এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > বালি দুর্নীতি ধরে প্রভাবশালী শাসক নেতা ও পুলিশ কর্তা “শাসনে” চাকরি ছাড়তে বাধ্য হলেন ওসি

বালি দুর্নীতি ধরে প্রভাবশালী শাসক নেতা ও পুলিশ কর্তা “শাসনে” চাকরি ছাড়তে বাধ্য হলেন ওসি

 

ইতিপূর্বে বহুবার পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য রাজনীতিতে শাসকদলের বিরুদ্ধে বালি মাফিয়া চক্রকে নেপথ্যে মদত দেওয়ার অভিযোগ উঠে এসেছে। এই নিয়ে রাজনৈতিক মহলে অনেক তরজা ইতিপূর্বে হয়েছে। এবার জলপাইগুড়ি জেলায় সেই বালি মাফিয়া চক্রকে বাইরে থেকে মদত দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে। যার জেরে রীতিমতো চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে বসলেন জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশের একজন আধিকারিক। এই ঘটনা নিয়ে ইতিমধ্যেই শোরগোল তৈরি হয়েছে রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে।

জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে জানা যাচ্ছে, শনিবার রাত্রিবেলায় মালবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ অসীম মজুমদার নিজের ইস্তফা পত্র পাঠিয়েছেন জেলার অ্যাডিশনাল এসপি ডেনদুপ ভুটিয়ার কাছে। স্থানীয় সূত্রের খবর, গাজলডোবা এলাকায় তিস্তা নদীর একটি বালি খাদান ই-টেন্ডারের মাধ্যমে কলকাতার একটি সংস্থা মাইনিং গোষ্ঠী সহ 13 টি সংস্থা বালি তোলার বরাত পায়। আর এরপর থেকেই গোলমাল বাধে বলে খবর।

স্থানীয় বালি ব্যবসাদারদের মতে, প্রতি 200 কিউবিক ফুট বালির জন্য স্থানীয় হিসেব অনুযায়ী বালি খাদানের মালিক 700 টাকা পায়। আবার যে সংস্থা বালি খাদানের বরাদ্দ পেয়েছে, সেই সংস্থা কত টাকা পাবেন, তা ঠিক করে রাজ্যের ভূমি রাজস্ব দপ্তর। জানা যায়, প্রতি 100 কিউবিক ফুট বালি প্রতি 200 টাকা করে লয়ালিটি দেওয়া হয়। যেহেতু এর সঙ্গে শ্রমিক মজুরি থেকে শুরু করে পরিবহন খরচা ইত্যাদি জড়িত আছে, তাই বালির দাম স্থানীয় লরি চালক সংগঠন সহ সবাই মিলে ঠিক করে। এখনও পর্যন্ত গোটা জলপাইগুড়ি জেলায় সর্বসম্মতিক্রমে 700 টাকা 200 কিউবিক ফুট বালির মূল্য ছিল।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

কিন্তু সম্প্রতি তৃণমূল কংগ্রেসের কোনো একজন মধ্যম স্তরের নেতার কথায়, কলকাতার মাইনিং গোষ্ঠী বালি খাদানের টেন্ডার পাওয়ার পরই 700 টাকা রয়্যালটি মূল্য একলাফে বেড়ে দাঁড়ায় 1300 টাকায়। রাতারাতি দ্বিগুণ মূল্য হয়ে যাওয়ার পরই এই নিয়ে বিবাদ বাঁধতে শুরু করে। এর পরেই মালবাজার থানার ওসি অসীমবাবু জেলার সবকটি বালি খাদানের দায়িত্বপ্রাপ্তদেরকে নিয়ে অন্যান্য জায়গায় যে বাণিজ্য মূল্য, সেই মূল্যে রয়্যালটি করতে অনুরোধ করেন। কিন্তু সকলে তা মেনে নিলেও কলকাতা থেকে আসা ওই সংস্থা তা মানতে রাজি হননি।

এমনকি কলকাতার ওই সংস্থার সঙ্গে তৃণমূলের কোনো একজন বড়সড় প্রভাবশালী নেতার সম্পর্ক রয়েছে বলে ঘনিষ্ঠ মহলে অসীমবাবু জানিয়েছেন। স্থানীয় পুলিশ আধিকারিকের হস্তক্ষেপে নিজেদের লাভ কমে যেতে পারে এই আশঙ্কা করেই ওসির বিরুদ্ধে পুলিশের বড় কর্তাকে বলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এই বিষয়ে প্রভাবশালী ওই নেতার তরফ থেকে জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশ সুপার অভিষেক মোদির কাছে অভিযোগ করা হয়েছিল বলে খবর। আর এর পরেই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মানবাজার থানার ওসি অসীম মজুমদারকে থানা থেকে সরিয়ে ওদলাবাড়ি পুলিশ ফাঁড়িতে বদলি করে দেন।

এরপরই অসীমবাবুর তরফ থেকে ঘনিষ্ঠমহলে বলা হয় যে, তিনি এমন কোনো অপরাধ করেননি, যার জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তাকে এই শাস্তিমুলক বদলি দিতে পারেন। ফলে অসীমবাবু নিজের ইস্তফাপত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের কাছে জমা দিয়েছেন। যদিও এখনও পর্যন্ত জলপাইগুড়ি জেলা সুপারেনটেনডেন্ট পুলিশের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে কোনো রকম প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবুও এইরকম ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে জেলার রাজনৈতিক মহলে। বিরোধীদের থেকে ইতিমধ্যেই এই ব্যাপারে সরকারকে কটাক্ষ করা শুরু হয়ে গগয়েছে। তবে গোটা পরিস্থিতি শেষ পর্যন্ত কোন দিকে গড়ায়! সেদিকেই লক্ষ্য থাকবে ওয়াকিবহাল মহলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!