প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –   তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিলেই তার প্রতি প্রতিহিংসামূলক আচরণ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ ছিল প্রাক্তন তৃণমূল নেতাদের। মুকুল রায় থেকে শুরু করে সৌমিত্র খাঁ-এর মত তৃণমূলের হেভিওয়েট নেতা বিজেপিতে যোগ দেওয়ার সাথে সাথে তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিতে শুরু করে শাসকদলের অভিযোগ করেছিল গেরুয়া শিবির। আর এবার দু’দশক পুরনো খুনের মামলায় কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হল এক বিজেপি নেতাকে।

যেখানে তাকে ফাঁসিতে ঝোলানোর দাবি করতে শুরু করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু হঠাৎ করে এত দিনের পুরনো মামলা কেন প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠল!এখন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন একাংশ। বিজেপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে, আসলে এর পেছনে প্রতিহিংসাপরায়ণ রাজনীতি কাজ করছে। আর তার কারণেই এখন তৃণমূল নেতা বিজেপিতে যোগ দিতেই তার বিরুদ্ধে পুরনো মামলা টেনে আনতে শুরু করেছে শাসকদল।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, 1999 সালের 13 নভেম্বর একটি জলাশয় থেকে মোতিগঞ্জের বাসিন্দা সূর্যশংকর রায় চৌধুরীর দেহ উদ্ধার হয়। আর সেই সময় প্রয়াত সূর্যবাবুর ভাই সিদ্ধার্থশঙ্কর রায় চৌধুরী অভিযোগ করেন, তার দাদাকে খুন করা হয়েছে। আর এরপরই এই ঘটনায় বনগাঁ থানার পুলিশের পক্ষ থেকে 8 জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। যার মধ্যে প্রধান অভিযুক্ত ছিলেন দেবদাস মন্ডল। তবে 2016 সালের পর থেকেই মামলাকে আর আদালতে উঠতে দেখা যায়নি।

কিন্তু এই দেবদাসবাবু একসময় তৃণমূল কংগ্রেসে থাকলেও, এখন তিনি ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগ দিয়েছেন। বর্তমানে তিনি বারাসাতের বিজেপির সহ-সভাপতি। তবে গত বছরের 23 সেপ্টেম্বর এই মামলার শুনানির আবেদন করে এসিজেএম দেবাশিস রায়ের কাছে আবেদন করেন নিহত ব্যক্তির ভাই সৌমেন্দ্র রায়চৌধুরী।

আর তারপরেই কোনো সদুত্তর না পেয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এবং কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি। আর নতুন করে এই মামলা প্রাসঙ্গিক হতে না হতেই এদিন দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে আদালতের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে দেখা গেছে তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী সমর্থকদের।

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রাক্তন তৃণমূল নেতা তথা বর্তমান বিজেপি নেতা দেবদাসবাবু সম্পর্কে নতুন করে অভিযোগ মাথাচাড়া দিতে না দিতেই এবার তৃণমূল কংগ্রেস ময়দানে নেমে পড়ল। অর্থাৎ এই ঘটনার মধ্যে দিয়ে সেই দেবদাসবাবুর কথা তুলে ধরে তারা ভারতীয় জনতা পার্টিকে চাপে রাখার চেষ্টা শুরু করবে বলেই মনে করছেন একাংশ। কেন তাদের এই বিক্ষোভ?

এদিন এই প্রসঙ্গে বনগাঁ পৌরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলের প্রাক্তন কাউন্সিলার দিপালী বিশ্বাস বলেন, “সিপিএমের তৎকালীন এক নেতা এখন বিজেপিতে। আমাদের তৃণমূল যুব কংগ্রেসের এক কর্মীকে ফোনও করেছিলেন। তার শাস্তির দাবিতে আমাদের এই বিক্ষোভ। কিন্তু যাকে নিয়ে এত কিছু, সেই দেবদাসবাবু কি বলছেন? এদিন তিনি বলেন, “মামলাটি বিচারাধীন তবে এই নিয়ে আমি কিছু বলব না। পায়ের তলার মাটি সরে গিয়েছে বলেই তৃণমূল এমন আন্দোলন করছে।” সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।