এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > প্রবল বিতর্কের মাঝে সেলিব্রিটি তৃণমূল সাংসদ পাশে পেলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে

প্রবল বিতর্কের মাঝে সেলিব্রিটি তৃণমূল সাংসদ পাশে পেলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে


বারংবার নুসরত জাহানকে মুসলিম ফতোয়ার মুখে পড়তে হচ্ছে। এবার উপলক্ষ দুর্গাপূজা। এবার দুর্গাপূজার অষ্টমী দিন অঞ্জলী দেওয়াতে নুসরত জাহানকে মুসলিম ফতোয়ার মুখে পড়তে হয়েছ। দুর্গাপুজো আসলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মিলনস্থল। আর সে জায়গায় দাঁড়িয়ে নুসরত জাহানকে মুসলিম আক্রমণের ফলে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, মুসলমান বলে কেন নুসরতকে এই জাতিভেদ মানতে হবে ? একই জায়গায় দাঁড়িয়ে যখন মুখ্যমন্ত্রী মুসলিম হিজাব মাথায় দেন, মুসলিন নিয়ম পালন করেন তখন তার প্রতি যখন কোনো নিষেধাজ্ঞা জারি হয় না। তাহলে নুসরতের প্রতি কেন এই নিষেধাজ্ঞা? কেন হিন্দু মুসলমান বিভেদ তৈরী করা হচ্ছে?

এবার পুজোয় অষ্টমীর সকালে দুর্গা মন্ডপে নুসরত জাহান অঞ্জলি দেওয়ার সাথে সাথে মৌলবাদী ফতোয়া জারি হয় তাঁর বিরুদ্ধে। মৌলবাদীদের পক্ষ থেকে নুসরত ইসলামের বদনাম করছেন বলে দাবি করা হয়। কিন্তু এই বিতর্কে নুসরত এর পাশে দাঁড়িয়েছেন রাজ্য বিজেপি নেত্রী তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরী। প্রথম থেকেই নুসরতকে কিছু বলা হলে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তার প্রতিবাদ করেছেন।

নুসরতের এবার দূর্গা পূজার অঞ্জলি দেওয়া নিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরী পরিষ্কার করে জানিয়ে দিয়েছেন, একজন ভারতীয় মহিলা স্বামীর পরিচয়ে পরিচিত হন। নুসরতের স্বামী কিন্তু হিন্দু। অবশ্য তিনি এও জানিয়েছেন প্রত্যেকের ব্যক্তিগত মতামত আছে আর সেই মতামতকে সম্মান জানানো উচিত।

এই নিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবশ্রী বলেছেন, ‘তিনি কোনও উৎসবে যোগ দেবেন এটা সম্পূর্ণভাবে তাঁর নিজস্ব সিদ্ধান্ত। তাঁর স্বাধীনতা রয়েছে। আর ভারতে একজন বিবাহিত মহিলা সাধারণত তার স্বামীর বিশ্বাসেই পরিচিত হন। আর আমরা জানি যে নুসরত নিখিল জৈনকে বিয়ে করেছেন।’

নুসরত কে সমর্থন জানিয়ে টুইটারে একের পর এক বার্তা ভেসে উঠেছে বিভিন্ন ব্যক্তিত্ত্বের। এমনকি নুসরতকে সমর্থন করে টুইট করেছেন জাভেদ আখতারের মত ব্যক্তিত্ব।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

অন্যদিকে টুইটারে তসলিমা নাসরিন লিখেছেন, ‘যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একজন অ-মুসলিম হয়ে অন্যান্য মুসলিমদের মত হিজাব পড়েন ও আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেন তখন ইমামরা তাকে বলে নিরপেক্ষতা। আর নুসরত জাহান যখন অ-হিন্দু হয়ে অন্যান্য হিন্দুদের মত পূজামন্ডপে গিয়ে প্রার্থনা করেন, তখন তাঁকে ইমামরা বললেন অ-মুসলিম।’

প্রসঙ্গত অষ্টমীর সকালে শহরের একটি মণ্ডপে নুসরত জাহান ও তার স্বামী নিখিল জৈন একসাথে অঞ্জলি দেন। এমনকি ঢাকের সাথে তিনি নাচও করেন। মুহূর্তের ছবি মুঠোফোনের মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। এ নিয়ে নুসরত বলেছেন, ‘ধর্মীয় সম্প্রীতির বার্তা দেওয়ার জন্যই দুর্গার সামনে প্রার্থনা করেছি। এভাবেই আমি সব ধর্মের সঙ্গে সম্প্রীতির বার্তা দিয়েছি।’

ঠিক একই পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিলেন সদ্যবিবাহিত নুসরত যখন সাংসদ হিসেবে শপথ নিতে গিয়েছিলেন। সেই সময়ও নুসরাতের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরী। নুসরতের পাশে দাঁড়িয়ে তিনি পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, ‘এটা পাকিস্তান নয়, এটা ভারতবর্ষ। এখানে ফতোয়া দিয়ে কোনও লাভ নেই।’ তিনি এ বিষয়ে আরও বলেছিলেন, ‘ধর্মাচারণ সবার সাংবিধানিক অধিকার। ওনার যা মনে হয়েছে, সেটা বলেছেন। এ বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই। কিন্তু যাঁরা নুসরতকে ফতোয়া দিচ্ছেন, তাঁদের বুঝতে হবে ফতোয়া বন্ধ করার সময় এসেছে। যিনি সংসদে দাঁড়িয়ে সংবিধান মেনে শপথ নিচ্ছেন, তাঁকে ফতোয়া দেওয়ার জন্য যা ব্যবস্থা নেওয়ার, উপযুক্ত জায়গা থেকে নিশ্চয়ই নেওয়া হবে।’

তবে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের দাবি এইভাবে সমাজে ধর্মীয় ভেদাভেদ তৈরি করলে তা মোটেই সম্প্রীতির পরিবেশ তৈরি করবে না। এই ঘটনায় অবশ্য তৃণমূল নেতৃত্ব এখনো পর্যন্ত কোনো প্রতিক্রিয়া দেয়নি। তবে নুসরত জাহানের পাশে বিরোধী দলের নেত্রী দাঁড়ানোয় জনমানসে বিজেপির প্রতি এক অন্য ভাবধারার জন্ম দেবে বলে মনে করা হচ্ছে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!