এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > মারণ করোনা থেকে বাঁচতে শুরু লকডাউন, আইন ভেঙে পুলিশের জালে ২৫৫!

মারণ করোনা থেকে বাঁচতে শুরু লকডাউন, আইন ভেঙে পুলিশের জালে ২৫৫!

সারাবিশ্ব করোনা আতংকে দিনের পর দিন কাটাচ্ছে। করোনার সংক্রমণ প্রথম শুরু হয়েছিল চীনের ইউহান প্রদেশ থেকে। চীন থেকে শুরু করে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ ঘুরে অবশেষে করোনার পা পড়েছে ভারতে। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের পর পশ্চিমবঙ্গেও করোনা সংক্রমণের ব্যাপক বৃদ্ধি ইদানিং লক্ষ্য করা যাচ্ছিল। বিশেষজ্ঞদের দাবি, এই মুহূর্তে করোনা দাঁড়িয়ে আছে স্টেজ থ্রীতে। গোষ্ঠী সংক্রমণ আটকানো না গেলে এই সময় থেকেই করোনা মহামারী আকারে দেখা দিতে শুরু করবে।

এই কথা মাথায় নিয়েই পশ্চিমবঙ্গ সহ দেশের বিভিন্ন রাজ্যে গত 23 শে মার্চ বিকেল পাঁচটা থেকে শুরু হয়েছে লকডাউন। যদিও সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে লকডাউন পরিস্থিতিকে বলা হয়েছে সার্বিক সুরক্ষা বিধি নিষেধ। লকডাউনের মাঝে বাইরে বেরোনোর ওপর আরোপ হয়েছে সরকারি বিধিনিষেধ, যা মেনে চলার জন্য মানবিক আবেদন জানিয়েছেন রাজ্য সরকার থেকে শুরু করে প্রশাসন পর্যন্ত। মঙ্গলবার সকাল থেকে দেখা যাচ্ছে, কোলকাতা সহ গোটা পশ্চিমবঙ্গ যেখানে যেখানে লকডাউন পরিস্থিতি চলবে বলে নোটিশ জারি করা হয়েছিল, সেই সব জায়গা রীতিমতো নিস্তব্ধ।

কলকাতার দিকে একটু নজর ঘোরালে দেখা যাচ্ছে, মঙ্গলবার সকাল থেকেই কলকাতায় জনমানুষের চিহ্ন মিলছেনা। সরকারি-বেসরকারি যেকোনো রকম গণপরিবহণ ব্যবস্থা ইতিমধ্যেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শুধুমাত্র জরুরী পরিষেবা মূলক গাড়ি এবং তাঁদের কর্মীরা ছাড়া রাস্তায় কাউকেই দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ আগেই ছিল সবজির বাজার এবং মাছ-মাংসের বাজার অত্যাবশ্যকীয় তালিকায় থাকবে। সেই কথা মেনে কিছু বাজার খুললেও কোনো ক্রেতার দেখা মেলেনি।

অন্যদিকে, ফাঁকা রাস্তায় ক্রমাগত চলছে পুলিশের নাকা চেকিং। যে কোন গাড়ি দেখলেই পুলিশ সাথে সাথে তা তল্লাশি করে দেখছে। নির্দেশ না মেনে কেউ পথে পা রাখলেই কলকাতা পুলিশের শাস্তির কোপে পড়তে হচ্ছে তাঁকে। ইতিমধ্যেই কলকাতার পুলিশ সুপার অনুজ শর্মা টুইট করে জানিয়েছেন, লকডাউন পরিস্থিতি ভাঙার দায়ে ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছে 255 জন। খিদিরপুর, পার্ক সার্কাস, টালা পার্ক, ইএম বাইপাসসহ শহরের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিটি এলাকায় কড়া পুলিশি নজরদারি চলছে বলে জানা গেছে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

ক্রমাগত কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার জানিয়ে চলছে, লকডাউন এর অর্থ ছুটির মেজাজে ঘর থেকে বেরিয়ে যাওয়া নয়। সুতরাং করোনার পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য প্রত্যেককেই ঘরে থাকতে হবে। পশ্চিমবঙ্গে লকডাউন পরিস্থিতির জন্য চিহ্নিত হয়েছে কলকাতা পুর এলাকা, উত্তর দিনাজপুর, মালদহ, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, হাওড়া, পশ্চিম বর্ধমানের পুরোপুরি এবং বাছাই করা বেশকিছু জেলাশহর। সরকারের নির্দেশিকা অনুযায়ী লকডাউন পরিস্থিতির বাইরে থাকবে আইনশৃঙ্খলা, আদালত, জেল, স্বাস্থ্যপরিসেবা, বিদ্যুৎ, জল, জঞ্জাল পরিষ্কার, অগ্নিনির্বাপণ, অসামরিক প্রতিরক্ষা, টেলিকম, ইন্টারনেট, তথ্যপ্রযুক্তি, ডাকঘর পরিষেবা, ব্যাংক, এটিএম এবং গণবণ্টন ব্যবস্থা।

এর সাথে অবশ্য সংবাদপত্র পরিষেবাও যোগ হয়েছে। এর সাথে পেট্রোল পাম্প, গ্যাস, তেল, ওষুধ পরিষেবাও স্বাবাভিক থাকবে বলে জানা গেছে। সরকারী নির্দেশের আওতার বাইরে আছে হোম ডেলিভারী এবং খাদ্যদ্রব্যের জন্য অনলাই বাজার। তবে পুরো ব্যাপারটি খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেবেন উক্ত জেলাগুলির জেলাশাসক অথবা পুরকমিশনার। ইতিমধ্যেই লকডাউন পরিস্থিতির জেরে সারাদেশে গণপরিবহণ ব্যবস্থা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।

একইভাবে রাজ্য সরকারও সম্প্রতি আর্ন্তরাজ্য বাস পরিবহণ 31 মার্চ পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অনেক আগেই জরুরী ভিত্তিতে করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে স্কুল-কলেজ, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলি বন্ধ করে দিয়েছে রাজ্য সরকার। অন্যদিকে বিশেষজ্ঞদের দাবি, করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে না ভুগে অতিমাত্রায় সতর্ক থাকলেই সংক্রমণ এড়ানো যাবে। অর্থাৎ এই মুহূর্তে অত্যন্ত প্রয়োজন সচেতনতার। রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যদি শরীরে করোনাভাইরাসের বিন্দুমাত্র লক্ষণ ফুটে ওঠে, তাহলে সঙ্গে সঙ্গেই পরীক্ষাগারে গিয়ে পরীক্ষা করে উপযুক্ত চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে। আপাতত সবার লক্ষ্য একটাই, করোনা ভাইরাসের হাত থেকে চিরতরে মুক্তি।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!