সেক্ষেত্রে তাই নতুন নিয়মে বিএড বা ডি. এল. এড এর জন্য অতিরিক্ত নম্বর থাকছে না বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।

এছাড়াও এ অ্যাকাডেমিক কোয়ালিফিকেশন খাতে কার কত নম্বর তা কমিশন বা পর্ষদ জানতেই পারবে। তাই সেই নিয়ে নতুন কোনো নম্বর ধার্য করার যুক্তি দেখছেন না শিক্ষামন্ত্রী। এছাড়াও পদ্ধতিতে সরলীকরণের জন্য ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশন চাকরি পাওয়ার পরেও হতে পারে বলে শিক্ষামন্ত্রীর মত। শিক্ষা দপ্তরের সূত্রে জানা যাচ্ছে, খুব তাড়াতাড়ি নতুন নিয়ম কার্যকর হতে পারে।

কিন্তু বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন, যদি জটিলতা সৃষ্টি করার হয়, তাহলে নতুন নিয়মেও জটিলতা সৃষ্টি করার অনেক অবকাশ রয়েছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নতুন নিয়মের ঠিক কি রূপ তৈরি হয়, তা দেখার বিষয়। সম্প্রতি কয়েকদিন আগে আপার প্রাইমারির মেধা তালিকা প্রকাশের সময় মেধাতালিকায় অসংগতি নিয়ে একাধিক প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে রাজ্যের শিক্ষা দপ্তরকে। এই বিষয়ে বামপন্থী যুব সংগঠনের নেতৃত্ব থেকে শুরু করে সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র পর্যন্ত সরকারকে কাঠগোড়ায় দাঁড় করিয়েছে। সূর্যবাবু নিজে সাংবাদিকদেরকে বিবৃতির মাধ্যমে তা জানিয়েছেন।

নতুন মেধা তালিকা ত্রুটিপূর্ণ বলে মত প্রকাশ করেছেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, রহস্যজনকভাবে দেখা যাচ্ছে বহু প্রার্থীর অ্যাক্যাডেমিক কোয়ালিফিকেশনে প্রাপ্ত নম্বর একই। এটা কি করে সম্ভব! যদিও সিপিএম রাজ্য সম্পাদক এই অভিযোগকে কার্যত উড়িয়ে দিয়েছেন এসএসসি চেয়ারম্যান সৌমিত্র সরকার। সূর্যকান্ত বাবুর বিবৃতির পাল্টা জবাব দিতে গিয়ে সৌমিত্র বাবু জানান, বিধি অনুযায়ী ডিভিশন অনুযায়ী নম্বর দিতে হয়।

অর্থাৎ ফার্স্ট ডিভিশন বা ফাস্ট ক্লাসের এক নম্বর এবং সেকেন্ড ডিভিশন বা সেকেন্ড ক্লাসের আরেক নম্বর এক্ষেত্রে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের যিনি 85% থেকে 90 শতাংশ নম্বর পাবেন, আর যিনি 60% থেকে 65 শতাংশ নম্বর পাবেন তাদেরকে একই মার্কস দিতে এসএসসি বাধ্য। এটা তো নিয়মের মধ্যেই রয়েছে। তাতে কমিশনের কিছু করার নেই। কমিশন যে তালিকা প্রকাশ করেছে, তাতে অনেক নম্বরের মধ্যে ফারাক সূক্ষ্ম। তাই এত বিশাল সংখ্যক প্রতিযোগিতার মধ্যে নাম্বারের মিল হওয়াটা খুব স্বাভাবিক ঘটনা।

কিন্তু শিক্ষা দপ্তরের নিয়োগের সরলীকরণ মাধ্যমে যদি পরীক্ষার্থীদের সুবিধা হয় এবং স্বচ্ছতার পরিবেশ তৈরি হয় তাহলে শিক্ষাদপ্তরের এক্ষেত্রে তা অনেক বড় প্রাপ্তি হবে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। তবে গোটা ব্যাপার নিয়ে যেকোনো মন্তব্য বিধি নিয়মের নতুন নিয়ম দেখার পরে উপলব্ধি করতে পারবেন ওয়াকিবহাল মহল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!