কলেজে ভর্তিতে তোলাবাজির তত্ত্ব উড়িয়ে ‘সাইবার কাফের’ নতুন তত্ত্ব শিক্ষামন্ত্রীর কলকাতা রাজ্য July 4, 2018 সম্প্রতি টাকার বিনিয়মে কলেজে ভর্তির দুর্নীতি নিয়ে তোলপাড় শিক্ষা দপ্তর থেকে বঙ্গের রাজনীতি। শিক্ষামন্ত্রী থেকে মুখ্যমন্ত্রী এ ব্যাপারে কড়া পদক্ষেপ নিলেও তোলাবাজির দুর্নীতিকে কিছুতেই বাগে আনা যাচ্ছে না। তবে এতোদিন সরাসরি দুর্নীতিপরায়ণ ছাত্রনেতার উপর অভিযোগ তুললেও এবার সম্পূর্ণ অন্য কথা বললেন শিক্ষামন্ত্রী। এদিন উওর থেকে মধ্য কোলকাতার তিনটি কলেজে ঘুরে দেখলেন তিনি। সেসব জায়গায় ভর্তির নামে তোলাবাজি চলছে কিনা সেটাই খতিয়ে দেখতেই তিনি কলেজে এসেছিলেন এদিন। আর সেখানেই সম্পূর্ণ ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে জানান যে বিভিন্ন সাইবার ক্যাফেতে অনলাইনের মারফতে কলেজে ভর্তির আবেদনপত্র পূরণ করার জন্যেই এ ধরণের সমস্যা হচ্ছে। এরসঙ্গে নাকি কলেজে ঘুষ নেওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই। মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে বৈঠকের পর এদিন তিনি প্রথমেই গেছিলেন জয়পুরিয়া কলেজে। ওদিনই আবার সকালে ওই কলেজে ভর্তির জন্য টাকা অনলাইনে জমা করার পরও এক ব্যক্তি অতিরিক্ত টাকা দাবী করেন। আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে ——————————————————————————————- এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে। এই অভিযোগের জেরে শোরগোল পড়ে যায় গোটা কলেজ চত্বরে। তারপরেই বেলা দুটো নাগাদ কলেজ অধ্যক্ষদের সঙ্গে বৈঠক মিটিয়ে অভিযোগের অভিমুখ সম্পূর্ণ অন্যদিকে ঘুরিয়ে পার্থবাবু দোষারোপ করেন সাইবার ক্যাফের মাধ্যমে ভর্তি প্রক্রিয়াকে। এবং সংবাদপত্রে তোলাবাজি বিষয়ক খবরগুলোকে ভিত্তিহীন বলেও দাবী করে জানান, যে পদ্ধতিতে কলেজে ভর্তি প্রক্রিয়া চলছে তাতে নাকি দুর্নীতির কোনো জায়গাই নেই। এর পাশাপাশি এটাও জানান যদি কারোর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে তবে নিশ্চয়ই তাঁর বিরুদ্ধে কড়া আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। সত্যতা যাচাই করতে হবে। অন্যদিকে, সুরেন্দ্রনাথ কলেজের এক কর্মীর বিরুদ্ধে কলেজ ভর্তির বিনিময়ে তোলাবাজি করার অভিযোগ ওঠে। পুলিশ তদন্তে নেমে তাঁর বাড়ি থেকে তোলাবাজির টাকাও উদ্ধার করেছে। এ প্রসঙ্গে পার্থবাবুর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান যে ভর্তির প্রক্রিয়া যেখানে অনলাইনে হচ্ছে সেখানে তোলাবাজি করার দাবীই ভিত্তিহীন। তবুও তিনি অধ্যক্ষকে নাকি বিষয়টি খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দিয়েছেন। প্রয়োজনে আইনি ব্যবস্থাও গ্রহণ করার পরামর্শ দিয়েছেন। এর পাশাপাশি মণীন্দ্র চন্দ্র কলেজে গিয়েও সাইবার ক্যাফেগুলোর উপর নজরদারি করার নির্দেশ দিয়ে আসেন পার্থবাবু। এছাড়া অভিভাবক এবং আবেদনকারীদেরও আবেদন সংক্রান্ত তথ্য নিয়ে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন। শিক্ষামন্ত্রীর পাশাপাশি খোদ মুখ্যমন্ত্রীকেও কলেজ ভর্তির ব্যাপারে তোলাবাজি নিয়ন্ত্রণে আনতে ময়দানে নামতে হল। তিনি নিজেও কলেজে ঘুরে ঘুরে তোলাবাজির ব্যাপারটা খতিয়ে দেখেছেন। পুলিশ প্রশাসনকে এ ব্যাপারে সক্রিয় হতে নির্দেশ দিয়েছেন। তবুও বিরোধীরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমালোচনা করতে থামছেন না। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী জানালেন,মুখ্যমন্ত্রী নাকি বিষবৃক্ষ রোপণ করেছেন, তার ফলস্বরূপ এখন রাজ্যে কলেজে ভর্তির নামে তোলাবাজির মতো দুর্নীতি শুরু হয়েছে। একথা জানিয়ে তিনি উদ্বেগও প্রকাশ করলেন এদিন। অন্যদিকে,বিজেপি-র সাধারণ সম্পাদক প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর তোলাবাজি রুখতে আশুতোষ কলেজে যাওয়া নিয়েও ব্যঙ্গ করে জানান যে দুর্নীতি এখন আর লুকোতে পারছেন না বলে মুখ্যমন্ত্রী আশুতোষ কলেজে গিয়ে মানুষকে বোঝাতে চাইলেন, উনি এ সবের বিরুদ্ধে। ওদিকে,কলেজেগুলোকে এসব দুর্নীতির হাত থেকে রক্ষা করতে বিশ্ববিদ্যালয় ভিত্তিক অনলাইন ভর্তি ব্যবস্থা চালুর দাবিতে এ দিন মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দেন বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী। তবে এই দাবিকে সরাসরি নাকচ করে দিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় । ভর্তি-দুর্নীতি নিয়ে এসইউসি-র রাজ্য সম্পাদক সৌমেন বসুর কটাক্ষ করতে ছাড়লেন না। জানালেন, কলেজে তোলাবাজি নগ্ন হয়ে পড়ায় মন্ত্রীরা নিন্দা এবং গ্রেফতারের নাটক করছেন। আপনার মতামত জানান -