প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – নির্বাচনের সময় যত এগিয়ে আসছে, ততই পশ্চিমবঙ্গের গণতন্ত্র বিপন্ন বলে অভিযোগ করতে দেখা যাচ্ছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে। এক্ষেত্রে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে সবথেকে বেশি অভিযোগের আঙুল তুলতে শুরু করেছে ভারতীয় জনতা পার্টি। দিলীপ ঘোষ থেকে শুরু করে মুকুল রায়ের মত নেতারা প্রতিনিয়ত পশ্চিমবঙ্গের গণতন্ত্র বিপন্ন বলে সরব হচ্ছেন। আর বিজেপির এই অভিযোগ পাল্টা অস্বীকার করা হচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে।

আর এই পরিস্থিতিতে লোকসভা নির্বাচনের কথা তুলে ধরে দেশের কোনো কেন্দ্রে অশান্তি না হলেও, কেন রাজ্যে গোলমাল হল, সেই ব্যাপারে প্রশ্ন তুলে দিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। আর এই মন্তব্যের মধ্যে দিয়ে দিলীপবাবু বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেন যে, পশ্চিমবঙ্গে গণতন্ত্র থাকলে নির্বাচনের সময় অন্তত শান্তি বিঘ্নিত হতো না।

সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার একটি সাংবাদিক সম্মেলন করেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। আর সেখান থেকেই দেশের লোকসভা নির্বাচনের কথা তুলে ধরেন তিনি। দিলীপবাবু বলেন, “দেশের 542 টি লোকসভা আসনে লোকসভা নির্বাচন হলেও শুধু বাংলার 42 টি আসনের গোলমাল হল। 500 টি আসনে কিছু হল না। কলকাতার পুর নির্বাচন হল না, দেশের অন্য জায়গায় হল। রাজ্যের মানুষ ভোটদানে বঞ্চিত হলেন। একটা সার্টিফিকেট পেতে কালঘাম ছুটে যাচ্ছে। দেওয়ার লোক নেই। এসব দেখে বলা যায় পশ্চিমবঙ্গের গণতন্ত্র বিপন্ন।”

একাংশ বলছেন, দিলীপ ঘোষ একথা বলে পশ্চিমবঙ্গের গণতন্ত্র নিয়ে যেমন প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন, ঠিক তেমনই বুঝিয়ে দিলেন কলকাতা পৌরসভার নির্বাচন না করে অত্যন্ত সমস্যা হচ্ছে‌। এক্ষেত্রে সাধারণ মানুষ ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলেও বোঝানোর চেষ্টা করলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি।

এদিন দিলীপ ঘোষ আরও বলেন, “রাজ্যে প্রশাসন বিপন্ন। তাতেই বোঝা যায় গণতন্ত্র বিপন্ন। মিডিয়া গণতন্ত্রের চতুর্থ পঞ্চম স্তম্ভ হলেও সেটা যেন কর্পোরেট না হয়ে যায়। সবার উচিত গণতন্ত্রকে বাঁচিয়ে রাখা।” পর্যবেক্ষকদের মতে, নির্বাচনের সময় যত এগিয়ে আসছে, ততই বিজেপির পক্ষ থেকে তৃণমূলকে আক্রমণ করার রাস্তা বেশি নেওয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে অনুন্নয়নের পাশাপাশি বাংলার গণতন্ত্র যে নেই, সেকথা সব সময় তুলে ধরার চেষ্টা করছেন বিজেপি নেতারা।

অনেকে বলছেন, বিগত বাম সরকারের আমলে পশ্চিমবঙ্গে গণতন্ত্র নেই বলে আওয়াজ তুলেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখন সেই তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যের ক্ষমতায়। কিন্তু এবার তৃণমূলকে ক্ষমতাচ্যুত করতে সেই গণতন্ত্র বিপন্ন সেই দাবি তুলতে শুরু করেছে ভারতীয় জনতা পার্টি। স্বাভাবিকভাবেই নির্বাচনের আগে পশ্চিমবঙ্গের গণতন্ত্র বিপন্ন বলে ফের আরও একবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অস্বস্তি বাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।