এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > করোনার চূড়ান্ত সংকটের আবহেও তৃণমূল-বিজেপি- বাম-কংগ্রেস রাজনীতির চতুষ্কোণে আটকে বঙ্গ রাজনীতি!

করোনার চূড়ান্ত সংকটের আবহেও তৃণমূল-বিজেপি- বাম-কংগ্রেস রাজনীতির চতুষ্কোণে আটকে বঙ্গ রাজনীতি!


বাংলায় যখন করোনা ধীরে ধীরে মাথা তুলতে শুরু করে, তখন সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠকে সকল বিরোধী নেতাদের মতামত শুনেছিলেন তিনি। যা দেখে মনে করা হয়েছিল, করোনাকে দূরীভূত করতে পশ্চিমবঙ্গে অন্তত রাজনৈতিক বৈরিতাকে দূরে সরিয়ে রেখে সকলে একযোগে কাজ করবেন। কিন্তু বর্তমানে করোনাকে মোকাবিলা করতে শাসক-বিরোধী ঐক্য সম্পূর্ণরূপে ভেঙে গেছে বাংলায়।

কখনও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি থেকে শুরু করে সঠিক তথ্য চেপে যাওয়ার ব্যাপারে সরব হয়েছে বিরোধী দল বাম কংগ্রেস এবং বিজেপি। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে সরব হতে দেখা যাচ্ছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস এবং বাম-কংগ্রেসকে।‌ ইতিমধ্যেই সিপিএমের তরফে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি দিয়ে করোনা মোকাবিলায় পদক্ষেপ নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে।

জানা গেছে, সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন। এদিন তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী নানা কথা বলে চলেছেন। কিন্তু লকডাউনের মধ্যে প্রায় 13 কোটি মানুষ রোজগারহীন হয়ে পড়েছেন। তাদের তিন মাসের বেতন বা মজুরি সুরক্ষিত থাকবে বলে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা করলেও, বাস্তবে তা হচ্ছে না। সাধারণ মানুষ সহৃদয় হয়ে তাদের সহায়তা করছেন তারা পাচ্ছেন। কেন্দ্রের কোনো দায়িত্ব নেই!” একইভাবে প্রধানমন্ত্রীর তহবিলে যে টাকা জমা পড়ছে, তা করোনা মোকাবিলার জন্য কেন রাজ্যগুলিকে সহযোগিতা করা হচ্ছে না!

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন এই সিপিএম নেতা। অন্যদিকে বাংলার পক্ষ থেকে কংগ্রেসের বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান এবং সিপিএমের পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী প্রধানমন্ত্রীকে কেন্দ্রের চাল ডাল কেন রাজ্যে এসে পৌঁছাচ্ছে না! তা নিয়ে প্রশ্ন করে চিঠি লিখেছেন। এদিন এই প্রসঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি সোমেন মিত্র বলেন, “করোনা যুদ্ধে সামনের সারিতে থেকে লড়ছে রাজ্যগুলো। অথচ তাদের জন্য কেন্দ্রের পর্যাপ্ত অর্থ, সাহায্য সরঞ্জাম কিছুই আসছে না।”

অর্থাৎ রাজনৈতিকভাবে পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরোধী বলে বাম এবং কংগ্রেস পরিচিত হলেও, বাংলায় কেন্দ্র সাহায্য করছে না বলে যেভাবে তারা প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখলেন, তাতে তৃণমূল অনেকটাই অক্সিজেন পাবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এদিকে দলীয় কর্মসূচি অনুসারে রবিবার সামাজিক দূরত্ব মেনে দু’ঘণ্টা রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বাড়িতে বসে মৌন অবস্থান-বিক্ষোভ করেছেন বিজেপির নেতা, কর্মী, সাংসদরা।

আর এই ঘটনাতেও পরিষ্কার যে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বিজেপি তৃণমূলের বিরুদ্ধে আরও বেশি করে সরব হতে চাইছে। এদিন এই প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, “মৃত ও আক্রান্তের সংখ্যা নিয়ে গোলমাল, স্বাস্থ্য পরিকাঠামো ভেঙে পড়া, রেশন দুর্নীতি, আমাদের নেতা সাংসদদের ত্রাণের কাজে যেতে দেওয়ার প্রতিবাদে আমরা এই মৌন অবস্থান করেছি।” এদিকে বিজেপির তরফ থেকে রাজ্যের দুর্নীতি নিয়ে সরব হলেও তাকে গুরুত্ব দিতে চায়নি তৃণমূল কংগ্রেস।

এদিন এই প্রসঙ্গে রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, “রাজ্য সরকার কাজ করছে। আমরা রাস্তায় আছি। ওরা বাড়িতে বসে সমালোচনা করছেন।” সব মিলিয়ে করোনা ভয়াবহতার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে অন্তত রাজনীতি হবে না বলে প্রথমদিকে সকলে মনে করলেও, যত দিন যাচ্ছে, ততই শাসক-বিরোধী তরজা প্রকাশ্যে আসছে। পশ্চিমবঙ্গের এই রাজনৈতিক চতুস্কোন করোনাকে রুখতে কতখানি ভূমিকা নিয়েছিল – তা হয়ত আগামীদিনে রাজনীতির ছাত্রের কাছে অবশ্য পাঠ্য হবে! কিন্তু আপাতত এই রাজনৈতিক তরজা যে সাধারণ মানুষের অস্বস্তি বাড়াচ্ছে বই কমাচ্ছে না – তা নিয়ে সন্দিহান নন প্রায় কেউই।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!