এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > পরাজয়ের পরেই বেপাত্তা রাজীব, নিতে চলেছেন রাজনৈতিক সন্ন্যাস? তৃণমূল এবং বিজেপির সঙ্গে সমদূরত্ব তৈরি নিয়ে জল্পনা!

পরাজয়ের পরেই বেপাত্তা রাজীব, নিতে চলেছেন রাজনৈতিক সন্ন্যাস? তৃণমূল এবং বিজেপির সঙ্গে সমদূরত্ব তৈরি নিয়ে জল্পনা!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –  2016 সাল থেকে 2021 সাল পর্যন্ত তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক থাকার পাশাপাশি রাজ্য মন্ত্রিসভার একাধিক দপ্তরের গুরুত্বপূর্ন মন্ত্রকের সামলেছেন তিনি। পাশাপাশি তৃণমূলের শীর্ষ নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে দ্বিতীয় তৃণমূল সরকারের শেষ দিকে অর্থাৎ 2021 এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করতে দেখা যায় তাকে। গেরুয়া শিবিরে যোগদান করে আবার ডোমজুড় বিধানসভা কেন্দ্র থেকেই নিজের প্রাক্তন দল তৃণমূল কংগ্রেসকে বার্তা দেওয়ার জন্য বিজেপির টিকিটে লড়াই করেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।

বিজেপি এবং রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, উভয়ই নিশ্চিত ছিল, এই ডোমজুড় বিধানসভা কেন্দ্র থেকে তাদের জয় নিশ্চিত। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ছাড়া যে জয়লাভ করা সম্ভব না, তা কার্যত ডোমজুড়ে বিজেপি প্রার্থী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে পরাজিত করে প্রমাণ করে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। এদিকে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী গেরুয়া শিবিরে নাম লেখানোর পর ভোটে লড়াই করে পরাজিত হয়ে যাওয়ার পর থেকেই সেভাবে পাত্তা পাওয়া যাচ্ছে না তার। যার জেরে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা তৈরি হয়েছে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক পন্থাকে কেন্দ্র করে। কি করবেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়?

গেরুয়া শিবিরের হয়ে টিকিট পাওয়ার পর তৃণমূলের উদ্দেশ্যে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেও, আসল উদ্দেশ্য রক্ষা করতে পারেননি তিনি। পরাজিত হয়েছেন তৃণমূলের প্রার্থীর কাছে। স্বাভাবিক ভাবেই এই পরিস্থিতিতে যদি আবার তিনি এখন তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরে যান, তাহলে তাকে “সুবিধেবাদী” বলে কটাক্ষ করতে শুরু করবে বাংলার রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। তাই এই পরিস্থিতিতে সেভাবে বিজেপিতেও সক্রিয় হতে দেখা যাচ্ছে না রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে। ফলে তিনি কি করতে চলেছেন, সেই সমগ্র বিষয়টি বর্তমানে ধোঁয়াশার পর্যায়ে রয়েছে।

অনেকে বলছেন, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এত তাড়াতাড়ি উধাও হয়ে যাবেন, তা সত্যিই কল্পনা করা যায়নি। বর্তমান পরিস্থিতিতে ভোটের আগে যারা তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন, তারা অনেকেই আবার তৃণমূলে ফিরতে চেয়ে আবেদন করেছেন। কিন্তু রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় সেই তালিকায় নাম লেখাননি। তবে কিছুদিন আগে “ইয়াস” নামক দুর্যোগের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার যে সতর্কবার্তা দিয়েছিল, সেই সতর্কবার্তায় সহমত পোষণ করে সকলে রাজ্য প্রশাসনের নির্দেশ মেনে চলবেন বলে একটি পোস্ট করতে দেখা যায় এই বিজেপি নেতাকে। যার ফলে তিনি যে তার প্রাক্তন দল এবং বর্তমান সরকারের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিলেন, তা এক প্রকার স্পষ্ট হয়ে যায়।

তবে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী কিছুদিন আগে দল পরিবর্তন করে গেরুয়া শিবিরে নাম লেখানোর পর এখন যদি আবার দল পরিবর্তন করে পুরনো দলে ফিরে যান, তাহলে তার রাজনৈতিক অস্তিত্ব অনেকটাই বিপন্ন হয়ে যেতে পারে। তাই সেই পরিস্থিতিতে তৃণমূল কংগ্রেসের ফেরার মত পাকাপোক্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলে দাবি করছেন একাংশ। অন্যদিকে সেভাবে গেরুয়া শিবিরের সঙ্গেও সদ্ভাব বজায় রাখতে দেখা যাচ্ছে না তাকে। ভোটের পর বিজেপির বিভিন্ন নেতা-নেত্রীরা যখন তৃণমূলের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ তুলেছে, তখন কার্যত সেই অভিযোগ তোলার দিক থেকে নীরব রয়েছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।

তাই তার এই নীরবতা পালন এখন বিজেপির অনেককে চিন্তাশীল করে তুলেছে। বস্তুত, একসময় প্রবীর ঘোষাল থেকে শুরু করে বৈশালী ডালমিয়া, রথীন চক্রবর্তীদের মত নেতা, নেত্রীদের সাথে করে নিয়ে দিল্লিতে গিয়ে অমিত শাহের হাত থেকে বিজেপির পতাকা তুলে নিয়েছিলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্প্রতি সেই বৈশালী ডালমিয়ার পুত্র আক্রান্ত হয়েছেন। যার পরে তার খোঁজ-খবর নিয়েছেন বিজেপির একের পর এক নেতা।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

কিন্তু যার হাত ধরে দিল্লিতে গিয়ে গেরুয়া শিবিরের পতাকা হাতে তুলে নিয়েছিলেন বৈশালী ডালমিয়া, সেই রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় একবারও তার পুত্রের খোঁজ নেননি বলে খবর। এদিন এই প্রসঙ্গে বৈশালীদেবী বলেন, “আমার ছেলের ওপর বেহালায় হামলার পরে দিলীপদা থেকে শুরু করে কৈলাসজী, সকলে ফোন খোঁজ নিয়েছেন। শুভেন্দুদা বাড়িতে এসেছিলেন। কিন্তু রাজীবদা ফোনে খোঁজটুকুও নেননি।” অর্থ্যাৎ গেরুয়া শিবিরের একাংশ যে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে কিছুটা হলেও চিন্তিত এবং তার ভাবগতি যে বিজেপির কাছে খুব একটা ভালো ঠেকছে না, তা কার্যত পরিষ্কার।

আর এখানেই তৈরি হয়েছে জল্পনা। তাহলে কি রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় রাজনৈতিক সন্ন্যাস নিতে চলেছেন? বারবার এ-দল ও-দল করা নেতা-নেত্রীদের যে বাংলার মানুষ ভরসা করে না, তা দলবদলকারীদের পরাজয়ের ফলে কার্যত স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। কেননা এবারের বিধানসভা নির্বাচনে যারা তৃণমূল থেকে বিজেপিতে এসে টিকিট পেয়েছিলেন, তাদের সিংহভাগ নেতা-নেত্রী পরাজিত হয়েছেন। যার ফলে একটা জিনিস স্পষ্ট, বাংলার মানুষ বারবার দলবদল করা ব্যক্তিদের খুব একটা ভালো চোখে গ্রহণ করছেন না।

আর এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলের ফেরার জন্য অন্তরে বাসনা থাকলেও, নিজের প্রেস্টিজের জন্য বাইরে তা প্রকাশ করতে পারছেন না রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলে দাবি করছেন একাংশ। পাশাপাশি বিজেপি বিরোধী দলের জায়গা দখল করার কারণে যে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় প্রায় তৃণমূলকে ক্ষমতাচ্যুত করার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিলেন, এখন তিনি কার্যত বিজেপির হয়ে সেইভাবে মাঠে নামতেও সেকিবোধ দেখাতে শুরু করেছেন। অন্তত বাংলার রাজনীতিতে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের সক্রিয়তার অভাব দেখে এই সমস্ত গুণীজন ক্রমশ বাড়ছে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!