করোনা ভাইরাস ভয়াবহ আকার ধারণ করার আগে বাংলায় তৃণমূল বনাম বিরোধীদের রাজনৈতিক লড়াইয়ে বিভিন্ন ইস্যু থাকতে দেখা গেছে। এনআরসি থেকে শুরু করে সিএএ এই ইস্যুতে বিজেপিকে চাপে ফেলতে মরিয়া ছিল তৃণমূল কংগ্রেস। অন্যদিকে তৃণমূলের সেই আইনের বিরোধিতা নিয়ে পাল্টা প্রশ্ন তুলে জনমত সংগ্রহ করতে দেখা গেছে পদ্ম শিবিরকে। আর এই পরিস্থিতিতে বাংলায় করোনা ভাইরাসের দাপট দেখা দেওয়ার সাথে সাথেই তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।

পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে সরকারের পক্ষ থেকে নানা উদ্যোগ নেওয়া হলেও, বিরোধীদের পক্ষ থেকে সরকারকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করা হয়। সাম্প্রতিক কালে সেই করোনাভাইরাস এবং তার জেরে পরিযায়ী শ্রমিকদের রাজ্যে ফিরে আসা নিয়ে রীতিমতো রেলের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

পাল্টা বিরোধী দল বিজেপির পক্ষ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই বক্তব্যকে প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়ে দাবি করা হচ্ছে, তাহলে কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চান না যে, ভিন রাজ্যে থাকা শ্রমিকরা নিজের বাড়িতে ফিরে আসুন। আর শাসক থেকে বিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কাছে বর্তমান সময়ে এই পরিযায়ী শ্রমিক প্রধান ইস্যু হয়ে যাওয়ায় আগামী 2021 এর বিধানসভা নির্বাচনে এই বিষয় নিয়ে দুই রাজনৈতিক দল ব্যাপক তরজা সৃষ্টি করতে পারে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

একদিকে যেমন তৃণমূলের পক্ষ থেকে দাবি করা হবে, এই পরিযায়ী শ্রমিকদের ব্যাপারে রাজ্য সরকার অনেকটা চিন্তিত। আর তাই তাদের সুরক্ষার ব্যাপারে রাজ্য সরকার অনেক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অন্যদিকে তেমনই বিজেপির পক্ষ থেকে দাবি করা হবে, কেন্দ্রের পক্ষ থেকে স্পেশাল ট্রেন চালু করে সেই পরিযায়ী শ্রমিকদের রাজ্যে ফেরানোর উদ্যোগ নেওয়া হলেও, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার প্রথম থেকেই তাতে আপত্তি জানিয়েছে। যার ফলে বেড়েছে বিড়ম্বনা।

বলছেন করোনাভাইরাস আসার আগেই রাজ্যসভায় পাশ হয়ে যাওয়া নাগরিকত্ব বিল নিয়ে তৃণমূল বনাম বিজেপির তরজা ছিল চোখে পড়ার মতো কিন্তু এক লহমায় এই সমস্ত বিষয়ে এখন অনেকটাই দূরে চলে গেছে। এখন শাসক থেকে বিরোধী প্রতিটি রাজনৈতিক দলের কাছে প্রধান ইস্যু, করোনা ভাইরাস এবং পরিযায়ী শ্রমিক।

আর তাই বর্তমান পরিস্থিতিতে আগামী 2021 এর বিধানসভা নির্বাচনে ভালো ফল করতে সরব স্ব ক্ষেত্রে এই বিষয়ে নিজেদের যুক্তি বেশি করে খাড়া করতে উদ্যোগী হবে তৃণমূল, বিজেপি সহ বাংলার প্রতিটি রাজনৈতিক দল বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। এখন গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।