এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > পার্টি অফিস দখল-পুনর্দখল নিয়ে কি ব্যারাকপুরে অশান্তি আরও বাড়বে? ক্রমশ বাড়ছে দুশ্চিন্তা

পার্টি অফিস দখল-পুনর্দখল নিয়ে কি ব্যারাকপুরে অশান্তি আরও বাড়বে? ক্রমশ বাড়ছে দুশ্চিন্তা

লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে বিজেপির উত্থান ঘটার পরে দিকে দিকে রাজনৈতিক সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। এতদিন ক্ষমতার স্বাদ গ্রাস করা তৃণমূল বিজেপিকে এক ইঞ্চি জায়গা ছাড়বে না বলে নিজেদের প্রভাব বাড়াতে শুরু করে। অন্যদিকে ময়দান ছাড়তে নারাজ গেরুয়া শিবিরও। এই পরিস্থিতিতে পার্টি অফিস দখল পাল্টা দখলের রাজনীতিতে বিভিন্ন সময় উত্তপ্ত হতে দেখা গেছে ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলকে।

জানা যায়, এই ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের ১৬২টি পার্টি অফিস এখনও বিজেপির দখলে রয়েছে। শাসকদল তৃনমূল ওই সব কটি পার্টি অফিসই পুনরুদ্ধারে তৎপর। ফলে শুধু যে এই পার্টি অফিস দখল নিয়েই আগামী দিনে ব্যারাকপুর আবার অশান্ত হয়ে উঠতে পারে, তার আশঙ্কায় রয়েছেন অনেকেই।

বস্তুত, বিগত লোকসভা নির্বাচনের আগে থেকেই বারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের পার্টি অফিসের রঙ নীল সাদা থেকে রাতারাতি গেরুয়া রঙে রাঙানো হয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি খুলে টাঙানো হয় নরেন্দ্র মোদির ছবি। লোকসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের দিন থেকে জোরজবরদস্তি তৃণমূলের পার্টি অফিস দখলের অভিযোগ ওঠে বিজেপির বিরুদ্ধে। ঘাসফুল শিবিরের দাবি, এই এলাকার তাদের মোট ৩০২টি পার্টি অফিস দখল করে বিজেপি। পরবর্তীকালে ধীরে ধীরে তারা ১৪০ টি পার্টি অফিস পুনরুদ্ধার করলেও এখনও ১৬২টি বিজেপির দখলে রয়েছে।

গত রবিবারই শ্যামনগরের ফিডার রোডে তেঁতুলতলার এই পার্টি অফিস দখল ঘিরেই অগ্নিগর্ভ হয় জগদ্দল, ভাটপাড়া। বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংয়ের মাথা ফাটে, এমনকি তাঁর গাড়িও ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। যার পরেই এই ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার ১২ ঘণ্টার বনধ পালন করে বিজেপি। কিন্তু শ্যামনগরের ফিডার রোডের যে পার্টি অফিসটি নিয়ে এত গণ্ডগোল, সেই অফিসটি রবিবারেই ফের দখল নিয়েছে বিজেপি। সোমবার সেখানে দুপুর পর্যন্ত বিজেপির নেতাকর্মীরা বসেছিলেন। পরে পুলিস ওই পার্টি অফিসটি সিল করে দেয়।

 

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

জানা গেছে, নীল সাদা থেকে গেরুয়া হওয়া এখনও ১৬২টি পার্টি অফিস রয়েছে। যেগুলি তৃনমূল পুনরুদ্ধার করতে চায়। অন্যদিকে বিজেপিও ওই পার্টি অফিসগুলির দখল ছাড়তে নারাজ। আর এর ফলেই ফের ব্যারাকপুর অশান্ত হওয়ার একটা সম্ভাবনা থাকছে। এদিন এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের ভাটপাড়া বিধানসভা কেন্দ্রের আহ্বায়ক সোমনাথ শ্যাম বলেন, “ভাটপাড়া, জগদ্দল এলাকায় ছোট বড় মিলিয়ে আমাদের ৩০টি পার্টি অফিস রয়েছে। যার মধ্যে ১৯টির দখল নিয়েছিল বিজেপি। এখনও পর্যন্ত ৭টি পুনরুদ্ধার করতে পেরেছি।”

অন্যদিকে এই ব্যাপারে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূলের সভাপতি তথা মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, “এখনও ওরা আমাদের ১৬২টি পার্টি অফিস দখলে রেখেছে। আমরা বিজেপি নেতৃত্বের কাছে অনুরোধ করছি, ভদ্রভাবে কার্যালয়গুলি ফেরত দিক। আমরা চাই না পার্টি অফিস দখল ঘিরে অশান্তির ঘটনা ঘটুক। অর্জুনের মাথা ফাটুক। অবশ্য অর্জুনের মাথা ফেটেছে ওদের দলেরই সমর্থকদের ছোঁড়া ইটে।” অন্যদিকে তৃণমূলের এই অভিযোগ সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করেছে গেরুয়া শিবির।

এদিন এই প্রসঙ্গে বিজেপির ব্যারাকপুর জেলা কমিটির সভাপতি ফাল্গুনী পাত্র বলেন, “৩০২টি পার্টি অফিস কি ওদের নিজস্ব? ওদের কাছে কাগজপত্র আছে? ২০১১ সালের পর থেকে সিপিএমের পার্টি অফিসগুলি ওরা দখল করেছে। আসলে শাসকদল পার্টি দখল দখলের ইস্যু নিয়ে পুলিসকে সঙ্গে নিয়ে বিজেপি কর্মী নেতাদের জেলে পুরতে এসেছে। এটাই ওদের পরিকল্পনা।” তবে বিজেপি – তৃণমূলের এই তরজার মাঝে এই গোটা বিষয় নিয়ে মুখ খুলেছে কংগ্রেসও।

এদিন এই প্রসঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেসের জন অভিযোগ সেলের সভাপতি শঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “গত ৪০ বছর ধরে এই
সংস্কৃতি চলে আসছে। একটা সময় কংগ্রেসের পার্টি অফিস দখল করেছে সিপিএম ও তৃণমূল। সিপিএমের পার্টি অফিসও দখল করেছে তৃণমূল। এখন তৃণমূলের পার্টি অফিস দখল করছে বিজেপি। এটাই এখন রাজনীতির অঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে অশান্তির ঘটনা ঘটবে, এটাই ভবিতব্য।”

কিন্তু কোনো একটা রাজনৈতিক দল আসবে, কোনো একটা রাজনৈতিক দল যাবে, এটাই স্বাভাবিক। তবে তার জন্য পার্টি অফিস দখলকে কেন্দ্র করে সাধারণ মানুষের ঘরে অশান্তির আগুন জ্বলবে, তা কখনোই কাম্য নয়। ফলে এই অশান্তির আগুন নেভাতে এখন পুলিশ প্রশাসন ঠিক কতটা কার্যকরী ভূমিকা নেই, এখন সেদিকেই তাকিয়ে সকলে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!