এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > প্রশান্ত কিশোরের পরামর্শে কার কার ওপর কোপ ফেলতে পারেন নেত্রী? নাম নিয়ে জোর জল্পনা সোশ্যাল মিডিয়ায়

প্রশান্ত কিশোরের পরামর্শে কার কার ওপর কোপ ফেলতে পারেন নেত্রী? নাম নিয়ে জোর জল্পনা সোশ্যাল মিডিয়ায়


লোকসভা নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় 42 এ 42 এর টার্গেট দিলেও তাঁর সেই লক্ষ্য পূর্ণ হয়নি। উল্টে বিজেপি এই রাজ্যে রীতিমত তৃণমূলের পায়ের নিচের মাটি কাঁপিয়ে দিয়ে রাজ্য থেকে ১৮ টি আসন ছিনিয়ে নিয়েছে। আর 2021 এর বিধানসভা নির্বাচনের আগেই 2019 এর লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের এই ভরাডুবিতে রীতিমত উজ্জীবিত হয়ে উঠেছে গেরুয়া শিবির।

ভবিষ্যতে কিভাবে বিধানসভা দখল করা যাবে, তা নিয়ে এখন প্রস্তুতি চালাচ্ছে তারা। তবে যেন-তেন প্রকারেণ বিজেপিকে আটকে নিজেদের দলের ভাবমূর্তিকে প্রতিষ্ঠা করতে এখন উদ্যোগী হয়েছে ঘাসফুল শিবিরও। আর তারই অঙ্গ হিসেবে তৃণমূলের ভোটের রননীতিকার হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন ভোটগুরু হিসেবে পরিচিত প্রশান্ত কিশোর।

আর দায়িত্ব নিয়েই, প্রশান্ত কিশোর উপলব্ধি করেছেন বাংলার শাসকদলের গায়ে লেগেছে একাধিক দাগ, যারই ফলস্বরূপ বাংলার জনগণ নিজেদের ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন লোকসভায়। ফলে, বিধানসভা নির্বাচনে ঘুরে দাঁড়াতে এবং দলের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি ফেরাতে তিনি একাধিক পরামর্শ দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। যার মধ্যে অন্যতম পরামর্শ হল, রাজ্যের শাসকদলের বেশ কয়েকজন হেভিওয়েট নেতা, মন্ত্রীকে নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া।

সূত্রের খবর, গত শুক্রবার তপসিয়ায় তৃণমূল ভবনে এই ব্যাপারে দফায় দফায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রশান্ত কিশোর। আর সেখানেই রাজ্যের শাসকদলের বেশ কয়েকজন হেভিওয়েট নেতাকে ‘কালো’ তালিকাভুক্ত করার কথা জানিয়েছেন তিনি বলে গুঞ্জন ঘাসফুল শিবিরের অন্দরেই। কিন্তু কে কে রয়েছেন সেই তালিকায়? সে নিয়ে কিছু জানা না গেলেও জল্পনা ছড়িয়েছে কয়েকটি নাম নিয়ে। কেননা, এর আগে এই সব দলীয় নেতাদের কার্যকলাপ ও কথাবার্তায় দলকে যথেষ্টই অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে বলে শাসকদলের সমর্থকরাই অভিযোগ জানিয়ে পোস্ট করেছে নসোশাল মিডিয়ায়।

আর তারই রেশ ধরে জল্পনার শীর্ষে রয়েছেন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। বস্তুত, বিভিন্ন সময়েই নানা মন্তব্য করে খবরের শিরোনামে আসতে দেখা গেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই প্রিয় ভাইকে। কিন্তু তাঁর বক্তব্যের মধ্যে প্রচ্ছন্ন হুমকির অভিযোগ তুলে সর্বদাই তাঁর বিরুদ্ধে সরব হতে দেখা গেছে বিরোধীদের। আর তাঁর বক্তব্য সাধারণ মানুষের মনেও খুব একটা ভালো প্রভাব ফেলেনি বলেই মত একাংশের। ফলে এহেন নেতাকে এবার কিছুটা দূরে সরিয়ে দেওয়ার জন্য তৃণমূল নেত্রীকে পরামর্শ দিয়ে থাকতে পারেন প্রশান্ত কিশোর বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিকে অনুব্রত মণ্ডলের পরেই ভাঙ্গড়ের তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলামের নাম সমানভাবে উঠে আসছে ঘাসফুল শিবিরের জল্পনায়। কেননা একসময় শিক্ষিকাকে জগ ছুড়ে মারা থেকে শুরু করে ভাঙ্গড়ের অশান্তিতে তিনিই রয়েছেন বলে অভিযোগ তুলতে দেখা যেত অনেককে। এমনকি, একসময় দল থেকে ৬ বছরের জন্য সাসপেন্ড বা পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে তাঁকে গ্রেপ্তারও করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশ। ফলে দলের দুর্দিনে এইরকম নেতাকে সামনে আনলে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যেতে পারে ভেবেই ভোটগুরু প্রশান্ত কিশোরের তৃণমূল নেত্রীর কাছে এহেন পরামর্শ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ফলে আরাবুল ইসলামকেও এই তালিকায় রাখছেন অনেকেই।

তবে শুধু অনুব্রত মন্ডল বা আরাবুল ইসলামই নন, বিভিন্ন সময় নানা বিতর্কিত মন্তব্য করে খবরের শিরোনামে উঠে আসা রাজ্যের আরও দুই হেভিওয়েট মন্ত্রীও কালো তালিকাভুক্তের জায়গায় রয়েছে বলে তীব্র জল্পনা চলছে। যার মধ্যে কোচবিহার জেলা তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষের নাম নিয়েও জল্পনা চলছে। বিভিন্ন সময়ে তাঁর সাধারণ মানুষের সাথে দুর্ব্যবহার এবং হুমকি ভোট বাক্সে প্রভাব ফেলেছে বলে অভিমত তৃণমূলের অন্দরমহলের। এমনকি লোকসভা নির্বাচনের আগে এক টিভির টক-শোতে গিয়ে বিজেপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে মারমূখী হয়ে ওঠাও ভালো চোখে নেননি কুচবিহারবাসী তা তো নির্বাচনের ফলাফলেই প্রমাণিত।

প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই তাঁকে জেলা সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এবার দলের সামনের সারি থেকেও তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে বলে তীব্র জল্পনার সৃষ্টি হয়েছে। অন্যদিকে রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী তথা উত্তর 24 পরগনা জেলা তৃণমূল সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে নিয়েও মাঝে মাঝেই অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে তৃণমূল সমর্থকদের। ক্ষমতায় আসার পরপরই, বিরোধীদেরকে কেউটে সাপ বলে অভিহিত করা এই জ্যোতিপ্রিয়বাবুর মন্তব্যে রাজ্য জুড়ে সমালোচনার ঝড় বইতে শুরু করেছিল। আর তারপরই তাঁর একাধিক কথা নিয়ে একাধিকবার বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে তাঁকেও কিছুটা পিছনের সারিতে রাখার চিন্তাভাবনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জল্পনা সৃষ্টি হয়েছে।

তবে শুধু এই চার হেভিওয়েট নেতাই নয়, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে যে সমস্ত তৃণমূলের বিতর্কিত নেতা রয়েছেন, তাঁদেরকেও সরিয়ে দেওয়া হতে পারে বলে জল্পনা ছড়িয়েছে। তবে প্রশান্ত কিশোরের দেওয়া তালিকায় আদৌ কি আরাবুল ইসলাম, অনুব্রত মন্ডল, রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বা জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের নাম আছে কিনা, তা কিন্তু জানা যায়নি – সবটাই সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘোরা তৃণমূল সমর্থকদের জল্পনার অঙ্গ। এই ধরনের খবর সামনে আসতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় তীব্র জল্পনা শুরু হয়েছে ঘাসফুল শিবিরের সমর্থকদের মধ্যে, আর তাতে দেখা যাচ্ছে এই চার হেভিওয়েট নেতার নামই আলোচনার শীর্ষে রয়েছে। তবে, প্রশান্ত কিশোর কাদের নাম দিয়েছেন, আর তাঁদের বিরুদ্ধে আদৌ তৃণমূল নেত্রী কোনো ব্যবস্থা নেন কিনা তা জানার জন্য কিছুদিন অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই।

তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ বলছেন, নেতাদের দুর্নীতি এবং তাঁদের আচার-আচরণই এবারের ভোট বাক্সে প্রভাব ফেলেছে, তা এক কথায় মেনে নিচ্ছেন খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই। আর তাই, দলীয় নেতাদের কাটমানি ফেরত দেওয়ার নিদান দিয়েছেন তিনি, যা সত্যিই বড় পদক্ষেপ বলে অভিমত তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের। আর তাই, বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলকে ভালো ফল করতে গেলে স্বচ্ছ এবং সাধারন মানুষের সঙ্গে জনসংযোগ রক্ষা করা নেতাদেরই সামনের সারিতে নিয়ে আসতে হবে – এই ধারণা ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে ঘাসফুল শিবিরের অন্দরে। ফলে, তৃণমূলের ভোট সংরক্ষণ করার দায়িত্ব নিয়েই, ভোটগুরু হিসেবে প্রশান্ত কিশোর কোন কোন নেতাদের ডানা ছাঁটতে হবে সেই ব্যাপারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পরামর্শ দিতে শুরু করলেন বলেই দাবি পর্যবেক্ষকদের। তবে এইরকম সম্ভাবনাই যদি বাস্তব রূপ নেয়, তাহলে এই সমস্ত নেতাদের অবস্থান কি হবে ভবিষ্যতে – সেদিকেও কিন্তু নজর রয়েছে রাজনৈতিক মহলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!