বিজেপিকে আটকাতে পিকের স্ট্র্যাটেজি তৈরি? তৃণমূলকে শুধু এই অস্ত্রে শান দিতে পরামর্শ! কলকাতা রাজ্য December 10, 2019 2011 সাল থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রবল জনপ্রিয়তার উপরে ভরসা করে বাংলায় ক্ষমতা বিস্তার করতে সক্ষম হয়েছিল শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু সাংগঠনিকভাবে তৃণমূল কংগ্রেসের শক্তি কখনই রাজ্যের ভূতপূর্ব শাসকদল সিপিএমের মতো শক্তিশালী ছিল না। মূলত তৃণমূল কংগ্রেসের সংগঠনের সব থেকে বড় শক্তি ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনপ্রিয়তা। এই শক্তির উপর ভর করেই 11 থেকে 16 সবকটি নির্বাচনী বৈতরণী পার করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু 2019 সালের লোকসভা নির্বাচনে 42 এ 42 টি আসন টার্গেট করা সত্ত্বেও, তৃণমূল কংগ্রেসকে জোরদার ধাক্কা খেতে হয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টির কাছে। যেখানে 2014 সালে লোকসভা নির্বাচনে 34 টি আসনে জয় যুক্ত হয়েছিল রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস, সেইখানে 2019 সালের লোকসভা নির্বাচনে 22 টি আসনে জয়যুক্ত হয়েছে তৃণমূল। অন্যদিকে 2 টি আসন থেকে নিজেদের আসন বাড়িয়ে 18 টি আসনে পৌঁছে গিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি। এরপর থেকেই নিজেদের সাংগঠনিক ভিনয়, একেবারে বুথ স্তরে তৃণমূল কংগ্রেসের সংগঠনকে শক্তিশালী করে কার্যত প্রতি দরজায় দলের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চায় পিকের টিম। তাই বুথ ভিত্তিক ভাবে দলের কাছে কর্মীদের তালিকা চেয়ে পাঠানো হয়েছিল নেতৃত্বের কাছে। তবে পিকে টিমের কাছে যেই তালিকা বিভিন্ন নেতৃত্বরা জমা দিয়েছে, সেই তালিকায় প্রচুর পরিমাণে ভুল রয়েছে এই অভিযোগ করা হয়েছে প্রশান্ত কিশোরের টিমের তরফ থেকে বলে খবর। এছাড়াও তৃণমূলকে শক্তিশালী করতে টিম পিকে যে সার্ভে চালিয়েছিল, তার মাধ্যমে উঠে এসেছে যে, তৃণমূল কংগ্রেসের বুথ স্তরের সংগঠনের এমন অনেক কর্মীরাই রয়েছে, যাদের সঙ্গে রাজনৈতিক চিন্তাধারার কোনো রকম সম্পর্ক নেই। অথবা যাদের রাজনৈতিক যোগ্যতার যথেষ্ট পরিমাণে অভাব রয়েছে। তৃণমূল সূত্রের খবর, গত বৃহস্পতিবার বিশিষ্ট নির্বাচনী রণনীতিকার প্রশান্ত কিশোরের উপস্থিতিতে তৃণমূলের শীর্ষ নেতাদের সমন্বয়ে জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে বিশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেই অনুষ্ঠানেই উপরিউক্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - পাশাপাশি এসসি ভোটারদের দলের প্রতি আকর্ষণ করার বিষয়ে আলোচনা করা হয় ওই বৈঠকে। আগামী দিনে রাজ্যের তপশিলি ভোটারদের ভোট নিজেদের ঝুলিতে ফেলতে সংগঠনে এসসি কর্মীদের সংখ্যা বৃদ্ধি ঘটানো যে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ, তা জেলা নেতৃত্বদেরকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে প্রশান্ত কিশোরের তরফ থেকে বলে জানা যাচ্ছে। ইতিমধ্যেই যে সমস্ত তপশিলি মানুষজনকে ভারতীয় জনতা পার্টি নিজেদের দখলে নিয়ে গেছেন, তাদেরকেও পুনরায় প্রভাবিত ত্তিকে শক্তিশালী করতে এবং 2021 সালে রাজ্যের শাসন ক্ষমতায় নিজেদের দল তৃণমূল কংগ্রেসকে টিকিয়ে রাখতে ভারতবর্ষের বিখ্যাত নির্বাচনী রণনীতিকার প্রশান্ত কিশোরকে নিয়োগ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মোতাবেক প্রশান্ত কিশোর “দিদিকে বল” কর্মসূচির মাধ্যমে রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে মানুষের জনসংযোগ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। এক্ষেত্রে প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা “আই প্যাক” রীতিমতো নজরদারি চালায় তৃণমূল কংগ্রেসের জনপ্রতিনিধিদের “দিদিকে বলো” কর্মসূচি পালনের দিকে। কিন্তু শুধু “দিদিকে বলো” কর্মসূচির মধ্যে দিয়েই করে তৃণমূল কংগ্রেসের অন্তর্ভুক্ত করার যোজনা রয়েছে। তাছাড়া জেলা নেতৃত্বদেরকে দলের সকল সক্রিয় কর্মীদের নতুন তালিকা প্রশান্ত কিশোরের আইপ্যাক টিমের কাছে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সব কিছু মিলিয়ে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, 2021 সালের নির্বাচনের আগে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে সবদিক দিয়ে সাজিয়ে রাখতে চাইছেন বিশিষ্ট নির্বাচনী রণনীতিকার ভোটগুরু হিসেবে পরিচিত প্রশান্ত কিশোর। আর এই ক্ষেত্রে সক্রিয় কর্মীদের সঠিক তালিকা এবং তপশিলি জাতি ভুক্ত মানুষজনের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতি অনুরাগ যে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ, তা বলাই বাহুল্য। আপনার মতামত জানান -